১) যারা এটা ভাবছেন থাবা ভাই অনেক সাবধানী ছিলেন তাও তার পরিচয় জানলো কি করে। আমি বলবো উনি সাবধানী ছিলেন না, উনার বাড়ি মিরপুর এটা উনি অনেকবার পাব্লিকলি বলেছেন। একবার বাসা পরিবর্তনের সময় উনি পুরোনো ফার্নিচার দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। এটা প্রায় ১ বছর আগের কথা। উনি স্থপতি ছিলেন এটাও জানা কথা। উনার নিজের থাবা বাবা প্রোফাইলে ইউনিভার্সিটি জীবনে পড়া একটা ছবি আছে, কম্পিউটারে কাজ করছে এরকম। ওখান থেকে জামাত শিবিরের স্পাইরা তাকে শাহবাগে চিনে নিতেই পারে। আমার তো মনে হয় তাকে চিহ্নিত করে লেখা ঐ ব্লগ সোনারবাংলা ব্লগ পোস্ট করার আগেই তাকে খুন করার প্ল্যান করা হয়েছে।
২) আমার অনেক আর্কিটেকচারের বল্ধুরা যারা থাবা বাবাকে রাজীব হিসেবে ব্যক্তিগত ভাবে চিনতো তারা ফেসবুকে এটা বলার চেষ্টা করছে নুরানী চাপাসমগ্র তার লেখা না, তার নামে মিথ্যা ছড়াচ্ছে ইত্যাদি। আমি বলব তারা ঠিকই বলেছে। রাজীব এর লেখা না ওগুলো। ওগুলো থাবা বাবার লেখা। এখন রাজীব আর থাবা ভাই একি মানুষ এটা নিয়ে তর্ক করার কিছু নাই। থাবা বাবা তার নাস্তিক সত্ত্বা, এখানে সে কোনো ধর্মকে পছন্দ করতো না। রাজীবের বন্ধুদের হয়তো মুহাম্মদ খুব প্রিয় ব্যক্তি হতে পারে, কিন্তু থাবা বাবা কেন মুহাম্মদকে হুদাই সম্মান দিতে যাবে। আর থাবা বাবা এই জিহাদী মুহাম্মদ পার্টির কাছেই খুন হয়েছে। রাজীবের বন্ধুরা ভাবতে পারে ইসলাম খুব শান্তির ধর্ম, মুহাম্মদ খুব ভালো মানুষ ছিলেন, কিন্তু থাবা বাবা সবসময় যেকোন ধর্মীয় আগাছার বিরুদ্ধে ছিলেন। হ্যা তিনি অনেক স্যাটায়ার লিখেছেন, যেটা পড়ে অনেকের দুঃখ লাগতে পারে। কিন্তু তিনি কোন দিনও কারো খারাপ করেন নি, কাউকে খুন করতে প্ররোচিত করেন নি, উনি মিথ্যা সকল ধর্মের বিরুদ্ধে লিখে গেছেন। উনি স্বনামেই হয়তো লিখতেন, কিন্তু আজকে বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে নাস্তিকরা কি পরিমান হুমকীর মুখে। নাস্তিকদের মধ্যে যারা ধর্মের বাড়াবাড়ি নিয়ে লিখে জনপ্রিয় তাদের অলরেডি হিটলিস্ট রেডি। এখন যেকোন অযুহাতে এদের খুন করতে চায় জামাত-শিবির-হিজবুত ইত্যাদি। রাজীব আর থাবা বাবা একই মানুষ হলেও যারা শুধু রাজীবকেই স্মরণ করতে চায় তাদের সাথে আমার কোন বিরোধ নাই। আমিও শুধু থাবা ভাইকেই স্মরণ করতে চাই, আমি রাজীবকে চিনি না। কিন্তু রাজীবের পরিবারের জন্য খুব খারাপ লাগছে।
৩) যারা থাবা ভাইয়ের জানাজা কেন হলো মনে করে খারাপ বোধ করছেন, তাদের বলছি, খারাপবোধ করেন না। উনি হঠাৎ খুন হয়েছেন। আমরা এরকম কিছুর ভয় অনেক আগেই পেয়েছি, কিন্তু কোন সাবধানতা নেই নাই। যারা মনে করেন নিজের মৃত্যুর পর নিজের জানাজা চান না, দেহ দান করতে চান, দয়া করে লিখিত দলিল করে যান। না হলে হয়তো আপনার পরিবারের সিদ্ধান্তকেই সম্মান জানানো হবে। যদি দলিল লিখে যাবার পরেও পরিবার জানাজা দিতে চায়, তাহলে কি আপনার পরিবারের সাথে তর্ক বা মারামারি করবে আপনার সহযোদ্ধারা? সুনির্দিষ্ট নির্দেশ লিখে দিয়ে যাবেন। জানাজা হয়েছে রাজীবের। থাবা বাবা একটি ছদ্মনাম। থাবা বাবার জানাজা হয় নাই। তার লেখা আর আদর্শ তার সহমর্মিতা আর অসাধারণ রসাত্মকবোধ কোনদিন মুছে যাবে না।
৪)থাবা বাবা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাজাকারের ফাঁসি চেয়েছেন। তার খুনি এই নব্য রাজাকারদেরও ফাঁসি আমি চাই। কিন্তু তার রেখে যাওয়া আন্দোলন চালিয়ে যাই। শুধু আপনারা দয়া করে সাবধানে থাকুন।
কৃতজ্ঞতা ঃ Farzana Kabir Khan Snigdha