মানুষের জীবনটা কত বিচিত্র। গতকাল যারে দেখলাম হাসতেছে, আজকে সে নিজেরে সব থেকে দুঃখী ভাবতেছে।
কেন এমন হয়।কি এমন ক্ষতি হত আজকেও তার মুখে হাসিটা থাকলে।
আমি সাকিব ।একটা পাবলিক ভার্সিটিতে পড়তেছি।
যার কথা বলতেছিলাম সে হল আমার খুব কাছের বন্ধু। শুধু বন্ধু বললে ভূল হবে।বন্ধুর থেকেও বেশি।
ওর নাম হিমেল।ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পরেই হিমেলের সাথে পরিচয়। তারপর বন্ধুত্ব।
বন্ধুত্বটা এতোটাই গাঢ় বলে বুঝানো যাবে না।এই ছেলেটা সব রকম পরিস্থিতিতে আমাকে যতভাবে পসিবল সাহায্য করে গেছে।ওর সামনে কখনো মন খারাপ করে যেতে পারতাম না।কেমনে জানি বুঝে যেত মন খারাপ।সবার আরালে নিয়ে জিজ্ঞাস করত কি হইছে তোর সত্যি করে বল আমার কাছে লুকাবি না আর ভাব ধরার চেষ্টা করবি না।তখন আর চুপ করে থাকতে পারতাম না।আমার প্রতিটা কাজে হিমেল সাপোর্ট দিয়ে যায়।সবাই যেখানে বিশ্বাস করে আমার দ্বারা কিছু হবে না হিমেল সেখানে ব্যতিক্রম ।হিমেল বিশ্বাস করে আমার দ্বারা অনেক কিছুই করা পসিবল। কি জানি হয়তো হিমেলের বিশ্বাস ঠিক হয়তো না।সেটা সময় বলে দিবে।
ও হে হিমেলের সাথে পরিচিতির প্রথম দিনটার কথা মনে পরলে এখনো হাসি পায়।
আমার ভার্সিটিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই মার্ক বাবুর ফেসবুকে খোঁজতেছিলাম আমার ভার্সিটির বড় ভাইদের।ঠিক তখনি হিমেলকে পাই।
হিমেলকে ফেসবুকে যুক্ত করেই ওরে বলছিলাম ভাইয়া আমি আপনার ডিপার্টমেন্টে ভর্তির সুযোগ পাইছি।আমাকে আপনার সাহায্য করা লাগবে।হিমেলের সাথে কথা বলার আগে একটু ভয়ে ছিলাম।কারন শুনেছিলাম বড় ভাইদের সাথে উল্টাপাল্টা কিছু বললে নাকি র্যাগ দেয়।তাই যতটা পসিবল সাবধানতার সাথে কথা বলতেছিলাম।
তো হিমেলের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে সে আমাকে জানায় যে সে আমার সাথেই ক্লাশ করবে আর ওরে ভাই ডাকতে নাহ করল।
তাও ওর সাথে সামনা সামনি দেখা না করা পর্যন্ত ভাই ডেকে গেলাম।
আর দেখা হবার পর থেকে এখন পর্যন্ত কি অবস্থা সেটা বুঝতেই পারতেছেন।
এতো গেল হিমেলের সাথে আমার পরিচিতি। এবার হিমেল সম্পর্কে আমি কিছু বলি।
আসলে সত্যি বলতে ওর বেপারে বলে শেষ করা যাবে না।একটা মানুষের প্রকৃত মহত্ত্ব কোথায় জানেন, তার উদার মনের মহানুভবতার মাঝে।আর এটার সবটুকুই আছে হিমেলের মাঝে।হিমেল আনন্দে থাকলেও সারাদিন হাসবে কষ্টে থাকলেউ সারাদিন হাসবে।নিজের ভিতরকার যন্ত্রণা কাউকে বুঝতে দেয় না।আজব এক মানুষ সে।একটা ঘটনা বলি। খুব বেশি দিন আগের না।এইতো এবার আমাদের ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষার পরের কথা।ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল দেওয়ার দুদিন পরের কথা।হঠাৎ ফেসবুকে ভার্সিটির একটা গ্রুপে একটা ছেলে জানতে চায় আমাদের এখানে তো ভর্তি ফি অনেক বেশি সেটা কমানো যাবে কিনা।হিমেল এটা দেখা মাত্রই ছেলেটাকে ওর সাথে যোগাযোগ করতে বলে। তারপর ছেলেটার বাবার সাথে কথা বলে সব কিছু বুঝতে পারে।আমাকে বলে সাকিব জীবনে একটা ভাল কাজ করার সুযোগ পাইছি এটা আমি যে করেই হোক করব।তারপর ছেলেটার জন্য যা যা করা দরকার সব করছে সে। তার ভর্তির টাকা, মেছ ঠিক করে দেওয়া সব।অথচ আমাদের তখন ফাইনাল পরীক্ষা চলতেছিল।
একটা মানুষের মন কতটা উদার হলে এই কাজটা করতে পারে।একটা অজানা অচেনা ছেলের জন্য ওর পাগলামি গুলো দেখলেই বুঝতে পারতেন আসলে কতটা বড় মনের মানুষ হিমেল।আমি কখনোই ওর সামনে ওর প্রশংসা করি নাই।এমনকি কিছু বলিও না।কেন জানেন প্রতিটা মানুষের জীবনে একটা খারাপ সময় আসে।ঠিক ওই সময়টায় হিমেলের পাশে দাড়াবো বলে।আমি ওর সুসময়ের বন্ধু না দুঃসময়ের বন্ধু হতে চাই।
আজকে ওরে নিয়া লিখতে বসছি একটা কারনেই আজ ওর দুঃসময় চলতেছে।জানি এটা থেকে বের হইতে অনেক সময় লাগবে যত সময় লাগুক আমাকে সবসময় ওর পাশে ছায়া হিসেবে পাবে।আর হিমেল তোকে বলতে চাই এটাই সুযোগ নিজেকে প্রমান করার।নিজেকে অনেক উপরে নিয়ে যাওয়ার। আমি জানি তুই তা পারবি সে ক্ষমতা তোর আছে।আমি সব থেকে বেশি খুশি হব কখন জানিস যখন দেখবো তুই অনেক বড় কিছু হয়েছিস।আমার দোয়া আর সাপোর্ট সবসময় থাকবে তোর সাথে।
আশা করি বন্ধু তুই খুব তাড়াতাড়ি এই দুঃসময় টা থেকে বের হয়ে যেতে পারবি।
একটা কথা কি জানিস তোর মত একটা বন্ধু থাকলে কারো জীবনে আর কিছু লাগবে না।