somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মায়ান সভ্যতার অসভ্য মানুষেরা....(পর্ব-০১)

১৩ ই জুলাই, ২০১২ রাত ২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর পৃথিবী ধ্বংস হবে এমন কথা প্রায় সবার কানেই পৌছে গেছে। আর এর সাথে সবারই আরেকটি জিনিসের নাম শোনা হয়ে গেছে, সেটি হলো মায়ান ক্যালেন্ডার। মায়ান ক্যালেন্ডার সম্পর্কে কমবেশী ধারনা সবাই পেয়ে থাকলেও এই ক্যালেন্ডারের আবিষ্কারক জাতি বা মায়া জাতি সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। মায়া সভ্যতার মানুষগুলো কেমন ছিলো? কেমন ছিলো তাদের বসতি বিন্যাস?? কিভাবে তারা আজও আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠল??? চলুন জানার চেষ্টা করি...



মেসোআমেরিকায় গড়ে ওঠা পাচটি সভ্যতার অন্যতম এই মায়া সভ্যতা। বাকি চারটি ছিলো: ওলমেকান, তেউতোহুয়াকান, তোলতেক এবং আজটেক। মায়া সভ্যতার সুনির্দিষ্ট অবস্থান ছিলো সেন্ট্রাল আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকার দক্ষিন অংশে। বর্তমান গুয়তেমালা ও মেক্সিকোতে ১৫০০ খ্রীস্টপূর্বাব্দে এই সভ্যতা গড়ে ওঠে। মূলত তাদের গুরুত্বপূর্ণ বড় শহর ''মায়াপান''- এর নামানুসারে এই সভ্যতার নাম মায়া সভ্যতা রাখা হয়। মায়া সভ্যতার সময়কালকে তিনভাগে ভাগ করতে পারি আমরা। প্রথমভাগে ২০০০ খ্রীস্টপূর্বাব্দ থেকে ২৫০ খ্রীস্টাব্দ সময়কালকে রাখা হয়, দ্বিতীয়ভাগে ২৫০-৯০০ খ্রীস্টাব্দ ও তৃতীয় ভাগে ৯০০-১৫০০ খ্রীস্টাব্দ সময়কালকে ধরে এই বিভাজনের সমাপ্তি করতে পারি। মায়ারা তাদের সর্বোচ্চ অর্জন করেছিল এই সময় বিভাজনের দ্বিতীয় ভাগেই। এই সময়ে তারা তাদের বিস্তৃতি 'ইউকাতান পেনিনসুলা' পর্যন্ত ঘটিয়েছিল। তাদের প্রায় ৪০ টির মতো শহর ছিলো যেগুলোর প্রত্যেকটিতে প্রায় ৫০০০ থেকে ৫০,০০০ মানুষ বসবাস করত।



মায় সভ্যতার সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ অর্জন ছিলো নিচের কয়েকটি বিষয়:

১. সমাজ ব্যবস্থা
২. দুধর্ষ যোদ্ধা
৩. ব্যবসায়ী
৪. জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শিতা
৫. দক্ষ স্থপতি
৬. ওষুধ সম্পর্কে উচ্চ জ্ঞান
৭. খেলাধুলা



মায়ারা প্রথম অবস্থায় গোষ্ঠীবদ্ধ কৃষিনির্ভর ছিল। পরবর্তীতে তাদের কৃষি ব্যবস্থা আরো জটিল আকার ধারন করে ও তারা এর উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়। তারা মাছ ধরা, শিকার, বিভিন্ন বস্তু সামগ্রী যেমন: ঝুড়ি, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি তৈরির কাজেও নিয়েজিত ছিল। এক পর্যায়ে তারা মৃৎপাত্র নির্মান করতে সক্ষম হয়। সমাজ ব্যবস্থা বিকশিত হওয়ার সাথে সাথে এই মৃৎপাত্রগুলোও বিকশিত হয়। এক পর্যায়ে তারা রঙ্গিন মৃৎপাত্র এবং পরে এ থেকে দেয়াল নির্মানও শুরু করে। তারা বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করেছিল। এর মধ্যে মন্দির, পিরামিড, প্রাসাদ, প্লাজা উত্যাদি ছিল।
মায়াদের সমাজ শাসন ব্যবস্থা ছিল চার ধাপে বিভক্ত। সবার উপরে ছিল রাজা যার হাতে সকল ক্সমতা ছিল এবং বিশ্বাস করা হতো যে রাজার সাথে ঈশ্বরের যোগাযোগ আছে। এর পরের ধাপে ছিল পুরোহিত, বণিক এবং আদর্শ যোদ্ধারা। তারাও রাজার সাথে মায়া সমাজের সব ক্ষমতা পোষন করত। এর পরের ধাপে কৃষকরা থাকত যাদেরকে নিয়মিত কর প্রদান করতে হত। সর্বশেষ ধাপে ছিল ভূমিহীস দাস, যারা কৃষকদের জন্য কাজ করত।

মায়াদের কৃষি ব্যবস্থায় আমরা দেখতে পাব তাদেরকে প্রথম অবস্থায় ঘন বন জঙ্গল পরিষ্কার করে ভূমিকে চাষাবাদের উপযোগী করে নিতে হয়েছিল। অর্থাৎ খুব সহজেই তাদেরকে কৃষিকাজের সূচনা করতে দেখা যায় নি। তাদের সংস্কৃতির মূল ভিত্তি কৃষিকাজ হলেও তারা শুধুমাত্র খাদ্য শস্য উৎপাদনই করত না, তাদেরকে তুলা বা কোকো-র মত অর্থকরী ফসলও উৎপাদন করতে দেখা যেত। বনের পশু-পাখি একদিকে যেমন তাদের খাদ্য চাহিদা মেটাতো অর্থাৎ তারা শিকারীও ছিল অপরদিকে তারা গাছপালাকে গৃহনির্মান সামগ্রী হিসেবে কাজে লাগাতে শিখেছিল।

তাদের অর্থনৈতিক অবস্থায় মূলত লবন, অবসিডিয়ান (এক ধরনের খনিজ), পাখির পালক, কোকো বীজ প্রভৃতি দিয়ে অথবা কোনো কোনো সময় সরাসরি বিনিময় প্রথার মাধ্যমে তাদের লেনদেন করে থাকত।

মায়াদের লেনদেন সামগ্রী


পর্ব-০২
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০১২ রাত ২:০১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×