somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মগ্রন্থের ভাষা -১

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



(এই লেখাটা একান্তই আমার ব্যাক্তিগত চিন্তার ফসল। আমি কাউকে আমার লেখার বিষয়ে একমত হবার ব্যাপারে বলছিনা। এইটা আমার একটা হাইপোথিসিস। সুতরাং কারো যদি মনে আঘাত লাগে তবে দ্যা করে ইগনোর করে যাবেন। কারণ গালাগালি করার চেয়ে ইগনোর করা ভাল)

ভাষা যোগাযোগের মাধ্যম এবং ক্রমাগত পরিবর্তনশীল। ভাষার রুপ মুলত দুইটিঃ কথিত এবং লিখিত। যুগ যুগ ধরে ভাষা বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে আজকের অবস্থায় এসেছে, হয়ত আরও পরে আজকের ভাষা আরও পরিবর্তন হবে।এক ভাষা থেকে অন্য আরও বিভিন্ন ভাষা এসেছে, কিছু ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কিছু প্রায় বিলুপ্ত, অনেক ভাষার অর্থ পরিবর্তন হয়েছে। এই ভাষা আমাদের সামাজিক ব্যাবস্থায় একটা অনেক বড় প্রভাব বিস্তার করেছে। এই ভাষার মাধ্যমে বৈষম্য ঘঠিয়ে কিছু শ্রেনীর মানুষ যুগ যুগ ধরে সমাজের বৃহৎ একটা জনগোস্টিকে নিজদের প্রয়োজনে ব্যাবহার করছে।

একটা বিষয় আমি খেয়াল করেছি আর সেটা হচ্ছে পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই তাদের স্ব স্ব ধর্ম গ্রন্থের মুল ভাষা (লিখিত এবং কথিত উভয়ই) সম্পর্কে অজ্ঞ। এই অজ্ঞতার পরিমাণ অতীতে আরও অনেক বেশী ছিল, কারন সেই সময়ে লেখা পড়া জানা মানুষের সংখ্যা অনেক কম ছিল। আর এই অজ্ঞতার সুযোগ নিয়েই যুগ যুগ ধরে কিছু মানুষ সাধারণ বৃহৎ জনগোস্টিকে ব্যাবহার করে আসছে নিজের স্বার্থসিদ্বির জন্য। এই সমস্যা শুধু মাত্র সেমেটিক ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে নয়, প্রায় সবখানেই আছে। উদাহরণস্বরূপ, হিন্দু ধর্মের (যদিও হিন্দু কোন ধর্মের নাম নয়, প্রচলিত হয়ে গেছে) মুল গ্রন্থের ভাষা (লিখিত আবং কথিত) সাংস্কৃতিক। তৎকালীন সময়ে বা বর্তমান সময়ে কতজন এই সাংস্কৃতিক ভাষা জানে বা জানত? বর্তমান সময়ে অল্প কিছু মানুষ ছাড়া যারা মুলত পুরোহিত তারা এই ভাষা জানে। তৎকালীন সময়ে সাংস্কৃতিক ভাষা ছিল মুলত পুরোহিত এবং অভিজাত বংশীয়দের ভাষা। অর্থাৎ যারা সমাজে অভিজাত ছিল (পুরোহিত, রাজা বাদশাহ ইত্যাদি) তাদের ভাষা ছিল সংস্কৃতি। অর্থাৎ, ব্রাহ্মন বা অভিজাত শ্রেণীর ভাষা ছিল সাংস্কৃতিক। এটা এমন নয় যে ব্রাহ্মন বা অভিজাত শ্রেনী সাধারণ মানুষের ভাষা জানত না, তারা সাধারণ মানুষের ভাষা ভাল করেই জানত এবং তারা নিজদের দৈনন্দিন কাজে সাধারণ মানুষের ভাষা ব্যবহার করত। কিন্তু ধর্মীয়, সাহিত্য এবং রাজকীয় কাজে সাংস্কৃতিক ভাষা ব্যাবহার করত। অর্থাৎ, সাংস্কৃতিক ভাষার ব্যাবহার ছিল ধর্মীয়, সাহিত্য, রাজকীয় এইসব কাজে এবং এই ভাষা সাধারণত অভিজাত শ্রেণীর লোকেরাই জানত। সাধারণ জনগণের ভাষা সংস্কৃতি ছিল না। যার ফলে ধর্ম গ্রন্থে কি লেখা আছে তা সাধারণ জনগণের পক্ষে পড়া বা জানা সম্ভব ছিলনা। সুতরাং ধর্ম গ্রন্থে যাই লেখা থাকুক তা কেবল ঐ এলিট ক্লাস মানুষেরা জানত এবং তারা নিজেদের মত ব্যাখা করত নিজেদের সুবিধার জন্য। সাধারণ মানুষ এলিট ক্লাশের ব্যাখ্যাকেই ইশ্বরের বানী বলে মেনে নিত। আর এই এলিট ক্লাস নিজেদেরকে ইশ্বরের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রতিনিধি হিসাবে নিজেদেরকে জাহির করত এবং এভাবেই ভাষা বৈষম্যের মধ্য দিয়ে এলিট ক্লাস ধর্মের বিভিন্ন ব্যাখা দিয়ে সাধারণ মানুষকে নিজের প্রয়োজনে ব্যাবহার করত।

