আমাদের দেশের অনেক লেখক আছেন যারা বইয়ের ব্লার্ব (অথর ফ্ল্যাপ, বুক ফ্ল্যাপ) নিয়ে মোটেও সচেতন নন। লেখক পরিচিতিতে তারা চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করেন। বইয়ের ডেডিকেশন পেজেই ন্যারেট করেন পৃষ্ঠা জুড়ে। এই বিষয়গুলো পাঠকদের বিরক্তিকর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রচ্ছদ, পোস্তানী, পৃষ্ঠা বিন্যাস, ইলাস্ট্রেশন এই বিষয়গুলোতে অনেক লেখক, প্রকাশক মোটেও রুচির স্বাক্ষর রাখেন না। তারা বইয়ের পেছনে বিনিয়োগ করেন ঠিকই, বিনিয়োগ হয়। দিনশেষে বইয়ের প্রডাকশন নান্দনিক হয়ে উঠে না।
অনেক বই দেখেছি বইয়ে অস্বাভাবিক ফন্ট সাইজ ব্যবহার করেন। অনেকে ২/৩ রকমের ফন্ট ব্যবহার করেন। সেলফ পাবলিশড বইগুলোর ক্ষেত্রে এই ঘটনাগুলো বেশি ঘটে থাকে। আবার দেখা গেছে অনেকে লেখক বিরক্ত হন যদি তাদেরকে এই বিষয়গুলো নিয়ে কিছু বলা হয়।
অনেক বই আছে, যেগুলোতে শুদ্ধ বানানের ব্যাপারে একদম খেয়াল করা হয় না। পাণ্ডুলিপি মোটেও সম্পাদনা করা হয় না। হয়তো অনেকেই বলবেন এরকম বই কিনেন কেন, পড়েন কেনো? অনেক সময় প্রয়োজনে, অনেক সময় অপ্রয়োজনে পড়তে হয়।
আজকাল অনেক মানুষই বই লিখেন, কিন্তু খুব কম মানুষই বই পড়েন। বইপড়ার সংস্কৃতি কমে গেছে ডিজিটাল অনেক ডিভাইসের আগ্রাসনের কারণে। এ ছাড়াও অবসর সময় কাটানোর জন্য অনেক প্লাটফর্মও তৈরি হয়েছে। এখন একটা অদ্ভুত সময় পার করছি আমরা। জীবনে কখনো বই না পড়েও সময় ও জীবন পার করে ফেলা যাচ্ছে।
আমার কাছে বই পড়াটা একটা যাদুময় পরিভ্রমণের মতো। খুব ভালো লাগে বই পড়তে। এই পরিভ্রমণে অন্যরকম মাধুর্যতা কাজ করে। জীবনের অবসর দিনগুলোতে অন্তত বই পড়া উচিত। বই পড়ে হয়তো দেউলিয়া হয়ে যেতে পারেন কিন্তু বইয়ের সৌরভ আপনাকে একরাশ মুগ্ধতা দিবে আপনার প্রিয়জনদের মতো। হ্যাপি রিডিং।
(ছবিটি ব্যাংককের একটি লাইব্রেরি থেকে তোলা। এই লাইব্রেরিয়ান কখনো বই পড়েন না। তিনি সেখানে চাকুরি করেন। তার বইপড়ার সময় ও সুযোগ দুটোই আছে। তবে বইপড়ার অভ্যেস নেই।)
হাসান ইকবাল
১৯ অক্টোবর ২০২২
চিলডম, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:০৮