দ্য বেঙ্গলি টাইমস ডটকম
এতদিন মানুষের ধারণা ছিল, ডিমের কুসুম খেলে হার্টের ক্ষতি হয়। তাই স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ ডিমের কুসুম ফেলে দিয়ে শুধু সাদা অংশটুকু খেতেন। কিন্তু এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘ডিম হার্টের জন্য ক্ষতিকর’ কথাটি সত্য নয়। খাদ্যবিষয়ক বিখ্যাত ম্যাগাজিন ‘ইটিং ওয়েল’ তার সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায় বলেছে, ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল আছে, এ কথা সত্য। তবে যে ধরনের বা যে মাত্রার কোলেস্টেরল আছে; তার জন্য আর্টারি ব্লক কিংবা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হিসেবে ডিমের কুসুমকে দায়ী করা যায় না।
পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের প্রখ্যাত অধ্যাপক ড. পেনি ক্রিস-ইথারটন জানান, বেশিরভাগ সুস্থ মানুষ কোনো সমস্যা ছাড়াই প্রতিদিন একটি করে ডিম নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। তার মতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ খাদ্যের মাধ্যমে যে ধরনের কোলেস্টেরল গ্রহণ করেন; তা রক্তের কোলেস্টেরল বাড়াতে তেমন কার্যকর ভূমিকা পালন করে না। কারণ মানুষের শরীর নিজ থেকেই কম মাত্রার কোলেস্টেরল উৎপাদন করে তা পুষিয়ে নেয়। তার মতে, স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স-ফ্যাট রক্তের কোলেস্টেরল বাড়াতে জোরালো ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আশার কথা হলো, একটি বড় মাপের ডিমে খুবই সামান্য পরিমাণ স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে এবং কোনোই ট্রান্স-ফ্যাট থাকে না।
দি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন হার্টের সমস্যা কিংবা ডায়াবেটিসের হিস্ট্রি না থাকলে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে বয়স ৫৫ ও পুরুষের ৪৫ বছরের কম হলে প্রতিদিন ৩০০ মিলিগ্রামের কম কোলেস্টেরল গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু একটি বড় মাপের ডিমে পাচনযোগ্য বা খুব সহজেই হজম হয়- এমন কোলেস্টেরলের পরিমাণ ২১১ মিলিগ্রামের বেশি নয়।
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দেশ হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন মুলুকের একটি নিত্য সমস্যা ‘পুষ্টি ঘাটতি’। মার্কিন পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডিমের কুসুমই পারে সে দেশের ‘পুষ্টি ঘাটতি’ দূর করতে। ফেডারেশন অফ আমেরিকান সোসাইটি ফর এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজিস লাইফ সায়েন্স রিসার্চ অফিসের ‘নিউট্রিশন মনিটরিং অ্যান্ড রিলেটেড রিসার্চ’ ইউনিট তাদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলেছেন, বেশিরভাগ জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ এবং অনেকেরই ক্যালসিয়াম গ্রহণের ক্ষেত্রে ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। তা-ই নয়, এক থেকে দুই বছরের শিশুদের মধ্যে মেয়েশিশুদের ক্ষেত্রে আয়রন, ১৬ বছরের বেশি বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ এবং ষাটোর্ধ্ব মেকিক্সকান-আমেরিকানদের ক্ষেত্রে ফোলেট গ্রহণে ঘাটতি থাকছে। তাছাড়া প্রায় সব বয়সী এবং সব বর্ণের জাতিগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে ভিটামিন-এ, ই, বি৬ এবং কপার গ্রহণে গড়পড়তা ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। মার্কিন পুষ্টিবিদরা দাবি করছেন, শুধু ডিমের কুসুমই এ ঘাটতি পূরণ করার জন্য যথেষ্ঠ। কেননা এতে রয়েছে কপার, প্রায় সব ধরনের ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, সেলিনিয়াম, থিয়ামিন, ফোলেট, বি৬, বি১২, শতভাগ ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ই এবং প্যানথোথেনিক এসিড।
অন্যদিকে ক্যারেটিনয়েডের খুব সহজলভ্য একটি উৎস হচ্ছে ডিম। এতে রয়েছে সহজেই পাচনযোগ্য লিউটিন এবং জিউজ্যানথিন- যা চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্যারোটিনয়েড চোখের কালো অংশ গঠন করে এবং বার্ধক্যজনিত ম্যাকুলার ডি- জেনারেশন বা বার্ধক্যজনিত অন্ধত্ব প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