ভাষা বৈষম্যের মাধ্যমে ধর্মকে ব্যাবহার করে সাধারণ মানুষকে নিজের স্বার্থ সিদ্বির জন্য ব্যাবহার করার উদাহরণ প্রায় সব ধর্মেই দেখা যায়। এর একটা কমন প্যটার্ন আছে। আর এই প্যাটার্ন হছে অভিজাত শ্রেনী কিছু নিদৃস্ট কাজের জন্য সবসময় একটা ভিন্ন ভাষা ব্যাবহার করত যা সাধারণ জনগণের বোধগম্য ছিলনা। যদিও আমি কোরআনের ভাষা সম্পর্কে লিখব, তার আগে এই কমন প্যাটার্নের আরও কিছু উদাহরণ দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করছি।প্রসঙ্গক্রমে অনেক কিছু চলে আসতে পারে।

সাধারণত ধর্ম গ্রন্থের ভাষা অভিজাত ভাষায় লেখা হয়। অভিজাত ভাষা বলতে আমি বুঝাতে চেয়েছি অভিজাত শ্রেনীর বিশেষ কাজে ব্যবহৃত ভাষা। একটা কথা প্রসঙ্গক্রমে এইখানে উল্লেখযোগ্য যে, কোন ভাষাই পবিত্র বা অপবিত্র না। প্রত্যেক ভাষারই নিজস্ব কিছু মৌলিক বৈশিস্ট থাকে। সুতরাং এইটা ভাবার কারন নেই, এক ভাষা অন্য ভাষা থেক শ্রেষ্ঠ বা অন্য ভাষা থেকে খারাপ। একই ভাষা এক সময় এলিট শ্রেনী ব্যাবহার করত আবার সেই ভাষাই কালক্রমে সাধারণ মানুষের ভাষা হয়েছে এমন উদাহরণ আছে। ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখব, অতীতে সাধারণত এলিট এবং কমন এই দুই শ্রেনীতে বিভক্ত ছিল এবং এলিট শ্রেনী সাধারণ মানুষের ভাষার পাশাপাশি কিছু নিদৃস্ট প্র্য়োজনে আরেকটি ভাষাও ব্যাবহার করত। এখানে অভিজাত বলতে পুরোহিত, প্রিস্ট, রাবাই, মোল্লা এবং রাজকীয় ব্যাক্তিগন কে বুঝানো হয়েছে।

ইহুদীদের মুল গ্রন্থ ওল্ড টেস্টামেন্টের মুল ভাষা ছিল হিব্রু। তাদের সাধারণ জনগণের মুল ভাষাও ছিল হিব্রু। কিন্তু মজার বিষয় হল আখামেদিয়েন সময়ে তারা তাদের মুল গ্রন্থকে আরামিক ভাষায় অনুবাদ করে। কেন? এর কারন হচ্ছে আরামিক ভাষাকেই তখন ইহুদীরা অফিশিয়াল ভাষা হিসাবে গ্রহণ করে। তাদের রাবাই এবং অফিশিয়ালদের ভাষা তখন আরামিক ছিল, যদিও সাধারণ জনগণের ভাষা ছিল হিব্রু। এই ভাষা বৈষম্যের পরিচয় পাওয়া যায় যখন অস্যিরিয়ানরা খৃস্টপুর্ব ৭২১ সালে ইসারায়েল দখল করে তখন জুডা দুই পক্ষের জন্য দর কষাকষি করার জন্য অস্যিরিয়ানদের সাথে কথা বলে। (তখন দুইটা রাজ্য ছিল ইস্রায়েল এবং জুডা- নর্থ এবং সাউথ কিংডম। অস্যিরিয়ানর আক্রমণে ইস্রায়লে সম্পূর্ণ রুপে বিলুপ্ত হয়, এবং জুডা কোন মতে টিকে থাকে, পরে জুডাও বিলুপ্ত হয়)। অস্যিরিয়ানদের সাথে কথা বলার সময় জুডার অফিশিয়ালরা অস্যিরিয়ানদের আরামিক ভাষায় কথা বলতে বলে যা উভয় পক্ষের অফিশিয়াল ভাষা এবং যাতে সাধারণ জনগণ বুঝতে না পারে তাদের মধ্যে কি কথা বলা হচ্ছে।

