খয়রাতুন্নেছা পিডন মিয়ারে বিবাহ করিবার পর কিছু দিন মিলমহব্বতে কাটিল। মাস তিনেক পরেই পিডন মিয়া তার নামে সুবিচার করতে আরম্ভ করিলো; রাত নাই দিন নাই, খালি পিডন, মানে মাইর। সেই মাইরও যেই সেই মাইর না, উলটা কইরা ঝুলাইয়া পিডা। অবস্থা এমন যে খয়রাতুন্নেছা দুই দিন ঘরে থাকলে ২ সপ্তাহ কাটায় হাসপাতালে। এই অবস্থায় সংসার করা যায় না, কিন্তু পিডন মিয়া বউরে ছাড়তেও চায় না; অনেক হাঙ্গামা কইরা, কাবিনের টাকা না লইয়্যাই শেষে ছাড়াছাড়ি হইলো।
যৌবনা খয়রাতুনের মাইরের কথা মনে হইলেই আর বিয়া করতে মন চায় না, তয় এই দুনিয়ায় বিয়া ছাড়া থাকা যায় না, তার উপর পিছাই মিয়ার সুন্দর আচার আচরন তার ভালোও লাগা শুরু করছে। পিছাই মিয়া ১০ টা কথা বললে, ৪ টা বলে পিডন মিয়ার নিষ্ঠুরতা নিয়া, ফলে খয়রাতুন আরো গইল্যা যাইতে লাগিলো। অবশেষে বিবাহ। যথারীতি মাস খানেক ভালোয় ভালোয় কাটানোর পর পিছাই মিয়াও তার নামের সুবিচার করা শুরু করিলো। সে সপ্তাহে ৪ দিন খয়রাতুনরে পিছা (ঝাড়ু) দিয়া ইচ্ছা মত মারে। এতে অবশ্য হাসপাতালে যাওন লাগে না, তয় বাপের বাড়ি গিয়া দুই দিন না থাকলে শরীল ঠিক অয় না।
খয়রাতুন আবারও হাঙ্গামা শুরু করলো আর সকলে তারে আগের জন, অর্থাৎ পিডন মিয়ার কথা স্বরণ করাইয়া দিতে লাগিলো। খয়রাতুন পিডন মিয়ার কথা চিন্তা কইর বাকী জীবন পিছার মাইর খাইবার সিদ্ধান্ত নিয়া
নিলো।
খয়রাতুন্নেছার মাঝে দেশের জনগনের চেহারা খুজে না পাইলেও, খয়রাতুন্নেছা আর আমাদের ভাগ্য প্রায় একই রকম, হাঙ্গামা করলেই বলে আগের কথা কি ভুইল্যা গ্যাছো?? সাধুদের আর বুঝানো যায় না যে মানুষ হাঙ্গামা করে ভালো থাকার জন্যে, আগের কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্যে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:১৩