দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “...মুসলমানগণ তখন চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য কাতারবন্দি হতে থাকবেন। এমন সময় ফজরের ইকামত শুরু হলে আসমান থেকে ঈসা বিন মারিয়াম অবতরণ করবেন...।-” (মুসলিম)
অপর বর্ণনায়- “দামেস্কের পূর্ব-প্রান্তে সাদা মিনারের কাছে ঈসা বিন মারিয়াম দু-টি রঙিন চাদরে আবৃত হয়ে দু’জন ফেরেশতার কাঁধে ভর করে অবতরণ করবেন। মাথা নিচু করলে টপটপ পানি পড়বে। আবার উঁচু করলে কেশগুচ্ছ সুশোভিত মতি-সদৃশ দৃশ্যমান হবে। কোন কাফেরের শরীরে তাঁর নিশ্বাস পড়া মাত্রই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে।” (যতদূর তাঁর দৃষ্টি যাবে, ততদূর তাঁর নিশ্বাস গিয়ে পৌঁছুবে। অর্থাৎ ঈসা আ.-এর দৃষ্টির মাধ্যমে-ই অর্ধেক শত্রুবাহিনী ধ্বংস হয়ে যাবে)।
ঈসা আ.কে দেখামাত্রই দাজ্জাল -পানিতে লবণের ন্যায় গলে যাবে। পলায়নের উদ্দেশ্যে দৌড় দেবে। ঈসা আ. তার পিছু ধাওয়া করে লুদ এলাকার প্রধান ফটকের কাছে তাকে পেয়ে যাবেন (লুদ হচ্ছে বাইতুল মাকদিসের সন্নিকটে প্রসিদ্ধ এলাকা, ইহুদীরা সেখানে অত্যাধুনিক সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করেছে) সেখানেই তিনি দাজ্জালকে হত্যা করবেন। ফিরে এসে তিনি বর্ষায় লেগে থাকা দাজ্জালের রক্ত মুসলমানদের দেখাবেন।
দাজ্জালের অবস্থানকাল
দাজ্জাল পৃথিবীতে কয়দিন অবস্থান করবে? প্রশ্নের উত্তরে নবী করীম সা. বলেছেন- চল্লিশদিন। প্রথম দিন এক বৎসর, দ্বিতীয় দিন এক মাস, তৃতীয় দিন এক সপ্তাহের ন্যায় হবে।
হাদিসটি শুনার পর সাহাবায়ে কেরাম দীর্ঘ এই দিনগুলোতে নামায পড়ার বিধান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! দীর্ঘ এই দিনগুলোতে একদিনের নামায কি যথেষ্ট হবে ?! নবী করীম সা. বলেছিলেনঃ “না! বরং নামাযের জন্য তখন তোমরা সময় ঠিক করে নিও! (অর্থাৎ দীর্ঘ এক বৎসরের দিনে পূর্ণ এক বৎসরের নামায-ই আদায় করতে হবে, তবে এর জন্য সময় ঠিক করে নেয়া আমাদের দায়িত্ব)।
আবু সাঈদ রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “দাজ্জাল থেকেও মারাত্মক একটি বিষয় নিয়ে আমি তোমাদের উপর শঙ্কিত- সেটি হচ্ছে গোপন শিরক। মানুষ নামাযে দাড়াবে। প্রিয় মানুষটি তাকিয়ে আছে ভেবে সুন্দর করে নামায পড়বে।-” (মুসনাদে আহমদ)
রিয়া (আত্মপ্রদর্শন) ঘৃণিত একটি বিষয়। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে দেখানোর উদ্দেশ্যে বা প্রশংসা কুড়ানোর আশায় কোন কাজ করাকে-ই রিয়া বলা হয়। আত্মপ্রদর্শনকারীকে কাল কেয়ামতে বলা হবে- যাও! যাকে দেখানোর জন্য দুনিয়াতে এবাদত করতে! তার কাছে যাও! দেখ- প্রতিদান পাও কিনা..!!?? (মুসনাদে আহমদ)