এর পর খৃস্ট পুর্ব চতুর্থ শতকে যখন আলেকজান্ডার পৃথিবীর অধিকাংশ জায়গা দখল শুরুকরে, তখন গ্রীক ভাষা বিভিন্ন জায়গায় অফিশিয়াল ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। এর প্রভাব দেখি আমরা ওল্ড টেস্টামেন্টকে গ্রীক ভাষায় আনুবাদ করার মধ্য দিয়ে, যদিও সাধারণ ইহুদীদের ভাষা গ্রীক ছিল না। অর্থাৎ, এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি ইহুদীদের ধর্ম গ্রন্থ সবসময় অভিজাতদের ভাষায় লিখিত হয়েছে যা সাধারণ মানুষের বোধ গম্য ছিলনা। শুধুমাত্র অভিজাতরাই এই ভাষা জানত এবং সাধারণ মানুষ অভিজাতদের কথা অন্ধভাবে বিশ্বাস করত।

নিউ টেস্টামেন্ট যখন লেখা হয় তখন বর্তমান জেরুজালেমের সাধারণ জনগণের ভাষা ছিল আরামিক, কিন্তু নিউ টেস্টামেন্ট লেখা হয় গ্রীক ভাষায়। কেন? একই কারন। অভিজাত এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ভাষা বৈষম্য তৈরি করতেই গ্রীক ভাষায় নিউ টেস্টামেন্ট লেখা হয়। যার ফলে সাধারণ মানুষের জন্য জানা সম্ভব ছিল না আসলে ধর্ম গ্রন্থে কি লেখা আছে। তারা অন্ধভাবে তাদের প্রিস্টদের অনুসরণ করত এবং এই সুযোগটাই তাদের অভিজাত শ্রেণী নিয়েছিল।

এই ভাষা বৈষম্যের তীব্রতা ছিল অনেক বেশী। কারন অভিজাত শ্রেণীর সাধারণ মানুষকে শোষণ এবং নিয়ন্ত্রণে রাখার মুল হাতিয়ার ছিল ধর্মগ্রন্থ এবং এর ভাষা। যদি সাধারণ মানুষের অভিজাত শ্রেনীর ভাষার ব্যাবহার জানত তাহলে এই সাধারণ জনগণকে হয়ত ধর্ম গ্রন্থের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব ছিল না। গ্রীকের পরে, ইউরোপে একসময় ল্যটিন ভাষা অভিজাত ভাষার স্থান দখল করে। এর ফলে আমরা দেখতে পাই, বাইবেল(ওল্ড এবং নিউ টেস্টামেন্ট) ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ করা হয়, যদিও বেশীরভাগ সাধারণ জনগণের ভাষা ল্যাটিন ছিলনা, কিন্তু চার্চের এবং রাজকীয় ভাষা ছিল ল্যাটিন। সুতরাং আমি প্রতিটি ক্ষেত্রে এই ভাষা বৈষম্যের একটা কমন প্যাটার্ন দেখতে পাচ্ছি।

