somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অধূনার বাঙালা রইম্য

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হা হা হা, শুরুতেই খানিকটা হাসিয়া লইলাম। হাসিই তো বাঙালীর জন্য এখন রমণী কবিরাজের হজমী গুলী!!! ওই গুলী উদরে প্রবেশ করাইয়া সকল দুঃখ বেদনা বেমালুম ভুলিয়া গিয়া সদাচিত্তানন্দের ন্যায় মুখে অর্ধচন্দ্র হাসি লটকাইয়া টিকিয়া রহিযাছে এই বাঙালী।এত রইম্য কথন আজকাল শুনিতে পাওয়া যাইতেছে, যে বাঙালার মহান রম্য লেখকেরা যদি আজ ধরাধামে থাকিতেন তবে নিঘঘাৎ তারা রাস্তায় ছড়াইয়া ছিটাইয়া থাকা সরকারী গর্তে ডুবিয়া আত্মহত্যা করিতেন অথবা পাগলের আস্তানায় গিয়া পার্মানেন্ট থাকার একটা ব্যবস্থা করিতেন।

অবশ্য আমার মনে হয় এই যে এত্ত এত্ত রইম্য আর তামশা, তাহা অবশ্যই কোন না কোন ভাবে উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিত তো বটেই।কি সেই উদ্দ্যেশ্য?বাঙালীকে অসুস্থ হইবার হাত থিক্যা বাচানো।এই যে হাসির কারনে আমরা রোগ শোক হইতে বিরামহীন নিস্তার পাইতে আছি তাও আবার বিনা খরচায়, ইহাই তো আমাগো দেশের রইম্য রাজাদের মহা আবিস্কার আর উদ্দ্যেশ্য।একবার ভাইবা দেখেন তো কি মহান আমাগো রাজা আর গজা রা। জাতির জইন্য একেবারে অইন্তপ্রাণ যারে কয়।

এই দেখেন আমাগো অর্থ রাজা কেমন ভেটকী দিয়া কইয়া ফেলাইল ৪০০০ কোটি টাকার কেলেঙকারী লইয়া এত লম্ফ ঝম্ফের কি আছে হে বাপু?!লোকে তাহাকে গালাগাল দিয়া নর্দমার কর্দমে বিসর্জনের ব্যবস্থা করিতে লাগিল। রাজা তো আসলে ভালো ভাবিয়াই আর বাঙালী জাতিকে অতি বুদ্ধিমান মনে করিয়াই এই সকল বক্তব্য ঢালিয়া দিল।আরে মশায়, ব্যাংকের কত টাকা অনাদায়ী পাওনা, পদ্মা সেতুর নির্মানের লইগা জায়গায় জায়গায় হিসাব খোলা, আমাগো দেশের সোনার ভবিষ্যৎ, সোনার ছেলেদের টাকা তুলতে গিয়া বিনা পয়সায় ডাইরেক্ট ওইপারের ভিসা হাতে ধরাইয়া দেওন দেখলেই তো বোঝা যায় যে টাকা তো সব রাজা গজা গো লইগাই। সেই টাকা এত কষ্ট করিয়া তুলিতে দেখিয়া আম জনতার চিৎকার চেচামেচী কার ভাল লাগে!.. তার উপরে গুষ্টি লইয়া টানাটানি।

তারপর দেখেন, আমাগো অন্তরাষ্ট্রীয় মন্ত্রী মহোদয়া।৩২ পাটি দন্ত বাইর কইরা দুম কইরা কইল, বাটীতে যাওনের সময় তালা দিয়া যান, সবাইর ঘর পাহারা দেওয়া রাজার পক্ষে সম্ভব না।তা সে খারাপ টা বলিল কি!!?...না, বাঙালী যত খিস্তি খেউড়ের ডিকশনারী খুলিয়া বসিল, যেন পরীক্ষার খাতায় লিখিতে হইবে। মন্ত্রী মহোদয়া একে তো আমাদের মনে করাইয়া দিলেন যাতে আমরা আবার ভূইলা না যাই; এমনিতেই তো আমরা আবার ভুলা জাতি, তার উপরে তিনি বলিলেন ঘর পাহারার কথা।তারা যদি আমাগো ঘর পাহারা দিতে বইসা পরে,...আমাগো লইগ্যা কবিরাজী গুলী বানাইবো টা কে...?!আমরা অতঃপর মন্ত্রীর চেহারা তুলিয়া ছাড়িলাম।কি অলুক্ষনে জাতি!!

ওদিকে কালো থলের ভুলু বাবু, ডাইনে বামে না তাকাইয়া শীতকালীন ওয়াজ গ্রীষ্মকালে ঝাড়িয়া বসিলেন, দাঁত কেলাইতে কেলাইতে কইয়া ফালাইলেন, পদ্মা সেতুর লইগ্যা বিদেশী টাকা দরকার নাই, আমাগো ১৬ কোটি বাঙালীর ৩২ কোটি হাত আছে।এইখানে বাবু একটুস ভুল করিলেন যে ৩২ কোটি হাত.... আসলে আমাগো দেশের সবাইর তো আর ২ টা কইরা হাত নাই, ২/৪ জনের তো ১/২ টা হাত কাটাও গেছে । তা না হয় ভুল একটু কইলোই, কিন্তু বাকী কথা তো আর ভুলু বাবু খারাপ কিছু বলেন নাই, আমরা যদি হাতে ধরিয়া পদ্মায় সেতু নিম্মান কম্মসূচি শুরু করিতাম তবে শতবর্ষের পূর্বেই নিঘ্ঘাত কিছু একটা হইয়া যাইত। কিন্তু তাই বইলা বিদেশী ওয়ার্ড ধার কইরা আইনা গালি দিতে হইবো?!এসনকি পিতৃদত্ত নামটা পর্যন্ত আস্ত রাখিল না। ইহা কেমন অসভ্যের দেশ আর অশভ্য জাতি।আমাগো কথা শুইনা বেচারা শেষে ভুত বাদুড়ের মত হিটকি দিয়া ঝুইলা রইল।তবু ভাগ্যিস আমাগো অসভ্যতা ভুলু বাবুর মুখে কুলুপ সাটাইয়া দেয়নাই, বড় ধৈর্যশীল মন্ত্রী তো, তাই রক্ষে...।

