somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঝকঝকে ছবি আর চকচকে ভুটান । (ফাখানি গফর ব্লগ)

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অবশেষে অক্টোবরে ফাইনাল হল ভুটান ভ্রমনের । সময় কম ছুটি নাই ভারতীয় ট্রানজিট ভিসার ঝামেলা এড়াতে হবে । তাই প্লেনে যাব । ভিসা করে যেতে হবে না ভুটানের এয়ারপোর্টে স্পট ভিসা দিবে । ভারত, মালদ্বীপ আর বাংলাদেশিদের জন্য এই জামাই আদর । অবিশ্বাস্য , বাংলাদেশকে এতটা সম্মান হয়তো শুধু আর একমাত্র সিয়েরা লিওন ই দেয় । শুরুর আগেই শেষ এমন একটা “এ জার্নি বাই উড়োজাহাজ” দিয়ে যাত্রা পর্ব শেষ । Druk Air একমাত্র ভুটানি বিমান সংস্থা আমাদের বাহন । টেকঅফ আর ল্যান্ডিং এর ক্ষেত্রে পৃথিবীর সবচেয়ে বিপদজনক এয়ারপোর্টগুলোর মধ্যে ভুটানের পারো এয়ারপোর্ট অন্যতম । দুই বিশাল পাহাড়ের মধ্যদিয়ে প্লেন নিয়ে যেতে হয় এয়ারপোর্টে । হাতেগুনা কয়েকজন প্রশিক্ষিত পাইলটই এখানে কর্মরত আছেন এই কাজটি করতে । যাত্রা শুরু অট্টালিকার জঞ্জালের শহর আর এরই মধ্যে নয়নাবিরাম মহান সংসদ ভবনের সৌন্দর্য দিয়ে ।

ঈগলের চোখে -
হাতির ঝিল -



মহান সংসদ ভবন -





প্রাণের ঢাকা -



ঘণ্টা খানিক পর, প্লেনের জানালা দিয়ে দূরে যে কয়টা চকচকে চুড়া দেখছি এর একটা হিমালয়ের, জানিয়ে দিলেন বিমানের ক্রু ? বেশ! কিন্তু কোনটা ? খেয়াল করিনি ক্রু মামা কোনটাকে হিমালয় আর কোনটাকে কাঞ্চনজঙ্গা বললেন । নেমপ্লেট ঝুলিয়ে দিলে সুবিধা হত (কর্তৃপক্ষ সদয় হবেন)।



জুস, স্যান্ডউইচ আর বাদামের সাথে তুলনামূলক কমসুন্দরি কিন্তু হাসিমুখি আর সুন্দরি কিন্তু গুমরা মুখের বিমানবালাদের পায়চারী উপভোগ করতে করতে ভুটান পৌছে গেলাম । (সুন্দরী সহপাঠী, সুন্দরী সহকর্মী কিংবা সুন্দরী বিমানবালার গুমরা মুখ অতিউৎসাহি আমাদের থেকে নিস্তার পাওয়ার হাতিয়ার । বুঝি, কিন্তু আমার গুমরা মুখ ভাল লাগে না।)

ভুটান, পাহাড়ের বুকে আবাস -



পাহাড়ের মাঝে সুন্দর ছিমছাম গুছানো এয়ারপোর্ট । পাশেই বয়ে চলেছে পাহাড়ি নদী । অপূর্ব ।