এই ভাষা বৈষম্যের তীব্রতা কেমন ছিল? বাইবেল সংক্রান্ত ক্যাথলিক চার্চের ইতিহাস মোটেই সুখকর ছিলনা। ১৩ শতকের প্রথম দিকে পোপ ইনোসেন্ট-৩ এর নির্দেশে সমস্ত জার্মান ভাষায় অনূদিত বাইবেল পুড়িয়ে ফেলা হয়। যাদের কাছে অন্য ভাষায় রচিত বাইবেল ছিল তাদের অনেক কেই জেলে পুরা হয় বা নির্বাসনে পাঠানো হয়। এমনকি, বাইবেল ইংরেজী ভাষায় অনুবাদের জন্য একজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। (সুত্রঃ রিয়েলিটি অফ জিসাস, - আকব্রালী মেহেরালী, পৃষ্ঠা ৩-৪)

১৪শ থেকে ১৬শ শতাব্দীতে ইউরোপ প্লেগে আক্রান্ত হয় যা ইতিহাসে গ্রেট প্লেগ নামে খ্যাত। এই প্লেগের কারনে ইউরোপের প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রান হারায়, যার মধ্যে ল্যটিন ভাষাভাষী অনেকেই ছিল। ল্যটিন ভাষাভাষীরা প্রায় সবাই কাছাকাছি জিওগ্রাফিকাল এলাকায় বাস করত। সম্ভবত অধিক সংখ্যক ল্যটিন ভাষাভাষীর মৃত্যুতে একটা শুন্যতা তৈরী হয় এবং বাইবেল ইংরেজী সহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা শুরু হয়। এর ফলে সাধারণ জনগণের ধর্মগ্রন্থে আসলে কি লেখা আছে তা সরাসরি পড়ে দেখার সুযোগ সৃস্টি হয়। এর প্রভাব ছিল ব্যাপক। এরই সুত্র ধরেই ক্যথলিক চার্চের মনোপলি কে প্রথমবারের মত চ্যালেঞ্জ করা হয়, এবং প্রোটেস্ট্যন্ট মুভমেন্ট তীব্র রুপ ধারন করে।এই প্রোটেস্ট্যন্ট মুভমেন্ট বাইবেলের ৯টা গ্রন্থকে অস্বীকার করার পাশাপাশি ক্যাথলিক চার্চের বিভিন্ন বিষয়ে অথরিটিকে চ্যালেঞ্জ করে। যার ফলে খৃস্টান দুনিয়া ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্টেন্ট এই দুইভাগে বিভক্ত হয়। এইভাবেই ইহুদী এবং খৃস্টান সাধারণ মানুষের তাদের নিজ ধর্ম গ্রন্থ নিজের ভাষায় পড়ার সুযোগ লাভ করে।

আমি এখানে যে কথা গুলি বললাম, তা যে কেউ কমনসেন্স ব্যাবহার করলেই বুঝতে পারবেন। এই কমন প্যটার্ন এখনও বিদ্যমান। আজকে থেকে ৫০/১০০ বছর আগে আরও বেশিভাবে বিদ্যমান ছিল। লেখা পড়া জানার সাথে এর একটা কমন সম্পর্ক আছে। আগে গুটি কয়েক মানুষ লিখতে এবং পড়তে জানত।নিজের ভাষা ছাড়া অন্য ভাষা জানা মানুষের সংখ্যা ছিল একবারেই কম, যারা জানত তার মুলত ঐ অভিজাত শ্রেণীর অংশ ছিল।তাছাড়া বিভিন্ন পুস্তকের সহজলভ্যটা একটা বড় ফ্যাক্টর। আজকের যুগের মত অতীতে বিভিন্ন বই পুস্তক এত সহজলভ্য ছিলনা। ষষ্ট শতাব্দী বা তার পূর্বে পুস্তকের সহজলভ্যতা আরও অনেক কম ছিল। যে কেউ একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন। বিভিন্ন সময়ে মোল্লা, পুরোহিত, প্রিস্টরা তাদের মনগড়া ব্যাখ্যা কি মানুষের উপর চাপিয়ে দেন নি? তারা এটা পেরেছেন এই ভাষার প্রতিবন্ধকতার জন্য। মানুষ ধিরে ধীরে শিখিত হচ্ছে, ধর্ম গ্রন্থ সাধারণ মানুষের ভাষায় অনূদিত হচ্ছে। এর ফলে মানুষ জানতে পাড়ছে ধর্ম গ্রন্থে আসলে কি লেখা আছে। যার ফলে অনেকে নিজেকে শোধরাতে পারছেন। আবার অনেকেই আগের মতবাদই অন্ধবিশ্বাসের মত আঁকড়ে ধরে আছেন।

