এই ব্লগে জামায়াতের পক্ষে যত লেখা আসে তার অন্তত বিশগুণ বেশি আসে জামায়াতের বিপক্ষে। একদল লোক কাল্পনিকভাবে জামায়াতকে শত্রু বানিয়ে লিখেই চলছেন অবিরাম। কিন্তু কারণটা কি? এ নিয়ে একটি ছোট এবং তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণ দেয়ার চেষ্টা করবো।
সারাদেশে কয়জন জামায়াত করে আর কয়জনই বা শিবির করে। এই ব্লগেই বা কয়জন সরাসরি জামায়াত করে? অতি নগন্য একটি সংখ্যা। তারপরও শুধু জামায়াত বিরোধিতা নিয়ে পোস্ট আর মন্তব্যে ছেয়ে যায় ব্লগ।
এই ব্লগে জামায়াত বিরোধিদের লেখার আর বিরোধিতার ধরণ দেখলে মনে হয় জামায়াত ক্ষমতায় গেল বলে। এবার না গেলেও আগামিবারই বুঝি যায়। কিন্তু বাস্তব সত্য হচ্ছে আগামি পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের ক্ষমতায় জামায়াতে ইসলামীর যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
প্রশ্ন হচ্ছে তারপরেও কতিপয় ব্লগারদরে বজামায়াত বিরোধিতায় জীবন পাত করে দেয়ার শপথ কেন? সারাদিন কেন জামায়াত শিবিরের বিরোধিতায় এরা লেগে থাকে?
আসলে সমস্যা জামায়াত শিবির কে নিয়ে নয়, সমস্যা ইসলামকে নিয়ে। বস্তুত এ পৃথিবীর সমাজ সভ্যতায় যারা দীর্ঘদিন আধিপত্য করছে, নেতৃত্ব দিচ্ছে, সেই ভোগবাদী নেতারা পৃথিবীবাসীকে অনেক টেকনোলজি উপহার দিয়েছে, বস্তুগত অনেক উন্নয়নের স্বাদ এ পৃথিবীবাসীকে তারা দিয়েছে। কিন্তু একটি জিনিস তারা দিতে পারেনি। মানব-জীবনের বহুবিধ সমস্যার পূর্ণাঙ্গ কোন সমাধান তারা দিতে পারেনি। গত পরশুর (২৮/১/০৮) এএফপির রিপোর্ট- চীনে গত বছর ১৪ লক্ষ পরিবার ভেঙেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি। এভাবে সারা বিশ্বের মানুষ বস্তুগত উন্নয়নের বিপরীতে আত্নিক আরা পারিবারিক শান্তি খুইয়েছে, খোয়াচ্ছে। তারা আজ দিশেহারা, কোথায় একটি পূর্ণাঙ্গ শান্তির পরশ। ঠিক এ মূহূর্তে সারা বিশ্বেই বিভিন্ন সংগঠন বিশেষত যুবকেরা ইসলামের শাশ্বত আদর্শের আলো ছড়াতে শুরু করেছে যেখানে বলা হচ্ছে বিশ্ব নেতৃত্ব আল্লাহর বান্দাদের হাতে এলেই কুরআনের ছোয়ায় মানবতার শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
এখানেই বুশদের আপত্তি, ভয়। নেতৃত্ব হাতছাড়া হয়ে যাবে। একেতো এই নেতৃত্বের হাতে পৃথিবীবাসীকে দেয়ার মত কিছূ ভোগ্যপন্য ছাড়া আর কিছূ নেই, তাই শান্তিময় কোন আদর্শ দেখলেই ঘরপোড়া গরুর মত এরা আর্তচিৎকার করে ওঠে, অন্যদিকে ইসলাম নেতৃত্ব পরিবর্তনের যে দাওয়াত দিচ্ছে তার চুড়ান্ত ফলাফল যে ভোগবাদীদের হাত থেকে নেতৃত্ব ছুটে যাওয়া তা এরা উপলব্ধি করতে পারছে। তাই সর্বশক্তি দিয়ে ইসলামের জাগরণ ঠেকানোর জন্য ষাড়ের মত ছুটে চলছে পশ্চিমা রাখাল।
বিরোধিতাকারী সেসব ব্লগাররা এদেরই আদর্শিক কর্মী, এই ভোগবাদী সমাজের পাহাড়াদার, সুবিধাভোগী। বাংলাদেশে ইসলামের শান্তিময় বাণী তাই এদেরকেও সমানভাবে পীড়া দেয়। জামায়াতে ইসলামী কোন সমস্যা নয়, সমস্যা ইসলাম। এ মূহুর্তে জামায়াতে ইসলামী যেহেতু সুসংগঠিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে তাই আপাত-টার্গেট জামায়াতে ইসলামী। এখানে যদি অন্য কোন দল থাকতো তবে এরা সমানভাবে তাদের বিরুদ্ধেই লাগতো। বিশ্বের সর্বত্র তাকান, দেখবেন যেখানেই ইসলামের পতাকাবাহী কোন সংগঠন মাথা উচু করেছে, তাদের বিরুদ্ধেই হাজারো অভিযোগ খাড়া হয়েছে। এটি হবেই । এটাই ঐতিহাসিক সত্য। হযরত নূহ আ. সাড়ে নয়শো বছর এভাবে অসংখ্য মিথ্যা অভিযোগ নিয়েই দাওয়াতী কাজ করেছেন। সূরা আরাফে তো সিরিয়াল অনুযায়ী নবীদের ইসলামী আন্দোলনের সেই ঝঞ্ঝাবিক্ষুদ্ধ আন্দোলনের ইতিহাস দেয়া হয়েছে।
আমরা হতাশ নই। ইসলাম পৃথিবীতে এসেছে বিজয়ী হবার জন্য। এবং হবেও। জামায়াত আমাদের কাছে বড় কিছূ নয়। আমরা ইসলামের বিজয় দেখতে চাই। জামায়াতের মধ্যে যদি কোন সমস্যা থেকে থাকে তবে আওয়ামী লীগ বিএনপি কেউ এগিয়ে আসুক ইসলামের পতাকা হাতে, সুসংগঠিত চেষ্টা চালাক, আমরা পাশে থাকবো, ছুটে যাব। কেউ তো আসছেনা। তাই আপাতত যারা আছেন, তাদের সাথেই আমরা আছি।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ৯:১১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


