আমার বয়সে যারা আছেন তারা এই বাক্যটির সাথে পরিচিত। বর্তমান তরুণ প্রজন্ম যে আসলেই প্রশ্নফাঁস জেনারেশন তা পোস্টটি পড়লে আরেকটু নিশ্চিত হওয়া যাবে সম্ভবত। স্টুডেন্ট লাইফে 'ব্যাচেরল' নামক একটি টেলিফিল্ম অনেকেই দেখে থাকবেন। সে টেলিফিল্ম টির একটি গান আমার খুবই প্রিয়। আমি এখনো কোন মেয়ের প্রতি ক্রাশ খেলে মনে মনে গেয়ে ওঠি 'আজকে না হয় ভালোবাসো,আর কোনদিন নয়'। হলে গিয়ে হুমায়ুন আহমেদ এর যে কটি টেলিফিল্ম বড় পর্দায় গিয়েছে সব গুলোই আমি দেখেছি। মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর 'চড়ুইভাতি' এবং 'থার্ড পারসন সিংগুলার নাম্বার'এখনো মাঝে মাঝে দেখি। এছাড়াও 'বুঝেনা সে বুঝেনা' নামক ভারতীয় বাংলা মুভিটি দেখি।
সম্প্রতি নতুন প্রজন্মের কাছে একটি নাটক খুবই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। নাটকটি মোটমাট তরুণদের সকলেই দেখেন। এই নাটকটি আমার কাছে একটু স্পেশাল কারণ এটিতে আমার খুবই স্নেহের একজন অভিনয় করে। ওর নাম শারলিন। খুবই ভদ্র শিক্ষিত মার্জিত বিনয়ী সুইট একটা মেয়ে। সুন্দর তো বটেই। এই তরুণ অভিনেত্রী ভিষণ মেধাবী। এই ব্লগে ৩ বছর আগে একবার লিখেছিলাম এমন একটি দিন আসবে নেচারালি বিউটি তুখোড় মেধাবী দেশেত শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী দের একজন হবে। সে হয়েছে। আজ আবার লিখছি - শারলিন আগামী দুই তিন বছর পর ছোট পর্দা কাঁপাবে যদি সে ফারিনের মতো ডেডিকেশান এবং ইথিক্স এর সাথে কম্প্রোমাইজ না করে।
এতো কথা বলার কারণ হলো কোন কিছু যখন ঐতিহ্য হারিয়ে বিতর্কে জড়ায় তখন খারাপ লাগে। 'ব্যাচেলর পয়েন্ট' নাটকে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা মারজুক রাসেলের একটি ডায়লগ আছে। 'যৌন কর্মীর ছেলে' কাউকে সম্বোধন করার ক্ষেত্রে তাঁর একটি ডাইলগ এটি উক্ত নাটকে। দুঃখজনক হলো মারজুক ফেসবুক পোস্টেও এই আপত্তিকর শব্দটা ব্যবহার করছেন কোন সংকোচ ছাড়া।আর এই ডাইলগ তরুণদের মুখে মুখে।একটি আপত্তিকর শব্দ কোন কিছু চিন্তা না করেই ইউজ করবে কেন? দেখুন আমি যখন আমার কোন বন্ধুকে ট্রেন্ডের সাথে গা ভাসিয়ে পতিতার ছেলে বলছি তখন হয়তো বন্ধুর মা কে মন থেকে পতিতা মনে করছি না। কিন্তু গালির ধরণটা গভীরভাবে চিন্তা করলে কতোটা আপত্তিকর! মা তো মা। মায়েদের সাথে এই শব্দ যায়! আমরা হয়তো দুষ্টুমি করে অনেক বন্ধুকে মা-বাবা তুলে গালি দেই।চট্টগ্রামের মানুষ তো কথায় কথায় গালি দেয়। যেমন চট্টগ্রামের ভাষায় একটা কৌতুক আছে।
ভাইঃ আপনাদের চট্টগ্রামের লোক নাকি কথায় কথায় গালি দেয়?
চট্টগ্রামের লোকঃ কোন হা*** পুত বলছে?
এই দুষ্টুমি বা আঞ্চলিকতাদুষ্ট কথা গুলো হয়তো তেমন দাগ কাটে না জনমনে । তবে এতো জনপ্রিয় একটি নাটকে তরুণ প্রজন্মকে যদি 'যৌন কর্মীর ছেলে'' নামক গালির সাথে পরিচিত ও অভ্যস্ত করে তবে তাহা আপত্তিজনক। সামাজিক যোগাযোগ এর মাধ্যমে নাটকটির পরিচালক 'কাজল আরেফিন অমি সহ ব্যাচেলর পয়েন্টে' নাটকের সাথে সংশ্লিষ্টরা ক্ষমা চেয়েছেন এবং 'ব্যাচেলর পয়েন্ট-সিজন ৪ ' থেকে সংলাপ গুলো বাদ ভবিষ্যতে এসব ডায়লগ ব্যবহার করবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো নাটক ও মিডিয়া বিদ্বেষীরা সুযোগ পেয়ে মারজুক এবং ব্যাচেলর পয়েন্ট বয়কট এর ডাক দিয়েছে। এদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার। গালি টালি এগুলো কিছু না ঐ মারজুক ও তার মতো অন্যন্যদের প্রতি বিদ্বেষ।
ছবিতে - আমার অতি প্রিয় দুইজন লিনা, সাইরার সাথে ব্যাচেলর পয়েন্ট নাটকটির প্রধান চরিত্র গুলোর একজন শারলিন।যার কথা পোস্টে উল্লেখিত হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১:১৫