কোরআনের ব্যাপারে আমরা কি বলব? কোরআনের ভাষা আরাবিক। আরবেও একই প্যাটার্ন বিদ্যমান ছিল, প্রাথমিক দিকে যদিও আমরা কোরআনের ক্ষেত্রে কিছু ব্যাতিক্রম দেখতে পাই, পরবর্তীতে আবার একই প্যাটার্ন দেখতে পাই। মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রি- কোরানিক সময়ে আরাবিক ভাষা ছিল সাধারণ জনগণের ভাষা, কোন এলিট শ্রেণীর ভাষা নয়। উত্তর আরবে অভিজাত ভাষা ছিল “নাবাতিয়ান আরামিক”, দক্ষিণ আরবে ছিল “সাবায়িক”। এই দুইটা ভাষা লিখার জন্য পৃথক বর্ণমালা বা স্ক্রিপ্ট ছিল। আরাবিক বর্ণমালা বা স্ক্রিপ্ট আরও পরে এসেছে। সেই জন্য প্রাথমিক দিকে আরাবিক ভাষা লিখার জন্য কোন সুনিদৃস্ট বর্ণমালা ব্যবহার করা হত না। উত্তর আরবে হলে আরাবিক ভাষা লেখা হত নাবাতিয়ান আরামিক বর্ণমালায়, দক্ষিণে হলে সাবাইয়িক বা মুসনাদ বর্ণমালা। (ভাষা এবং বর্ণমালা দুইটা দুই জিনিষ। ভাষা হচ্ছে কথিত রুপ, বর্ণমালা বা স্ক্রিপ্ট হচ্ছে লিখিত রুপ। আরাবিক ভাষার ক্ষেত্রে প্রথম দিকে কোন সুনিদৃস্ট বর্ণমালা ব্যাবহার হত না। এই তা অনেক বড় সাবজেক্ট বিধায় এইখানে ডিটেইলস বললাম না)

এই জন্য ফর্মাল ধর্মীয় ,রাজকীয় অথবা উচ্চমর্গের সাহিত্য হয় আরামিক অথবা সাবায়িক ভাষায়/ বর্ণমালায় লেখা হত। এই দুইটা ভাষার পাশাপাশি, আরাবিক সাধারণ জনগণের ভাষা হিসাবে প্রচলিত ছিল। কিন্ত, যেহেতু আরাবিক কোন অভিজাত কাজে ব্যাবহ্রত ভাষা ছিল না, সেহেতু কোন ফর্মাল ধর্মীয় টেক্সট, উচ্চমর্গের সাহিত্য বা রাজকীয় ব্যাপার স্যাপার আরাবিক ভাষায় লিখিত হত না।এই বিষয়গুলি উত্তর আরবে হলে লেখা হত নাবাতিয়ান আরামিক ভাষায়/বর্ণমালায় আর দক্ষিণ আরবে হলে লিখা হত সাবায়িক ভাষায়/ বর্ণমালায়। এই জন্য আমরা প্রি-কোরানিক সময়ে আরাবিক ভাষায় লিখিত কোন ফর্মাল ধর্মীয় টেক্সট বা সাহিত্য রচনার কোন আর্কিওলজিক্যাল ইনস্ক্রিপশনে দেখতে পাইনা।

এটা এমন নয় যে সাধারণ মানুষ আরাবিক ভাষায় লেখত না। আরাবিক ভাষায় লিখিত প্রচুর গ্রাফাইটি পাওয়া যায় যে গুলির মুল বিষয়বস্তু সামাজিক, পারিবারিক, নিজদের লেখা গল্প, কবিতা, সুখ, দুঃখের কথা ইত্যাদি। কিন্তু ফর্মাল ধর্মীয় টেক্সট, বা কোন উচ্চমর্গীয় সাহিত্য রচনার কোন রকম ইনস্ক্রিপশন আরবী ভাষায়/ বর্ণমালায় দেখা যায় না। এর কারন আগেই বলেছি, যে তখনকার সময়ে আরাবিক ভাষা অভিজাত ভাষা হিসাবে গণ্য ছিল না এবং ধর্মীয় টেক্সট অভিজাত ভাষায় লিখা হত (উপরে অনেক গুলি উদাহরণ দিয়েছি) বলে আরাবিক ভাষায় লিখিত কোন ফর্মাল ধর্মীয় টেক্সট, সাহিত্য পাওয়া যায়নি।

কোরআনের ১৬:১০৩ আয়াতে বলা হয়েছেঃ

And We certainly know that they say, "It is only a human being who teaches the Prophet." The tongue of the one they refer to is foreign, and this Qur'an is [in] a clear Arabic language.

