১। ফোনে কথা আস্তে বলুন, এখানে বাইরে হৈচৈ, গাড়ির হর্ন বা মিছিল নেই। সো আস্তে বললেও অপর পক্ষ বুঝতে পারবে। চিতকার করে লোক হাসানোর দরকার নাই।
২। বাজারে গিয়ে যেকোন জিনিষের দামকে হুট করে ১০ দিয়ে গুন করে বাংলা টাকায় ফেলবেন না, এতে পকেট এবং মানসিক স্বাস্থ্য দুটোই জর্জরিত হবে। খাইবেন সুইডেনে, হিসাব বাংলাদেশে - ক্যামনে কী!
৩। রুমমেটদের সাথে বসে রুটিন করে নিন। ক্লিনিং,রান্না ইত্যাদি নিয়ে প্রতিদিন ঝগড়া করার দরকার কি!
৪। বাংলাটাইম ভুলে যান। ক্লাসে, দাওয়াতে যেখানেই যান জাস্ট টাইম। সুইডিসরা ৭ টার দাওয়াতে ৫ মিনিট আগে এসে দরজার বাইরে ওয়েট করে। ঠিক ৭ টায় কলিংবেলে চাপ দেয়।
৫। নিজের দেশ কত খারাপ- সেটা কথায় কথায় সবাইকে বুঝিয়ে দেয়ার দরকার নেই। আমরা এদেশে আমাদের রিপ্রেজেন্টেটিভ। ভুলে গেলে চলবে না।
৬। ধর্ম,বিশ্বাস ইত্যাদি নিয়ে আলোচনায় বেশি রূঢতা দেখাবেন না। এখানে সবাই সবাইকে রিস্পেক্ট করে। তাই অন্যের বিশ্বাসের সাথে একমত না হলে ঝগড়ায় যাবেন না।
৭। বন্ধুত্বের ব্যাপারটা বেশ ভিন্ন ইউরোপিয়ানদের মধ্যে। একসাথে দুবছর পড়ালেখা করলেই কিংবা একরুমে থাকলেই ওরা বন্ধু হয়ে যায় না। আমাদের দেশিয় কালচারে আমরা যেমন সহজেই মিশে যাই, পারসোনাল ব্যাপারগুলাতে ইন্টারফেয়ার করি, ওটা এখানে চলবে না। তাই মেলামেশা কথাবার্তায় সাবধান থাকা ভালো। রিলেশনের মাত্রা অনুযায়ী ব্যাবহারে ওরা খুবই সেনসিটিভ।
৮। এসে মাত্রই পেপার পেপার করে আকুল হবেন না। নিজের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করা ভালো, আবার বেশি চিন্তাও সমস্যা। ঠান্ডা মাথায় আগানো উচিত।
৯। এখানে সবাই সবজান্তা না, বাংগালী দেখলেই বুদ্ধি চাইবেন না। কিছু লোক আছে খালি বুদ্ধি দিবে, এটা করো ঐটা করো। জাম্প করো, ফাল পাড়ো। যারা এসব বুদ্ধি দেয় তাদের দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখেন, এত লম্পজম্প দিয়েও তাদের এখন কি অবস্থা।
১০। পড়ালেখা করে কিছু করার ট্রাই করা ভালো - ইটালি, পর্তুগাল, ফ্রান্স দৌড় দেয়ার আগে। সিস্টেম থেকে একবার আউট হলে কিন্তু সিস্টেমে ঢোকা মুশকিল।
উপরের বিষয়গুলোর কোনটি আমি নিজে করে অন্যকে বিরক্ত করেছি কিংবা অন্যে করাতে নিজে বিরক্ত হয়েছি কিংবা অন্যের কারনে অনেককে বিরক্ত হতে দেখেছি। তাই পরামর্শ হিসেবে তুলে ধরলাম। পরামর্শ মেনে চলা ফরজ না, এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দেয়া যায়। ইট্স আপ টু ইউ; ইউ আর ইন এ ফ্রি কান্ট্রি নাউ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:১৭