এদিকে আবার এল জি আর ডি মন্ত্রী নিতম্বে জাতীয় কষাঘাত খাওয়ার জন্য্ই কিনা দড়াম করিয়া চামড়ার মুখ দিয়া বাইর কইরা বইলেন, সড়ক দূর্ঘটনা হইবোই, ইহাকে রোধ করা যাইবে না।ব্যাস আর যায় কই, বাঙালি বইলা কথা; গুষ্টির পিন্ডি চটকাইয়া স্বর্গে দেবতার বেডরুমে রাইখা আসার ব্যাবস্থা করল।আরে বেচারা খারাপ তো আর কিছু কয় নাই, বরং আমি তারে ধইন্যবাদ জানাই, কম দামী শাক দিয়া এ দামী মাছ ঢাইকা না রাইখা বরং আমাগো সইত্য টারে জানাইয়া দিলেন।কিন্তু কি হইল!! বাঙালী কি আর সইত্য বুঝে?! ... কলি যুগ, কলি যুগ।শেষ পর্যন্ত সত্যবাদী যূধিষ্টিরের মুখে চূনকালি দিয়া কি জাতীর কোন উপকার হইল?মাঝখান দিয়া আমরা একটা রসের পোটলা হারাইলাম।

এইবার এক রাজদ্রোহীর কথা না কইলেই না।কি কইলেন তিনি, আমরা স্বাধীনতা আনছি, আমরাই ইহাকে রক্ষা করুম।আহা কি সুন্দর বচন; সাক্ষাৎ মহাভারতের অর্জুন এর মাতৃ জঠরিত ভাই।কিন্তু বিপদ হইল, এই বচন খানা কাহার মুখ হইতে বাহির হইল, তাহার নাম যে মুজাহিদ।বাঙালীর দেশপ্রেম এইবার সাবমেরীনের মত ভূস কইরা জাইগা উঠিল আর ওই মহান নেতার পশ্চাৎদেশে বেঢপ আকৃতির ব্যাম্বু দিয়া, দেশী কয়লা আর বিদেশী চূনার তৈরী রং চেহারায় মাখিয়া ঠেইলা ধাক্কাইয়া রইম্য নাটকের রঙ্গমঞ্চ থাইকা বাইর কইরা দেওয়া হইলো।এইবার বলেন ... আমাগো কি কোন লাভ হইলো?! না, আবার ব্যাপক একখানা ক্ষেতি হইয়া গেল। এইরকম ঢাউস সাইজের আশ্চর্যচর্মাবৃত গর্দভ মার্কা রসের পাতিলকে রঙ্গ লীলা হইতে বাইর কইরা দেওনের মানে হইল, রাধা বিহীন কৃষ্ণ লীলা।

আমাগো মহারাণীর কথা কইয়াই শেষ করতে চাই।
তিনি কি শুধাইলেন, আমার মত দেশপ্রেমিক আর নাই, আমার চউখ বুজিলে যে কি হইবো।এইবার বাঙালী আর কিছু কইতে পারল না।হাজার হোক রাণীরে নিয়া তো আর তামশা করা যায় না।পিপড়ারাও তাগো রাণীগোরে কিছু কয় না; আমরা তো সেইখান থিকাই শিখছি।কিন্তু.বিধি আবার বাম...বাঙালী বইলা কথা , সামনা সামনি কিছু না কইলেও এইবার মুখ লুকাইয়া হাসতে শুরু করল, কি হাসি, আর একটু হইলেই দাঁত কপাটি খুইলা পইরা রাস্তায় গড়াগড়ি খাইত।আমি কিন্তু আবার মহারাণীর কথায় একমত। তাহার দেশপ্রেমের বদান্যতায়ই তো আমরা বাঙালী জাতি তেলাপোকার মত টিকিয়া রহিয়াছি। আর তাছাড়া তিনিই তো জায়হায় জায়গায় আমাগো লইগা রইম্য রসের কারখানা ফিট কইরা দিছেন, একবার ভাবেন তো, এই রসের কারখানা না থাকিলে বাঙালী এত দুঃখ আর শোকের মাতম কিভাবেই বা ভুলিত আর পোটকা মাছের মত মুখ ফুলাইয়া ৫ বছর অন্তর অন্তর লাইন ধইরা মহারাণীর দল পরিবর্তন করিত?!...

আর বেশী লেখা যাইবো না, আমাগো রাণী আবার খেপিয়া উঠিলে তাহার সোনার ছেলেদের লেলাইয়া দেন। আর এই ছেলেরা আবার একটু বেশীই রসিক, মুখ হইতে সব রস গলাইয়া নিম্নদেশ হইতে বাহির করিয়া দেবার সম্ভাবনা প্রবল, তাছাড়া সামু বাবাজী যদি আবার রাগান্বিত হইয়া পড়ে তবে পশ্চাৎ দেশে ২/১ টি লাথি আর একখানা অর্ধচন্দ্র লইয়া রণে ভঙ্গ দিতে হইবো।

সুতরাং আজকের মত ক্ষ্যান্ত।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:০১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×