আমার মধ্যে শিল্পবোধ একটু কমই, সেবার ফ্রান্স বেড়াতে গিয়েছিলাম, এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করলাম কিন্তু প্যারিসের লুভরে মিজিয়ামে যাওয়া হয়নি, দেখা হয়নি মোনালিসার দুই হাতের আঙ্গুল - যা কিনা সত্যজিৎ রায়ের ভাষায় পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৌন্দর্য্য। বাড়ির সামনে একটি ম্যাপেল গাছ আছে, কখন পাতা আসে কখন বিশুষ্ক হয়ে ঝরে পড়ে বাতাসে উড়ে যায় দেখা হয় না। একবার ঘটা করে অটোয়া বেড়াতে গেলাম, অক্টবরে শরৎ কালের পাতার রং দেখতে, সেখানকার একটা পার্ক অপরূপ রূপে সাজে এই মাসে। একটা ছোট পাহাড়ের উপর পার্কে, দেখলাম অনেক গাছ আর তার নিচে এদেশীয়রা তাদের সারমেয়গণকে বিষ্ঠা ত্যাগ করাচ্ছে, আমার শিল্পবোধ যতটুকুন ছিল তার প্রায় পুরোটাই উবে গেলো এতসব কুকুরের প্রাকৃতিক ডাকের দৃশ্য দেখতে দেখতে।
আমার বরং ভালো লাগে শিল্পের সাথে যদি কিছুটা রসের যোগান থাকে, ব্যাপারটি একটি উদাহরণ দিয়ে বলি। একবার এক স্বামীস্ত্রী মিলে প্যারিসের লুভরে মিজিয়ামে বেড়াতে গেছেন। দুজনে একসাথেই ছবি দেখছিল কিন্ত দুজনের অভিরুচি ভিন্ন হওয়ায় কখন যে তাঁরা আলাদা হয়ে গেছে খেয়াল করেন নাই, অনেক সময় পেরিয়ে গেছে, স্ত্রী খেয়াল করলেন যে তাঁর স্বামী পাশে নেই তিনি তখন ছবি দেখা বাদ দিয়ে স্বামীকে খোঁজা শুরু করলেন। এমাথা ওমাথা ঘুরে ক্লান্ত হয়ে গেলেন, শেষে দেখলেন দূরে একটি ছবির সামনে তাঁর স্বামীর মত একজন একটি ছবি দেখছে। তিনি তাড়তাড়ি এগিয়ে দেখলেন ব্যাক্তিটি তাঁর স্বামীই এবং তিনি মাথা ঘুরিয়ে, দুলিয়ে ছবিটা দেখছেন। তিনি পিছনে যেয়ে দেখলেন যে ছবিটি একটি যুবতী মেয়ের, কাপড় নেই সমস্ত শরীর গাছের পাতা আবৃত। তিনি হালকা রাগী গলায় বললেন, শরৎ আসুক, গা থেকে সমস্ত পাতা ঝরে পড়ুক তখন ভালো করে দেখো।