somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাঁদের হাসি (ছোট গল্প) [রোমান্টিক]

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গল্পটা অনেক আগের লেখা। প্রথম আমার ফেবু আইডিতে দিছি।
.
গল্পের নাম: চাঁদের হাসি
-------------------<লেখা: হাসান তারেক
.
মোবাইলটা হাতে নিয়ে দু আঙ্গুল ধরে ঘুরাচ্ছে পৃথা। হঠাৎ মোবাইল কম্পিত হতেই আনন্দে ছল ছল করে উঠা চোখ দুটো মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে ঘুরে গেল। আবার মুহুর্তেই মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। সীম অপারেটরের মেসেজ এসে পৃথার আনন্দটা রাগে ভেজা বিরক্ততে পরিনত করে দিল।সেই সন্ধ্যে থেকে একটি মেসেজের অপেক্ষায় আছে পৃথা। অনিচ্ছা স্বত্বেও মোবাইলের কনটাক্ট লিস্টথেকে সোহেল নামটি বের করে কল দিল। আবার কেটে দিল।
.
না, সোহেল না দিলে সে কেনো দিবে? দোষটা তো সোহেলেরই। রাগের একটা লিমিট থাকা দরকার। পৃথাতো সোহেলকে অনেক ভালবাসে তবুও কেন তাকে সন্দেহ করে?বিছনা থেকে উঠে জানালায় দাড়াল পৃথা। দেয়ালের ওপাশে নারিকেল গাছের পাতা হালকা বাতাসে উড়ছে। তার উপরে অর্ধ হাসির একটি চাঁদ অপলক চেয়ে আছে।হঠাৎ মনে পড়ল তার, একটি বিমর্ষ ছেলে হাটছে তার পিছে। পরনে একটি কালো প্যান্ট আর কালো শার্ট। চোখ জোড়া লজ্জ্বার জোয়ার, চুল সাধারনতার রক্তিম আভা। হাটছে ছেলেটা, আর একটু পর পর নিছে থেকে উপরে মাথা তুলছে। পৃথা যখনই কলেজে যায়। প্রত্যেক দিনই ছেলেটা পিছু নেয়। কোনো কথা বলে না। চুপচাপ হাটতে থাকে, অনেক দুরত্ব রেখেই হাটে ছেলেটা। পৃথা বুঝতে পারে যে ছেলেটা তাকে পিছু নিয়েছে। একটা সময় খুব বিরক্ত লাগত। কিন্তু দিনের পর দিন একই ঘঠনা ঘঠতে থাকে, ফলে এক সময় পৃথা অভ্যস্ত হয়ে গেল। প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পর একদিন হঠাৎ ছেলেটি এল না। বুকটা কেমন ধুক করে উঠল। তবু অনূভতিটা মুহুর্তে শূন্যে হারিয়ে গেল।ক্লাশ আর বন্ধুদের সাথে আড্ডার মাঝে ভুলেই গেল সেই অনূভতিটা।ভর দুপুরে পৃথার ক্লাশ শেষ হয়। ততক্ষনে সূর্য প্রায় মাথার উপর উঠে খাড়া খাড়ি ভাবে কিরন দেয়। রাস্তাঘাঠ খিদের অস্তীরত্বায় ভুগে। দিনের শ্রমের ক্ষান্ত দিয়ে বিশ্রামে যাওয়ার জন্য তৈরী হয়।
.
পরের দিন পৃথা কলেজে যাওয়ার রাস্তা ছেলেটি কোথা থেকে চলে এল। ছেলেটি কি আদৌ দাড়িয়ে থাকে? নাকি আগে থেকে এখানেই উপস্থিত থাকে? পৃথার জানা নেই। সবসময়ই দেখে এক জায়গায় দাড়িয়ে। পৃথাকে অবাক করে দিয়ে ছেলেটি তার সামনে দাড়াল।
.
পৃথার বুঝতে বাকি রইল না। কারন মেয়েরা একটু বেশীই পরিপক্ক হয়। ছেলেটি বলতে লাগল।ছেলেটির কথায় কোনো ভ্রুক্ষেপ না করেই পৃথা তাকাল ছেলেটির দিকে। ঝুম ঝুম বৃষ্টি হয়ে হঠাৎ থেমে যাওয়া একটি চোখ। নিষ্পলক চাহনি আর ডান দিক কাথ করা চুলগুলো, ভ্রু জোড়া একটি অন্যটির সাথে লাগোয়া। এই টাইপ মানুষগুলো নাকি ভাগ্যবান হয়। একটি নরম কন্ঠ আর কন্ঠনালী অবিরাম নড়াছড়া গলা ঝুড়ে।পৃথা এক কথায় না বলে দিল। তার পক্ষে সম্ভব না এটা। বলেই হাটা শুরু করল। যেতে যেতে পৃথা একবারও তাকাল না ছেলেটির দিকে।
.
ছেলেটিকে দেখে অপছন্দ করার মত না। তবুও পৃথা চায়না সে পৃথাকে ফলো করা বন্ধ করুক। ছেলেটি আবার দাড়িয়ে থাকুক তার জন্য। লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে একটু একটু তাকাক তার দিকে। অবিরাম ছুটে যাওয়া মনটা তার জায়গায় স্হীর থাকুক।হ্যা, ছেলেটা ঠিকই দাড়িয়ে আছে আগের মতই। পৃথার আর ইচ্ছা হল না ছেলেটিকে কষ্ট দেয়ার।
.
একদিন বৃষ্টি ভেজা বিকেলে রৌদ্র স্নানে গেল তারা দুজন। বিকেলের সোনালী আলোয় নীল শার্টটি ছেলেটিকে অন্য এক দৃশ্যে পরিনত করে দিল। সন্ধ্যে পর্যন্ত পকৃতিতে ভালবাসার আভা ছড়িয়ে দিয়ে দুজনেই ফিরে এল।।
.
তখনকার দিনগুলো কতই মধুর ছিল। আর এখন সামান্য রাগেই সোহেল কল দেয়া বন্ধ করে দেয়।পৃথার চোখ জোড়ায় নোনা অস্তীত্ব বিরাজমান। হঠাৎ জানালা বেয়ে একটি কাগজ মুটোবন্দী হওয়া থেকে মুক্ত পাওয়া কাগজটা উড়ে এল তার গায়ে। কাগজটা কুড়িয়ে নিয়ে দেখল, নিছে তাকাও।পৃথা নীছে তাকাতেই দেখে সোহেল, কানধরে আছে। আর ঠোঁট নেড়ে ভিড় ভিড় করছে সরি সরি বলে। ভয়ে তার গলা বড় করছে না। তবুও হালকা বাতাসে উড়ে
"সরি, ক্ষমা করা যাবে কি? আর এমন হবে না"
।পৃথা একটি মুচকে হাসি দিল।আরো জুড়ে বাতাস বইল, নারিকেল গাছের পাতা নড়ে উঠল। গাছের উপরে থাকা চাঁদটিও তার হাসিটা চেপে রাখত পারল না। চাঁদটার মুচকি হাসি পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি করে দিল।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×