somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রচলিত ঈদে মীলাদুন্নবী স. এর শরয়ী হুকুম।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরচলিত ঈদে মীলাদুন্নবী স. এর শরয়ী হুকুম।
بسْم الله الرّحْمن الرّحيْم

حامدا و مصليا ومسلما
এ কথা সর্বজন বিদিত যে, সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ স. এর প্রতি গভীর ভালবাসা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর পবিত্র জীবনাদর্শ ও কর্মকান্ডের আলোচনার সাথে সাথে তাঁর অনুসরণ আল্লাহ তায়ালার রহমত প্রাপ্তির অন্যতম উপায় এবং গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে। তবে তা আমাদেরকে অবশ্যই সে পদ্ধতিতে করতে হবে, যে পদ্ধতি স্বয়ং নবী করীম স. তার সাহাবাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। যা বিভিন্ন হাদিস ও সীরাতের কিতাব সমূহে বর্ণিত রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, হাদিস শাস্ত্র এমন একটি প্রমাণ সম্ভার যাতে ধর্মীয় সকল বিষয় সহ মানব জীবনের ছোট বড় সকল কাজ করার শিক্ষা রয়েছে। এমনকি পেশাব-পায়খানা করার পদ্ধতি ও দিক নির্দেশনাও রয়েছে। বলাবাহুল্য যে, রাসূল স. এর জীবন চরিত নিয়ে আলোচনা করা এবং তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করার মত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদতের পদ্ধতিও হাদিস, আসার তথা সাহাবাগণের উক্তি ও কর্ম পদ্ধতি দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। আর হাদিস শরিফে এর প্রমাণ এভাবে পাওয়া যায় যে, দিন তারিখ ও সময় নির্ধারণ না করে এবং আনুষ্ঠিকতার বাধ্যবাধকতা ব্যতিরেকে কখনো কখনো রাসূল স. এর জীবনী আলোচনা করা এবং সর্বদা তাঁর ওপর দরুদ পাঠ করা। সুতরাং এ সম্পর্কে মনগড়া ভিত্তিহীন কোনো পদ্ধতি আবিস্কার করা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য ও অবশ্য বর্জনীয় বিষয়। রাসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেছেন, দ্বীনের যে কোনো বিষয়ে নতুন কিছু আবিস্কার করলে তা প্রত্যাখ্যান করা হবে। (বুখারী শরীফ-2/959)
তাই রাসূল স. এর জন্ম বৃত্তান্ত আলোচনা করা সাওয়াব ও বরকতের কাজ হলেও শরিয়ত সম্পর্কে অজ্ঞ লোকেরা ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ নামে ‍নির্দিষ্ট দিনে, বিশেষ পদ্ধতিতে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে, তা কোরআন-হাদিস এবং সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে তাবেঈনগণ থেকে প্রমাণিত না হওয়ায় তা অবশ্য পরিত্যাজ্য। কেননা, সাহাবা, তাবেঈনগণই ছিলেন প্রকৃত নবী প্রেমীক ও তাঁর আদর্শের যথাযথ অনুসারী ।
রবিউল আউয়াল মাসে পালিত প্রচলিত ঈদে মীলাদুন্নবী স. 604 হিজরীতে ইরাকের মুসিল শহরের বাদশাহ আবু সাঈদ মুজাফফার উদ্দীন কুকুরী ও তার এক দরবারী আলেম আবু খাত্তাব উমর ইবনে দিহইয়া এ দুজন মিলে আবিস্কার করে। এরা উভয়ে দ্বীনের ব্যাপারে খুবই উদাসীন এবং ফাসিক ছিলো। পরবর্তীতে অজ্ঞ ও মূর্খ লোকদের দ্বারা আরো অনেক শরিয়ত বিরোধী কর্মকান্ড এতে অনুপ্রবেশ করে। যার সব কিছুই কোরআন-হাদিস, ইজমা-কিয়াস তথা শরিয়তের মৌলিক সকল দলীলেরই পরিপন্থী। এসকল কারণেই সব যুগের হক্কানী আলেমগণ এক বাক্যে প্রচলিত ঈদে মিলাদুন্নবী ও মিলাদ মাহফিলকে নাজায়েয ও বিদআত বলেই ফত্ওয়া দিয়ে থাকেন।
তাই প্রচলিত ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কে উক্ত ইমাম সাহেবের বক্তব্য ভ্রান্তিপূর্ণ। বিশেষ করে ঈদে মীলাদুন্নবীর অস্বীকারকারীদের কাফের বলা চরম ধৃষ্টতা ও কুরুচিপূর্ণ। এজন্য তার তাওবা করা আবশ্যক।
كما أخرج الإمام البخاري فى صحيحه : (2/ 959)
عن عائشة رضي الله عنها قالت : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ( من أحدث في أمرنا هذا ما ليس فيه فهو رد).
وفى عمدة القاري شرح صحيح البخاري : (8/ 396)
والبدعة لغة كل شيء عمل علي غير مثال سابق وشرعا إحداث ما لم يكن له أصل في عهد رسول الله.
وفى مرعاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح : (1/ 395)
البدعة، وهي لغة: مأخوذة من الابتداع، وهو الاختراع على غير مثال سابق، وشرعاً: المحدث في الدين، أي ما لم يكن عليه أمره – صلى الله عليه وسلم – ولا أصحابه، أي ليس عليه أثارة من كتاب الله ولا من سنة رسوله، ولا فعله أو أمر به أصحاب رسوله، ويعتقد من الدين.
وفى العرف الشذي للكشميري : (2/ 82)
المولود الذي شاع في هذا العصر وأحدثه صوفي في عهد سلطان إربل سنة ( 600 ) ولم يكن له أصل من الشريعة الغراء.
وفى المولد : (ص: 21)
وقال الشيخ علي محفوظ : ” وأول من أحدث المولد النبوي بمدينة إربل الملك المظفر أبو سعيد في القرن السابع ، وقد استمر العمل بالموالد إلى يومنا هذا ، وتوسع الناس فيها وابتدعوا بكل ما تهواه أنفسهم وتوحيه إليهم شياطين الإنس والجن ، ولا نزاع في أنها من البدع.
وفى شذرات الذهب – ابن العماد : (5/ 138)
وأما احتفاله بمولد النبي فإن الوصف يقصر عن الإحاطة كان يعمله سنة في الثامن من شهر ربيع الأول وسنة في الثاني عشر لأجل الاختلاف الذي فيه فإذا كان قبل المولد بيومين أخرج من الإبل والبقر والغنم شيئا كثيرا يزيد على الوصف وزفها بجميع ما عنده من الطبول والمغاني والملاهي حتى يأتي بها الميدان .
وفى المدخل لإبن أمير الحاج : (2/3)
ومن جملة ما احدثوه من البدع مع اعتقادهم أن ذلك من اكبر العبادات واظهار الشعائر ما يفعلونه فى شهر ربيع الأول من المولد وقد احتوى على بدع ومحرمات جملة.
وفى فتاوى الأزهر: (6/ 237)
لأن عمل الموالد بالصفة التى يعملها الآن لم يفعله أحد من السلف الصالح ولو كان ذلك من القرب لفعلوه .
ويراجع أيضا :
فتاوى محموديه : 5/377 , اشرف الفتاوى : 1/426
والله اعلم بالصواب

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×