আধুনিক জীবনযাপনে অফগ্রিড (নিজের বিদ্যুৎ নিজে উৎপাদন করা) প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। মারকুয়েস ব্রাউনলি কোটি টাকার সেটআপ আর প্রায় ১০/১৫ বছরের ব্রেকইভেন ধরে এই এক্সপেরিমেন্ট করেছে; কিন্তু টেকনিকালি সম্ভব করতে পারেনি।
শীতকালের তিন মাস সোলার আউটপুট থাকে কম। উনি সে সময় গ্রিড থেকেই বিদ্যুৎ চালিয়েছে কারণ গরমের দিনে উদ্বৃত বিদ্যুৎ গ্রিডে বিক্রি করতে পেরেছিলেন। বাংলাদেশের বাসাবাড়ী এখনো বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারে না। তাছাড়া আমাদের গ্রিড সিস্টেমে সেই অবকাঠামোই নাই। মানে শীতে (বাংলাদেশের ক্লাইমেট হিসেব করলে বর্ষাকালও) আপনার চাহিদার থেকে সোলার এ আউটপুট কম হলে গ্রিড ইউজ করার জন্য বিদ্যুৎ বিল দিতেই হবে।
একটা ইম্পর্টেন্ট পার্ট এখানে ইলেকট্রিক গাড়ি। রাতে চার্জ দিয়ে দিনের বেলা ইলেকট্রিক গাড়ি ইউজ করা কমনসেন্স। কারণ চার্জিং স্টেশনে একটা ইলেকট্রিক গাড়ি নিয়ে বসে থাকা মানে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা বসে থাকা। কিন্তু বাড়ীতে ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জ দেয়া মানে হচ্ছে এসির থেকেও ১০ গুন বেশি বিদ্যুৎ খরচ। যদিও এটা সাধারণ বিদ্যুৎ খরচ না ধরে জ্বালানি খরচ এর আওতায় রাখা যায়।
এতগুলো কথা বলার পিছনে কারণ হচ্ছে, নিজের বাসার সোলার লাগানোর এই ড্রিমটা আমারও ছিল। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় বিষয়টা বর্তমান প্রযুক্তি ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পয়েন্টলেস। বাংলাদেশেও; অনেকক্ষেত্রে গ্লোবালভাবেও।
একেবারে মৌলিক যে কারণে মানুষ সোলার রুফ লাগাতে চায় সেটা হচ্ছে বিদ্যুতের উৎস যেন নিশ্চিতভাবে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসে। ধরেন আপনি ইলেকট্রিক গাড়ি কিনলেন কিন্তু চার্জ দিচ্ছেন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎস থেকে। এটা তো চিচিংফাক হয়ে গেল! কিন্তু এটাও সত্য যে নিজে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আধুনিক লাইফস্টাইল মেইনটেইন করা মানে হচ্ছে বিশাল ইনভেস্টমেন্ট আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আদৌ রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট আসবে কিনা সন্দেহ আছে
#LetsTalkAboutSolution
আসলে দরকার জাতীয় গ্রীডে আরো নবায়নযোগ্য শক্তির পাওয়ার প্লেন্ট বসানো, বিশেষ করে নিউক্লিয়ার। তাহলে আর এত কাহিনী করা সর্বসাধারণের প্রয়োজন নাই। দ্বিতীয়ত, গাড়ির ক্ষেত্রে লিথিয়াম আয়ন বা অন্য যেকোন রিচার্জেবল ব্যাটারি মানে হচ্ছে চার্জ দিতে মেলা সময় যাবে। বিপদের বা আর্জেন্ট মুহূর্তে এই সিস্টেম কাজ করে না। এই যুগে এসে এমন ব্যাকওয়ার্ড সিস্টেম এর কোন মানে নাই, বিশেষ করে যখন বিকল্প আছে। এই জায়গায় সমাধান হচ্ছে হাইড্রোজেন ফিউল ভিক্তিক গাড়ি/যানবাহন। যেখান থেকে ১০ মিনিটে ট্যাঙ্কি ভরে আধা মাসও চালানো সম্ভব। আমাদের হাতে সমাধান বসে আছে, কিন্তু নব্য গ্লোবাল লবিস্ট এসে প্র্যাকটিকাল জিনিস থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে আমাদের।
নবায়নযোগ্য, পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎও সম্ভব ভাই, কিন্তু এভাবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১১:৩৮