(আমি তো ভালভাবেই জানি যে, তারা বলেঃ তাকে জনৈক ব্যক্তি শিক্ষা দেয়। যার দিকে তারা ইঙ্গিত করে, তার ভাষা তো আরবী নয় এবং এ কোরআন পরিষ্কার আরবী ভাষায়।)

সুতরাং এইখানে যুক্তি খন্ডন করতে গিয়ে আল্লাহ ভাষা প্রসঙ্গ তেনে এনে বলছেন যে যার দিকে তারা ইঙ্গিত করে তার ভাষা আরাবিক ভাষা নয়। অর্থাৎ, আরাবিক এর পাশাপাশি আরও ভাষার অস্তিত্ব ছিল এবং প্রচলিত ট্র্যাডিশন অনুযায়ী আরাবিক ভাষা (সাধারণ মানুষের ভাষা) ধর্মীয় ভাষা হিসাবে ব্যাবহার হত না, অর্থাৎ, অন্য কেউ তাকে ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষা দিতে পারেনা, যেহেতু ধর্মীয় শিক্ষার মুল ভাষা হিসাবে আরাবিক তখন প্রচলিত ছিল না। অর্থাৎ, ঐ সময়ে ঐ এলাকায় অভিজাত ভাষা ছিল আরামিক, গ্রীক, সাবায়িক। যার ফলে কেউ যদি নবীকে ধর্ম শিক্ষা দিতে চায়, তাহলে ট্র্যাডিশন অনুযায়ী ঐ ভাষা (ইহুদী হলে হিব্রু অথবা আরামিক, খৃস্টান হলে গ্রীক, প্যাগান হলে নাবাতিয়ান আরামিক অথবা সাবায়িক)অনুযায়ী শিক্ষা দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কোরআনের ভাষা আরাবিক।

এর স্বপক্ষে আমারা উদাহরণ স্বরূপ একটা আর্কিওলজিকাল প্রমান দেখতে পাই। কিছুকাল আগেও মানুষের ধারনা ছিল উত্তর এবং দক্ষিণ আরবে দুই ধরনের লোক বাস করত যাদের ভাষা দুই ধরনের ছিল। কিন্তু নেগেভ মরুভূমিতে আবিস্কৃত একটা ইনস্ক্রিপশন এই ধরনা সম্পূর্ণ রুপে পরিবর্তন করে। ʿEn ʿAvdat ইনস্ক্রিপশন যেখানে নাবাতিয়ান আরামিক ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে কোন এক নাবতিয়ান রাজাকে একটা স্ট্যচু উৎসর্গ করা হয়েছে। ফর্মাল ভাষার পরে দুই লাইনের আরাবিক ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে সাধারণ মানুষ কেন তাকে ভালভাসে। অর্থাৎ যখন বিষয়টা রাজকীয় ব্যাপার থেকে সাধারণ মানুষের ব্যাপারে চলে এসেছে, তখন ভাষাও পরিবর্তন হয়েছে।



1. For (Obodas) works without reward or favour, and he, when death tried to claim us, did not
2. let it claim (us), for when a wound (of ours) festered, he did not let us perish

