ইয়াজূজ-মাজূজের সংখ্যাধিক্য
আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “ইয়াজূজ-মাজূজ আদম সন্তানের-ই একটি সম্প্রদায়। তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হলে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলবে। তাদের একজন মারা যাওয়ার আগে এক হাজার বা এর চেয়ে বেশি সন্তান জন্ম দিয়ে যায়। তাদের পেছনে তিনটি জাতি আছে- তাউল, তারিছ এবং মাস্ক।-” (তাবারানী)
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, প্রাচীরের বর্ণনা দিতে গিয়ে নবী করীম সা. বলেন- “অতঃপর প্রতিদিন তারা প্রাচীর ছেদনকার্যে লিপ্ত হয়। ছিদ্র করতে করতে যখন পুরোটা উম্মোচনের উপক্রম হয়, তখনি তাদের একজন বলে, আজ তো অনেক করলাম, চল! বাকীটা আগামীকাল করব! পরদিন আল্লাহ পাক সেই প্রাচীরকে পূর্বে থেকেও শক্ত ও মজবুতরূপে পূর্ণ করে দেন। অতঃপর যখন সে-ই সময় আসবে এবং আল্লাহ পাক তাদেরকে বের হওয়ার অনুমতি দেবেন, তখন তাদের একজন বলে উঠবে, আজ চল! আল্লাহ চাহেন তো আগামীকাল পূর্ণ খোদাই করে ফেলব! পরদিন পূর্ণ খোদাই করে তারা প্রাচীর ভেঙে বেরিয়ে আসবে। মানুষের ঘরবাড়ী বিনষ্ট করবে, সমুদ্রের পানি পান করে নিঃশেষ করে ফেলবে। ভয়ে আতঙ্কে মানুষ দূর দূরান্তে পলায়ন করবে। অতঃপর আকাশের দিকে তারা তীর ছুড়বে, তীর রক্তাক্ত হয়ে ফিরে আসবে।-” (তিরমিযী, মুসনাদে আহমদ, মুস্তাদরাকে হাকিম)
হাদিস থেকে যা বুঝলাম
o তারা দিনরাত বিরামহীন খোদাই করে না। যদি করত, তবে পূর্ণ করে ফেলত। সন্ধ্যা পর্যন্ত করে ফিরে যায়।
o সিড়ি বা মই ব্যবহার করে প্রাচীর ডিঙিয়ে আসার বিষয়টি হয়ত তাদের মাথায় আসেনি অথবা চেষ্টা করেও পারেনি।
o প্রতীক্ষিত কাল নাগাদ কখন-ই তারা ইনশাআল্লাহ (আল্লাহ চাহেন তো) বলবে না।
বুঝা গেল, তাদের মাঝেও কর্মঠ ও পরিশ্রমী ব্যক্তি আছে। নেতৃত্ব কর্তৃত্বের অধিকারী-ও আছে। আল্লাহ পাকের ইচ্ছা এবং ক্ষমতা সম্পর্কে জানে- এমন ব্যক্তিও আছে।
এটাও হতে পারে যে, অনিচ্ছা ও অজান্তেই তাদের মুখ থেকে “ইনশাআল্লাহ” বেরিয়ে আসবে।
o ঈসা আ.-এর পৃথিবীতে অবতরণ সংক্রান্ত হাদিসে নবী করীম সা. বলেন- “...অতঃপর আল্লাহ পাক ঈসার কাছে ওহী পাঠাবেন যে, আমার একদল বান্দাকে এখন আমি বের করব, যাদের মুকাবেলা করার শক্তি তোমাদের নেই। তুমি মুমিনদের নিয়ে তূর পর্বতে চলে যাও!”
o নাওয়াছ বিন ছামআন রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “অতঃপর আল্লাহ ইয়াজূজ-মাজূজকে বের করবেন। তারা প্রত্যেক উচ্চভূমি থেকে অবতরণ করবে। তাদের প্রথম দল বুহাইরা তাবারিয়া-য় এসে নিমিষেই সমস্ত পানি পান করে ফেলবে। পরবর্তী দল এসে বলতে থাকবে- এখানে কোন কালে হয়ত পানি ছিল।-” (মুসলিম)
বুহাইরা তাবারিয়াঃ একেبحيرة الجليل (জালীল উপসাগর)-ও বলা হয়। ইংরেজীতে টাইবেরিয়ান লেক। অধিকৃত উত্তর ফিলিস্তীনে অবস্থিত এ লেকটি জর্ডান নদীর সাথে যোগসূত্র স্থাপন করে আছে। লেক’টির দৈর্ঘ্য ২৩ কিঃ মিঃ। সর্বপ্রশস্ত ১৩ কিঃ মিঃ। গভীরতা ৪৪ মিটারের বেশি হবে না। লেকটি সমুদ্র-পৃষ্ঠ থেকে ২১০ মিটার নিচুতে অবস্থিত।
সামনে আরো বিস্তারিত বিবরণ আসছে ...