এয়ারপোর্ট পাশে রাস্তা আর তার পাশেই বয়ে চলেছে পাহাড়ি নদী -



ভিসার কাজ চলছে , আমাদের রাজীব ভুটান প্রস্থানের তারিখ ভুল দিয়ে বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দিয়েছে । হাসবো নাকি ঝাড়ব ! বোকা ছেলেটা বিব্রত । আগামী দিনগুলোতে সে আরও খেল দেখাবে এত মাত্র শুরু । নারায়ন যোগ দিবে গাইড প্লাস ড্রাইভার হিসেবে । সে আছে এয়ারপোর্টের বাহিরে আমাদের অপেক্ষায় ।
হালকা পাতলা গড়নের আমাদের দেশের পাহাড়ি ছেলেদের মত মায়াবি চেহারার ছোটখাটো অমায়িক ছেলে নারায়ন । পড়নে ভুটানি ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘গো’ । আমাদের নিয়ে রওনা হল ট্রানজিট অফিসে পারো থেকে থিম্পু ও পুনাখা যেতে ট্রানজিট লাগবে । ফর্ম পূরণ করে ট্রানজিট পেতে ঘণ্টা দুয়েক লেগে গেল । এই ফাকে কয়টা ক্লিক -









Iron Chain Bridge
পারো থেকে থিম্পু যাবার পথে নদীর উপর তৈরি এই ব্রিজ । এর নির্মাতা Thangtong Gyalpo যিনি তিব্বত ও ভুটানে এমন আরও প্রায় অর্ধশত Iron Chain Bridge তৈরি করেন সেই ১৪০০ সালের দিকে । যার অনেক গুলো এখনো ব্যাবহার হচ্ছে পুরদমে । তবে এর চাইতেও অলৌকিক ১৯৯১ সালে তৈরি আমাদের মেঘনা সেতু মাত্র দুই-যুগ না যেতেই মেঘনা ব্রিজের করুন হাল । । অপ্রাসঙ্গিক( !!! ) প্রসঙ্গ বাদ দিই ।
নিচে পানির স্রোত সামনে বিশাল পাহাড় আর অনন্য সাধারন লোহার শেকলে তৈরি ব্রিজ উপর দাড়িয়ে শিহরিত হবেন নিশ্চিত ।
Iron Chain Bridge -



পথ চলা শুরু । উদ্দেশ্য থিম্পু , ভুটানের রাজধানী । অক্টোবরে আরামদায়ক এক আবহাওয়া । না গরম না শীত । দুপাশে উচু পাহাড় পাশ দিয়ে বয়ে চলছে নদী । বাকি প্রায় পুরোটা সফর এই নদীর কড়া নজরদারিতেই কাটবে আমাদের । সমতলের দেখা নেই । জনমানব প্রায় শূন্য, পাহাড়, নদী আর পাইন গাছের সবুজের ছড়াছড়ি।







গাড়ি চলছে থিম্পুর পানে । রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলছে । পাহাড়ের কোথাও কোথাও সুন্দর করে বানানো কাঠের বাড়ি । মাঝে মাঝে রাস্তার পাশে ছোট ছোট দোকানে পরসিমন, আপেল, পেয়ারা আর বড় আকারের মরিচের পসরা সাজিয়ে মহিলারা ক্রেতার অপেক্ষায় আছেন । রাজীব পরসিমন কিনল । এতক্ষণ একে টমেটো ভাবছিলাম । রসে ভরপুর মিষ্টি স্বাদের ফল ।

পরসিমন (ভুটানিরা বলে আন্ডে) -


ভুটানি মরিচ -



ঢাকায় ইদানিং দেখা যায় ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি, ভুটানে ১০০ রুপি । ওহ হ্যাঁ, ভুটানি মুদ্রা ভুলট্রম আর ভারতীয় রুপি ওখানে সমান তালে চলে বিনিময় হার ও সমান । কি জানি দেখলাম একটি বাড়ির দেয়ালে আঁকা গাড়ির স্পীড বেশী ছিল তাই ঠিকমত খেয়াল করিনি । আর এদিকে আমার নংরা মন কত কিছু চিন্তা করে ফেলেছে ।

ইনশাআল্লাহ্, আগামী পোস্টে থিম্পুর গফ।

**** ফাখানি = ঘুরাঘুরি , গফ = গল্প । (সিলেটি ভাষায়)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:০৫
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×