The ‘En ‘Avdat Inscription:
এইখান থেকে যে উপসংহারে আসা যায় তা হচ্ছে, উত্তর এবং দক্ষিণ আরবে একি মানুষ দুই ধরণের ভাষা ব্যাবহার করত। একটা রাজকীয়, ধর্মীয়, সাহিত্যের ক্ষেত্রে- যেটা অভিজাত ভাষা আরেকটা সাধারণ দৈনন্দিন কাজে ব্যাভৃত ভাষা। এবং আবারো বলছি আরবী ভাষায় প্রি- কোরানিক সময়ে কোন ফর্মাল ধর্মীয় টেক্সট, সাহিত্য, বা রাজকীয় ব্যাপার পাওয়া যায় না, যা পাওয়া যায় তা সবই সাধারণ জনগণের দৈনন্দিন বিষয়ের ব্যাপার।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে, যে আমাদের নবী কি উচ্চবংশীয় বা অভিজাত শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না? সাধারণত ট্র্যাডিশন থেকে আমরা দেখতে পাই আমাদের নবী অভিজাত বংশে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন (কোরাইশ গোত্রের বনী হাশেম বংশ) এবং সামজে খুবই উচ্চ মর্যাদাশীল ছিলেন। একটা কথা এইখানে বলে রাখা উচিত আল্লাহর কাছে কোন মানুষের বংশ মর্যাদা, কোন পরিবারে জন্মেছে সেইটা কোন ব্যাপার না। আল্লাহ্‌ যাকে খুশি নবুয়াত দান করতে পারে। যাকে খুশি তার মর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারেন। কোরআন অনুসারে আমাদের নবী সাধারণ জনগণের অন্তর্ভুক্ত ছিল, কোন অভিজাত শ্রেনীয় ছিল না।

And they said, "Why was this Qur'an not sent down upon a great man from the two cities?" (৪৩:৩১)

সুতরাং আমাদের নবী ছিলেন সাধারণ শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত। নবীর ভাষা ছিল আরাবিক যা সাধারণ জনগণের ভাষা। এইজন্য প্রবল বিরোধিতা সত্বেও কোরানের মেসেজ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল, কারণ সাধারণ জনগণ এই ভাষা সহজেই বুঝতে পারত।আর এইখান থেকেই আমরা “উম্মী” শব্দটার অর্থ বুঝতে পারি (যা উম্মত বা জনগণ হতে এসেছে )এবং এর অর্থ “নিরক্ষর” কিভাবে এসেছে। কোরআনে ৬২:২ অনুসারেঃ

It is He who has sent among the unlettered a Messenger from themselves reciting to them His verses and purifying them and teaching them the Book and wisdom - although they were before in clear error

তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।

আরবের সবাই নিরক্ষর ছিলনা এবং আমাদের নবীও নিরক্ষর ছিল না। সুতরাং এইখানে এই আয়াত দ্বারা বুঝানো হচ্ছে ঃ

তিনিই নিরক্ষরদের/ যারা অভিজাত ভাষা সম্পর্কে অজ্ঞ মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী “উম্মী” বলতে নিরক্ষর/অশিক্ষিত আরবদের বুঝানো হয়েছে। কিন্তু এই ধারণা সঠিক নয় কারণ আহলে কিতাব (যাদের কে কিতাব প্রদান করা হয়েছে) ছাড়াও আরবে শিক্ষিত মানুষ ছিল। “আহলে কিতাব বনাম উম্মী” কোন ধর্মীয় বিভাজন নয়, বরং এইটা সামাজিক বিভাজন। এর উদাহরণ আমারা দেখি ৩:২০ এঃ

যদি তারা তোমার সাথে বিতর্কে অবতীর্ণ হয় তবে বলে দাও, "আমি এবং আমার অনুসরণকারীগণ আল্লাহর প্রতি আত্নসমর্পণ করেছি।" আর আহলে কিতাবদের (অর্থাৎ যারা ধর্মীয় পুস্তকের অভিজাত ভাষা জানত) এবং নিরক্ষরদের (যারা ধর্মীয় পুস্তকের অভিজাত ভাষা জানত না) বলে দাও যে, তোমরাও কি আত্নসমর্পণ করেছ? তখন যদি তারা আত্নসমর্পণ করে, তবে সরল পথ প্রাপ্ত হলো, আর যদি মুখ ঘুরিয়ে নেয়, তাহলে তোমার দায়িত্ব হলো শুধু পৌছে দেয়া। আর আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে সকল বান্দা। (৩:২০)

কোরআনের ২:৭৮ এ বলা হয়েছেঃ
And among them are unlettered ones who do not know the Scripture except in wishful thinking, but they are only assuming.

