somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার পয়লা পহেলা বৈশাখ দর্শন সাথে লাইভ ধর্ষণ..........!!

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০০৮ সাল। অনার্স ফাস্ট ইয়ারে পড়ি। পহেলা বৈশাখে আড্ডা দেওয়া বা ঘুরতে যাব এমন কোন বন্ধু আমার তখনো ঢাকা শহরে ছিল না। ঢাকা বলতে ক্যাম্পাসে আরকি! কিভাবে দিন পার করব এরকম ভাবতে ভাবতে সিফাতের সাথে ফোনে কথা হয়ে গেল। সিফাত আমাদের অনেক আগেই ঢাকা এসেছে। আমারা যখন পাবলিক ইউনিভার্সিটির এ্যাডমিশন নিয়ে ব্যাস্ত ও তখন সোজা স্ট্যামপফোর্ডে ভর্তি হয়ে গেল। তাই ঢাকা শহরে ও ছিল আমার চেয়ে এক বছরের সিনিয়র। তখন সেনা-তত্ত্বাবধায়কের সময়! পাবলিক ফাংশানে বেশ নজরদারী কড়াকড়ি ছিল। ধানমন্ডি ক্লাব মাঠে বাংলালিংকের কনসার্ট ছিল। সিফাতের প্রস্তাবে সেখানেই গেলাম দুই বন্ধু। সারা মাঠ ভর্তি মানুষ কিন্তু কোন এক অজানা কারনে কনসার্ট শুরু হতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। আয়োজকদের আবদার ছিল গান শোনা যাবে কিন্তু লাফালাফি বা নাঁচা যাবে না। কারণ প্রসাশনের কাছ হতে সেরকম দিকনির্দেশনা দিয়েই পার্মিশান দেওয়া হয়েছে। সন্ধার একটু আগে মিলা এসে গান শুরু করতে না করতেই পোলাপান সেরকম লাফালাফি শুরু করল। আমি আর সিফাত মাঠের পেছনের দিকে বসে বসে বাদাম খাচ্ছিলাম। আমাদের পাসে এক ৩০/৩২ বছরের জুটি (সম্ভবত বিবাহিত) বসেছিল। তৃতীয় গান শুরু করার আগে আয়োজকরা বারবার ঘোষণা দিচ্ছিলেন যেন কেও উঠে না দাড়ায়। তাহলে কনসার্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু গান শুরু হতে না হতেই আবার যেরকম লাফালাফি শুরু হল যে বলার মত না। গানের মাঝখানেই কোন আওয়াজ ছাড়াই মঞ্চের পাওয়ার অফ হয়ে গেল। পাবলিক মঞ্চে পানির বোতল ঢিল ছোড়া আরম্ভ করলে মোটামুটি হইহট্টগল এবং মুহুর্তে সেটি বেশ ভাল সংঘর্ষের রুপ নিল। আমরা দুজন উঠে বের হতে যাব এমন সময় আমাদের পাশের সেই দম্পতির মহিলাকে দেখলাম কেমন জানি অসহায়ের মত এদিক সেদিক তাকিয়ে কারও নাম ধরে ডাকাডাকি করছে। উনার সাথের ভদ্রলোকটি কিছুখক্ষণ আগে বাদাম কিনতে উঠেছিলেন। মানুষের চাপ মুহুর্তেই এত বেড়ে গেল যে কোন দিক দিয়ে বের হব সেটি ঠিক করতে পারছহলাম না। পাশের মহিলার অবস্থা সেরকম খারাপ। এরই মধ্যে দুয়েকজন গায়ে হালকা পাতলা হাত দিয়ে ফেলেছে। সিফাতের মেয়েলি বিষয়ে যারপরনাই রেকর্ড ছিল রাজশাহীতে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হল যে সেদিন সিফাত আমার হাত ধরে মহিলাটিকে অনেকটা ব্যারিকেড দেয়ার মত সেভ করে বলতে লাগত "আপু দ্রুত বের হন, ভাইয়াকে খুজে পাবেন না" কয়েক সেকেন্ডেই মানুষের ধাক্কাই গেট দিয়ে বের হয়ে গেলাম আমরা। সামনে মহিলালে নিরাপদে বের করে দিয়ে। সিফাত বল্ল মামা তাড়াতাড়ি এলাকা ছাড়। না হলে পুলিশ ঠেঙ্গাবে। আমরা দুজন কেমন করে জানি গিয়ে সাত নাম্বার ব্রিজের মাথায় হাজির হলাম। সেখানেও একইরকম ভিড়। পাশেই ভিড়ের মধ্যে এক ২৫/২৬ বছরের সাদা জরজেটের শাড়ি পরা মেয়েকে আমাদের চেয়েও খুব কমবয়সি আট-দশজন ছেলে ভিড়ের ধাক্কার অজুহাতে একদম গায়ে গিয়ে পড়ল। সবার সামনে কয়েকটি হাত মূহুর্তের মেয়েটির বুক সহ নানান যায়াগায়। নারীকন্ঠের জোরালো একটি আর্তনাদের পরে আবার দেখি মেয়েটি হাসছে। অনেকটা বোধহয় লজ্জায়, ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। লোকজনের ভিড়ে একরকম এরকম নানা অপকর্ম দেখতে দেখতে মোটামুটি ভর্তা হয়ে সেদিন বাসায় ফিরলাম। সেটিই আমার ঢাকার লাইফে ফাস্ট & লাস্ট বৈশাখে বের হওয়া। পরের সবগুলো মোটামুটি ঘরে ঘুমিয়েই কাটিয়েছি। কারণ তত দিনে সিফাতের ভালবাসার ঢাকাইয়া এপিসোড আরম্ভ হয়ে গেছে। আমাদের তথাকথিত বাঙ্গালী সংস্কৃতি এখন নিশ্চয় আরো অনেক বেশি পক্ক্ব হয়েছে।আর কবে না জানি আরো বেশি পেকে পঁচে গিয়ে গন্ধ ছড়াবে একদিন......!!
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×