আপনি যদি জার্মানদের সাথে কথা বলেন, দেখবেন অধিকাংশই হিটলারকে ঘৃণা করে। কিন্তু জার্মানির আনাচে কানাচেতে এখনও নব্য নাৎসিবাদীদের পাওয়া যাবে। আমেরিকার অনেক লিবারেলরাও তাদের ফাউন্ডিং ফাদারদের নিয়ে ওপেনলি ক্রিটিসাইজ করে, কমেডি বানায়। আবার সেখানকার দক্ষিণের অঙ্গরাজ্যগুলোতে এখনো কনফেডারেট পতাকা (যারা আমেরিকার গৃহযুদ্ধে দাসপ্রথার পক্ষে ছিল) দেখা মিলবে। তাও এরা সবাই নিজেদের জায়গা থেকে নিজেদের অপিনিয়ন নিয়ে খোলাখুলি কথা বলে। একসময়ের মেজরিটির অপিনিয়ন কমে গিয়ে মাইনরিটি হয়ে যায়।
আমার মনে আছে ২০০১ সালে ৯/১১ এর পরপর; লাদেনকে এদেশের অনেকেই পজেটিভভাবে দেখত। (আমেরিকা এমন বোমা হামলা ডিসার্ভ করে, সাইদিরও সম্ভবত এমন একটা বক্তব্য ছিল সে সময়)। পরে নিজের দেশে আত্নঘাতি হামলার ট্রেন্ড শুরু হওয়ার পর জনসাধারণের এই থটপ্রসেস ভালই চেঞ্জ হয়।
আজকে দেখলাম সাইদির মারা যাওয়ার ইস্যুকে কেন্দ্র করে আনফ্রেন্ড ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। একজন রাজাকারের মৃত্যুতে পোস্ট দেয়া ও স্যাড ইমোজি দেয়ার লোকের অভাব নাই আশেপাশে। কিন্তু এটার রিএকশন যদি হয় আনফ্রেন্ড তাহলে এটা counterproductive। আপনি নিজে যতদিন Bubble এর মধ্যে থাকবেন বা peer-pressure দিয়ে অন্যদের একটা Bubble এর মধ্যে থাকতে বাধ্য করবেন ততই সমাজটায় আর নিঃশ্বাস নেয়ার জায়গা থাকবে না। আজকে একটা ন্যারেটিভের জন্য এটা সত্য, কালকে অন্য ন্যারেটিভের জন্য সত্য হয়ে উঠবে। History has its own way of repeating itself.
তার চেয়ে ভাল হয় আসেন যাদের সাথে মতের মিল নাই তাদের মেইন মেইন ইস্যুগুলো নিয়ে আলাপ করি। কেন পলিটিকাল সাইদি আর বক্তা সাইদীকে আলাদা করা যাবে না? সাইদির রাজাকার হওয়ার ক্লেইমগুলো ভ্যালিডিটিগুলো কি কি? এগুলো অনেককিছুই আপনার দৃষ্টিতে একেবারে বেসিক। তাই হয়ত বুঝাতে যাওয়াও ডিস্টার্বিং লাগতে পারে।
কিন্তু কারো কারো কাছে ভিন্নমতের বেসিক জিনিসেরই নলেজ নাই। সবাই নিজে ঘেটে দেখে না। অনেকের পারিবারিক শিক্ষার ব্যাপার থাকে, ফ্যামিলি ন্যারেটিভ চ্যালেঞ্জ করে না অনেকে। বিশেষ করে অনেকের ধর্মীয় ইমোশন জড়িত থাকে। এগুলো বিনয়ের সাথে পয়েন্ট টু পয়েন্ট এড্রেস করা লাগে। আবার যারা পড়াশুনা জানে তাদেরও কিছু বলার থাকে বিপরীতে।
বিপক্ষের কথা আসুক, সেটার কাউন্টার আর্গুমেন্ট আসুক। মানুষ জেনে বুঝে যা মানার মানুক। আর অনেকে না মানুক। ব্যাপার না; এটাই রিয়ালিটি।
Political literacy না বাড়িয়ে দমননীতি করলে ন্যায্য ও দুর্গন্ধময় উভয় চিন্তাধারার মানুষই নিজেদের বিপ্লবী মনে করা শুরু করে। এটা সাংঘাতিক ভয়ংকর।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:৪৪