এই আয়াতের কন্টেক্সটে ইসারায়েলীদের কথা বলা হয়েছে। যদিও সাধারণ অর্থে তারা (ইহুদীএবং খৃষ্টান) আহলে কিতাব এর অন্তর্ভুক্ত, তাঁদের অনেক লোকই ধর্মীয় গ্রন্থের অভিজাত ভাষা জানত না। সুতারং আহলে কিতাব বনাম উম্মী কোন ধর্মীয় বিভাজন নয় বরং এটা একটা সামাজিক বিভাজন। not know the Scripture except in wishful thinking অর্থ not know the Scripture except in recitation। না বুঝে তোতা পাখির মত আবৃতি করে যাওয়া। আজকের যুগে অনেকেই কোরান তোতা পাখির মত আবৃতি করে যেতে পারে, কিন্তু বুঝতে পারে না কি কি আবৃতি করছে। একই জিনিষ এই আয়াতে বলা হয়েছে।

সুতরাং কোরানের ১৬:১০৩ আয়াত অনুযায়ী এবং প্রাপ্ত আরকিওলজিকাল প্রমান থেকে আমরা দেখি ধর্মীয় কাজে একটা বিশেষ ভাষা ব্যাবহার করা হত যা কিছু সংখ্যক লোকে জানত। পরবর্তীতে ইসলামের প্রসারের সাথে সাথে আরবী ভাষা এলিট ভাষা হিসাবে স্থান লাভ করে এবং মোল্লারা স্বউদ্দ্যশ্যে মোল্লাতন্ত্র টিকিয়ে রাখার জন্য এই ভাষা কে কোডিফাই করে। এর পর আমরা উপরে উল্লখিত একই প্যটার্ন দেখতে পাই। এর ফলে কোরআনে উল্লেখিত বিভিন্ন শব্দের অর্থ এবং এর ব্যাবহার নিয়ে কনফিউশন রয়ে গেছে। আজকে আমরা যে ক্লাসিকাল আরাবিক ভাষা দেখি আমার মতে এইটা আসলে মেডিভাল আরাবিক। আমার কাছে কোরানের বেশ কিছু শব্দ এবং এর ব্যাবহার নিয়ে কনফিউশন রয়ে গেছে, যেমনঃ সালাত, যাকাত, হজ্জ, রমজান, সাহর, কাবা, মক্কা, সেজদা ইত্যাদি।

আমি প্রি-কোরানিক জিওগ্রাফি নিয়ে স্টাডি করতে গিয়ে ট্র্যাডিশনাল সোর্সের বাইরে আরেকটা প্যারালাল সোর্স খুজছিলাম যা ট্র্যাডিশনাল সোর্সের চেয়ে পুরানো এবং নিখুত। এইটা করতে গিয়ে আমি প্রি-কোরানিক কবিতা বা জাহেলিয়া কবিতা সম্পর্কে আগ্রহী হই। জাহেলিয়া কবিতার একটা বিশেষ বৈশিস্ট হচ্ছে জাহেলিয়া যুগের কবিরা কোন একটা পাহাড়, লোকেশন, বা তার প্রিয় কোন এলাকাকে নারী রুপ দিয়ে রুপক অর্থে তার সম্পর্কে প্রেমের কবিতা লিখেছে। এতটুকু ভালই ছিল। কিন্তু পরে দেখলাম আরকিওলজিকাল ফ্যাক্ট দ্বারা এটা প্রমানিত যে বেশীরভাগ প্রি-কোরানিক কবিতা আসলে আব্বাসীয় যুগের জালিয়াতি ছাড়া আর কিছু নয়। এর প্রমান “নামারা ইনস্ক্রিপশন”। এইটা বলার পিছনে কারণ হচ্ছে আরব হওয়া সত্বেও ঘাসানিদরা তাঁদের ধর্মীয় এবং পলিটিক্যাল কাজে গ্রীক ভাষা ব্যাবহার করত। অর্থাৎ গ্রীক ছিল তাঁদের অভিজাত ভাষা। আমরা ট্র্যাডিশন থেকে দেখতে পাই যে অনেক বড় বড় আরব কবি কে ঘাসানিদ রাজদরবারে আমন্ত্রন জানানো হয়েছিল তাঁদের কবিতার জন্য। যদি ঘসানিদরা আরাবিক কবিতাকে এতই পছন্দ করত তবে কোন আর্কিওলজিকাল ইনস্ক্রিপশনে কেন কোন আরাবিক ভাষায় কোন কাব্য পাওয়া যায়নি? এর কারণ একটাই, আরাবিক ছিল সাধারণ মানুষের ভাষা এবং আরাবিক কোন ধর্মীয়, উচ্চম্রগীয় সাহিত্যে বা রাজকীয় ব্যাপারে ব্যবহৃত হত না।





সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:২৬
১৯টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×