১.
কারন বশত, একজন বিজ্ঞ সরকারী কর্মকর্তার সাথে দেখা করার বিশেষ প্রয়োজন হল। হুটহাট করে কেউ তাঁর কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারেন না, এজন্য আগে যারা তাঁর সাথে দেখা করেছেন তেমন একজনের সাথে দেখা করে, তাঁর সাথে দেখা করার পদ্ধতিটি কেমন সেটা জেনে নিলাম। তিনি বললেন, সেই কর্মকর্তার সহকারীর সাথে আগে দেখা করে বললেই তিনি সব ব্যাবস্থা করে দিবেন।
কথামত সহকারীর সাথে দেখা করার জন্য অফিসে গেলাম। তখন যোহরের সময়, তিনি নামায পড়তে গিয়েছিলেন। আসার পর তাকে দেখে মনে মনে লোকটার প্রতি একটা ভোক্তি আপনা আপনিই চলে আসলো। মাথায় টুপি, সাদা দাড়ি, পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়েন। আমার প্রয়োজনের কথা তাকে বলতেই তিনি বললেন তাকে দুই হাজার টাকা দিলেই তিনি দেখা করার ব্যাবস্থা করে দিবেন!
২.
ব্যাবিলনের সম্রাট ছিলেন নেবুচাদনেজার। তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী ছিলেন আমেতিস। আমেতিসের জন্য নেবুচাদনেজার মরুর বুকে একটা উদ্যান বানান। সেই উদ্যান সাজানোর জন্য লাল আলোর দরকার ছিল, কিন্তু সেই লাল আলো তৈরী করতে গেলে দরকার একধরের লাল পাথর। কিতু সেটা প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না। সেটা কৃতিম ভাবে তৈরী করতে হবে, এজন্য লাগবে তাজা রক্ত। একধরের বিশেষ পাথর, সেই পাথর রক্তে ঢোবালে সেই পাথরের ভিতরে রক্ত গিয়ে সেটার রঙ পরিবর্তন করে লাল করে দিবে।
নেবুচাদনেজার এত রক্ত কোথায় পাবেন? আবার রক্ত জোগাড় না করলে আমেতিসের কাছে তিনি ছোট হয়ে যাবেন, সেটা তাঁর মৃত্যু থেকেও খারাপ। তিনি পার্শ্ববর্তী বনী ইসলাইলের বার বংশের এক বংশের দেশে আক্রমন করলেন। সবাই কে বন্দী করার পর তিনি বললেন যদি যুবক এবং বৃদ্ধরা তাঁর কথা মত সেচ্ছায় মৃত্যুকে বরন করে তাহলে তিনি মহিলা এবং বাচ্চাদের হত্যা করবেন না।
তাঁর কথায় কেও কর্নপাত না করায় তিনি সবাইকে নির্বিচারে হত্যা করে রক্ত সেই পাথরের গর্তে ফেলেন।
তিনি লাল পাথর তৈরী করতে পেরেছিলেন তবে তাঁর স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন।
এটা কোন ইতিহাস নয়, এই গল্প পেয়েছিলাম প্রিয় লেখক নাজিম উদ দৌলা ভাইয়ের "ব্লাডস্টোন" নামক একটা উপন্যাস থেকে। বইটা পড়ে দেখতে পারেন। খুবই চমৎকার বই।
৩.
মাওলানা জালাল উদ্দিন রূমি ছিলেন একজন সূফী। তাঁর জ্ঞানগর্ভ কথা শোনার জন্য অনেক মানুষ তার দরবারে আসতেন। একদিন পাগলের বেশে একলোক এলেন তাঁর দরবারে। কিন্তু মাওলানারা কথা তাঁর কাছে ঘোড়ার ডাকের মত শোনাচ্ছিল। তিনি আর সহ্য করতে পারলেন না, তিনি উঠে মাওলানার কাছে যে বই গুলো ছিল সেগুলো পাশেই একটা পানির আধাররের মধ্যে ফেলে দিলেন। বইগুলোর কালি পানিতে মিশে গেল। বই গুলো মাওলানার কাছে অনেক মূল্যবান ছিল। কষ্টে তার চোখে পানি এসে গেল। পাগল লোকটা মাওলানার চোখে পানি দেখে বইগুলো আবার পানি থেকে আবার উঠালেন বইগুলো আবার শুকনো হয়ে গেল।
এই লোকটাই মাওলানার জীবনটাকে একেবারে বদলে দিয়েছিলেন। তাঁকে সবাই শামস তিরমীজি বলে ডাকতেন।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:১৪