আশ্রমই আশ্রয়ের একমাত্র উৎস
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
সনাতনী মাত্রেই তার উষালগ্ন হতে শ্বশান পর্যন্ত কোন না কোন গোষ্ঠির অন্তর্ভূক্ত হয়ে জীবনটিকে সুনিয়ন্ত্রিত করার ধারাটি আশ্রম নামে অভিহিত।
সে আশ্রম চারভাগে বিভক্ত। তার ও রয়েছে বয়সের সীমা রেখা। শিশুর জন্ব হতে পাঁচ বৎসরে হয় আক্ষরিক জ্ঞানের শুভারম্ভ। তা হচ্ছে শাস্ত্রীয় ভাষায় বিদ্যারম্ভ বা সাধারণ ভাষায় হাতে খড়ি। সেটিরও বিচার বিশ্লেষন যুক্ত এক প্রাথমিক সংস্কার। উভয় পক্ষের প্রতিপদ ও অষ্টমীতে বিদ্যারম্ভ শুধু নহে অধ্যয়ন ও নিষিদ্ধ। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরব সৈন্যক্ষয়ের সে জ্বলন্ত উদাহরণ 'প্রতিপৎ পাঠশীলানাং বিদ্যেব তনুতাংগতা।' শাস্ত্র বলেনঃ দ্বে বিদ্যে বেদিতব্যে, পরাঅপারচ, গীতোক্ত পরা ও অপরা প্রকৃতির ন্যায় বিভক্ত। এ পূণ্য বিদ্যারম্ভ হতেই আর্য্যশিশুদের পাঠানোই তো গুরুগৃহে- সেখানকার শিক্ষা বর্ষ বিশ বৎসর। ঐ বিশ বৎসর মধ্যে বিষময় সংসারের ধারাকে অমৃত ময় করারও রয়েছে সুব্যবস্থা। যোগ্যগুরুঃ তাকে উভয় বিদ্যায় বিদ্ধান করে সুশিক্ষিত সৈন্য যেমনি যুদ্ধজয়ের সুদক্ষ। সংসার সংগ্রামে জয়ী হবার জন্য ও এ ধর্মীয় বিদ্যালয় হতে যোগ্য শিক্ষা সমাপনান্তে ছুটে যাবে প্রথম এ সর্ব সাফল্য মূলপূণ্য ব্রহ্মচার্য্যশ্রম হতে দ্বিতীয় আশ্রম যা অন্যান্য তিন আশ্রমের প্রাণ। গুরু গৃহহতে এ বিদায় পর্বকে বলা হয় সমাবর্তন। আমাদের দশবিধ সংস্কারের মধ্যে বর্তমান যুগে আচরিত উপনয়ন দিবসে অনুষ্ঠিত হয় তিনটি চুড়াকরণ উপনয়নও সমাবর্তন। যাকে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের অনুষ্ঠেয় নাম-'কনভোকেসন' সে আর্যধারা আজও প্রচলিত। যুদ্ধে যেমনি আত্বরক্ষা ও ভার জীবনের মধুময় উপসংহার। আমাদের পরমারাধ্য শ্রীমৎ লোকানাথ ব্রহ্মাচারীজিও ব্রহ্মেবিচরনের উদ্দেশ্যে যোগ্যগুরুর মাধ্যমে ভোগ ক্ষেত্র সংসার ক্ষেত্র হতে যোগক্ষেত্রে করেন পূন্যযাত্রা গৃহহতে বনে। আশ্রম হতে আশ্রমান্তরে যাবার মুহুর্তে যে মহাস্ত্র শিষ্যদের দিলেন- তাই তাদের জীবন সর্বস্বঃ 'অধীতবিদেষু গুরোঃ উপদেশঃ।' প্রথামাস্ত্র হচ্ছেঃ- ' মাতৃদেবোভব' এ প্রধঅন ও প্রথমাস্ত্রধারীর ভাবী জীবন পূর্ণচক্রের ন্যায় সমজ্জ্বল মাতৃভক্ত গুণে পুত্র বিদ্যাসাগর। কারণ 'মাতৃভক্তি যার অটুট যত ছেলেও হয় কৃতীত'। দ্বিতীয় 'পিতৃদেবোভব' অতিথি দেবো ভব, আচার্য্যদেবোভব। ভুত্ত্যৈন প্রমাদিতব্যম, অর্থাৎ সম্পদ সম্বন্ধে উদাসীন হয়ো না। ইত্যাদি সংসার জীবনের অপরিহার্য্য পালনীয় ব্রত। ঐ ভোগ জীবনের সীমা মাত্র পঁচিশ বৎসর। তৎপর 'পঞ্চাসোর্দ্ধং বনং বজেৎ।' সে পূণ্যাশ্রমের নাম 'বান প্রস্থাশ্রম'। তার অর্থ তিনি সস্ত্রীক বনে যাবেন। এটি যেন প্রাকনির্বাচনী পরীক্ষাশেষে নির্বাচনী পরীক্ষা। ধন্যেগুলোকে তুষমুক্ত করার কুলা মাড়ার মতই শোধন ক্রিয়া বড়ই কঠিন এ আশ্রম ধারা। এখানে হতে হবে চরম পরীক্ষোত্তীর্ণ। তাঁর ভোগাপকর নির্জ্জণ বনভূমিটি যেন জনসভা এখানে তাকে ভাবে জীয় হতে হবে না।' সাপের মুখেতৈ নাচাবি বেং বা ছুইবে ভাই। অমিয় সাগরে মিনানকরিচি (কিন্তু) কেশ নাভিজিবে ভাই।' এভাবে চরম পরীক্ষোত্তীর্ণ ব্যক্তিই চরমাশ্রম 'কাম্যানাং কর্ম্মনাং ন্যাসং সন্ন্যাসম।' এ আশ্রমে সকল প্রকার কাম্য কর্ম্মত্যাগে হয় জীবনের মধুময় ফলের অধিকারী। চতুরাশ্রমের ব্রহ্মচর্য্য গার্হস্থ্য কামপ্রস্থও সন্ন্যাস। এ গুলো একে একে অতিক্রম করার ধারা প্রতি মানব ধম্ম্যানুর্গত। আমাদের আর্য্যঋষি প্রবর্ত্তিত ধারা ধরেই চলে অতীত ব্যক্তিগণ হন স্মরনীয় ও বরণীয়। রাবনূদের জীবনধারা ছিল' শৈশবে অভ্যস্থ বিদ্যানাং যৌবনে বিষয়েষিনাং বার্দ্ধক্যে মুনিবৃত্তিনাং যোগেনাশে তনুত্যজাম।' যদি একক্রমধারা লভিঙ্গ হয় তার শেষ জীবন হয় তামুতাপানলদ্ধ। তাই বলা হয়েছে- প্রথমে নার্জিতা বিদ্যঅ দিতীয়ে নার্জ্জিতং ধনম। তৃতীয় নার্জ্জিতং পূণ্যং চতুযৈকিং করিষ্যতি। হায় ! হায় এখন কি উপায়? আজ ভোগ সর্ব্বস্ব সংসারীদের সংসার যেন 'সং' এই সার সংসার। নয় সম্যক সার সংসার। ঐ সম্যক সার করার উপায় আশ্রমাশ্রয়। কারণ- আশ্রম অর্থে আ- অর্থাৎ সম্যক শ্রম বা সম্যক সার্থকাশ্রম আশ্রম।
সমস্যা সঙ্কুল সংসারে একমাত্র সমাধানের আশ্রয় আশ্রম। চস্তীবর্ণিত রাজা সুরথও সমাধি বৈশ্যের জীবন সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানে রাজার হৃত রাজ্য লাভ। সমাধি বৈশ্যের মোক্ষলাভ। রামচন্দ্ররে বিষাদময় জীবনের সমাধানদেন গুরুবৈশিষ্ট। সৃষ্ঠ হয় তাতে 'যোগবাশিষ্ঠ' নামক মহারত্ন গ্রন্থ। সমাগরা ধরিত্রীর অধীশ্বর রাজা দিলীপের 'রঘু' নামক পুত্রলাভের স্বহায় হয় এ আশ্রম। পূণ্যভূমি চট্টলার ধন্যতীর্থ 'মেধাশ্রম' যেখানে শ্রী শ্রী চণ্ডীর আত্ব প্রকাশভূমি ইত্যাদি কারণে আশ্রম ব্যতীত আমাদের আশ্রয় ছিল না হবেও না। সেজন্য শাস্ত্রের সচেতনবানী 'বিনাশ্রমী নতিষ্ঠে ও ক্ষনামাত্রমপিদ্বিজঃ। ' আরও বলা হয়েছে যে ' অষ্ঠচত্বারিংশৎঅব্দং বয়োযাবদনপূর্য্যতে পুত্র ভার্য্যা বিহীনস্য নাস্তি যজ্ঞেহধিকারিতা।' কাজেই প্রতিটি জীবন হবে আশ্রম ভিত্তিক। সচরাচর আনাচে কানোচে ক্লাবঘর দেখা যায়। সেখানে সমস্যার সমাধান নেই বরং সমস্যা সৃষ্ঠির উৎস। কিন্তু শ্রান্ত, ক্লান্ত সংসারীদের দেহও মনের আশ্রয় এই দেবমন্দির যেখানে হয় মনস্থির। ফলকথা উশৃংখল জীবনের সুশৃংখল সমাধানে যুগে যুগে আশ্রমভূমিকা অপরিসীম। আচার্য্য শঙ্কর তাই চারদিকে চারখানা আশ্রম প্রতিষ্ঠার দ্বারা নিরীশ্বরবাদীদের ঈশ্বরোলব্ধি ও উপসনার সুন্দরক্ষেত্র রচনা করে জাতিকে রক্ষা করে মহৎব্রত পালনে করেন ধন্য। পূণ্যপল্লী ফতোয়াবাদ জননীর কোলে সবার আশ্রয় লাভের বহুবিধ আশ্রম প্রতিষ্ঠাতে হয় এ পল্লী আশ্রমপল্লী। সকল মহবাদের সকল প্রকার উপাসনার সমন্বয়তীর্থ এ পল্লী অনন্যা সাধারণ। বাবা লোকনাথের সুদৃষ্টির ফলে এ অঞ্চলে যে উল্লেখ্য আশ্রম প্রতিষ্ঠার অংশীদার তাঁরা ভাগ্যবান এ গ্রামবাসী আমরা ভাগ্যবান ঐ মহাত্বার মাধ্যমে অন্যান্য মহাপুরুষদের সঙ্গলাভের এ আশ্রমই মূল। আঙ্গিকার ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য ও শুদ্র চার বর্ণধর্ম্ম চতুরাশ্রম বিপন্ন তাই প্রার্থনা ' পালতে বর্ণাশ্রমধর্ম্ম শিখাইতে বেদ বিধির মূল এস এস হৃষীকেষ ধরার ভারহারী।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'
আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আকুতি
দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
ক- এর নুডুলস
অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।
ক
একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???
কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???
আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু
২-১ : আলিফ-লাম-মীম
আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন