যাই হোক দেখাদেখি ত অনেক হইল, এবার পোলার ব্যাপারে জিগান শুরু করল মাইয়া পক্ষ। করারি কথা জিগাইবনা তাগো মাইয়া বিয়া দিব বইলা কথা। তোমার নাম কি বাবা? জী রহিম মোল্লা উরফে করিম। মাইয়ার মায়ে জিগায় এটা আবার কেমন নাম হইল? আমি কইলাম নানী রাখছে রহিম মোল্লা আর দাদী রাকছে করিম মোল্লা, নানী মইরা গেছে তাই এহন দাদীরে খুশি করার লাইগা করিম নামটা ইউুস করি। ভাল ভাল, মাইয়ার মা বাহবা দিল। তা বাবা লেখাপড়া কতদুর করছ? জী মে...... দুলাভাই হাত টিপি দিয়া কইল জী পোলা মার্স্টাড পাশ। আমি কইলাম দুলা...... ভাই কি....ক....ন? দুলাভাই আবার চাপ দিয়া আস্তে আস্তে কয় চুপ, এগুলা বিয়ার টাইমে কইতে হয়। আমি মনে মনে কই তাইলে কি আমার বইনরেও এমনে বিয়া করছে নাকি হালায়? তা বাবা কি কাজ কাম কর? জী কবি....তা, আবার দুলাভাই চাপ দিয়া ধরল, জী পোলা কাস্টম অফিসে কাজ করে। দুলাভাইয়ের দিকে তাকাইয়া চোখে চোখে জিগাইলাম এইগুলা কি কন? দুলাভাই উওর দিল চাইপা যা, পরে দেখা যাইব। যাই হোক মাইয়া পক্ষের সবার পোলারে মাইনে আমারে পছন্দ হইল।
বিয়ার তারিখ পাকাপাকি হইতাছে, আমার যে কি খুশি তাগতাছিল, মনে হইতাছিল পুকুরে একটা লাফ দিয়া কতক্ষন সাতার কাইটা আসি। যাই হোক কতক্ষন পর দেহি দুলাভাইয়ের চিল্লাচিল্লির আওয়াজ। আরে করে কি!! কি হইছে দুলাভাই? শালাবাবু এরা তোমারে যৌতুকে কিছূ দিব না। আমি কইলাম আমনে কি কি দাবী করছেন? দুলাভাই কয় বেশি কিছু আর কি করলাম শুধু একটা মোটরসাইকেল, বাজারে যে দোকানটা আছে মাইয়ার বাপের হেইডা তোর নামে লেইখা দিতে আর টিভি ফ্রিজ, খাট পালংক, আর নগদ ১লক্ষ ট্যাকা। ক আমি কি বেশি কিছু চাইছি। আমি মনে মনে কই হালা বাকী রাকছোস কি, মনে হইতাছে আমি বিয়া করতে আসি নাই বাজারে জিনিস পএ কিনতে আইচি। পরে আমি এক্কেরে গলা ফাটাইয়া কইলাম 'আমার কিছু লাগব না, মাইয়ারে আমি এমনিতেই নিয়া যামু' মাইয়ার মা খুব খুশি হইয়া গেল, আমার কপালে এক্কেরে ছ্যাপ সহ একটা চুমু খাইল, ওই দিকে আমার দুলাভাই মুখটা প্যাচার মত কইরা রাখছে, আর মনে মনে আমারে গালি দিতাছে।
কতক্ষণ বাদে আমারে আর মাইয়ারে একলা ছাইরা দিল, মাইনে একটু ফ্রি হইবার লাইগা। যেটার আশায় আমি এতক্ষন আছিলাম। মাইয়া মোটামুটি ভালই মর্ডান, এক্কেরে সাজাই কথা কয়, আমারে নিজের ঘরে লইয়া গেল(কেউ অন্য কিছু মনে কইরেন না, এমনেতেই লইয়া গেছিল, তার ঘরটা দেখাবার লাইগা)। ভালই এক্কেরে সুন্দর পরিপাটি করা সবকিছু। মাইয়া আমারে জিগাইল চাকরি করা ছাড়া আমি আর কি করি? মনে মনে কই চাকরিটাই ত নাই, যাই হোক কইলাম আসলে আমি মাঝে মাঝে লেখালিখি করি। মাইয়া কইল কোথায়? কোন পেপারে? আমি কইলাম না কোন পেপারে না অন্য একটা জায়গায়। মাইয়া আবার জিগায় আপনে কি লিখতে পছন্দ করেন? আমি কইলাম বেসিকলী আমি কবিতা লিখি তাছাড়া মাঝে মাঝে গল্প লিখি। কি টাইপের গল্প? কি মোর জ্বালা একটু ভালবাসার কথা কও কি শুরু করলা(মনে মনে আমি কইতাছি) জী এই মনে করেন ভালবাসার গল্প আর কি। ও আচ্ছা তাইলে ত আপনে খুব রোমান্টিক। লজ্জায় আমি একেবারে কুচুমুচু হয়ে গেলাম। জীবনে প্রথম কোন মাইয়া আমারে এইরকম একটা কমেন্ট করল। মাইয়া আবার জিগায় আচ্ছা বললেন না তো আপনে কোন পেপারে লেখালিখি করেন? কি জ্বালা। হঠাৎ চোখ পড়ল ঘরের কোনে কম্পিউটারের দিকে, বল্লাম আপনারা কি নেট ব্যবহার করেন? মাইয়া কইল জী আমাদের নেট কানেকশন আছে। যাই হোক এইবার এক্কেরে ভাব মাইরা কইলাম দেহেন আমি কোন জায়গায় লেহালেহি করি, এইডা যেন তেন কিছু না, এখানে বহুত নামী দামী মানুষ লেহালেহি করে, আর এই সব লেহালেহি লইয়া একটা বই ও কইলাম বাইর হইছে। এই কথা কইতে কইতে ব্রাউজারটা খুইলা ঢুইকা পড়লাম সামহোয়্যার বোলগে। কইলাম দেহেন আমি কোন জায়গায় লেখালেখি করি, তারপর মাইয়ার দিকে চাইতে দেহি 'বাংলার নারী' র মত চোখ মুখ কইরা কইতাছে লম্পট, চোরের দল, ভন্ড প্রতারক, রাজাকার, তুই এই জায়গায় লেহালেহি করস! এই সব জায়গায় সব শুধু কাদা ছোড়াছুড়ি, গলাবাজি, গালিবাজি, তুই এমন জায়গায় লেহালেহি করস, যা তোর লগে বিয়াই করুম না, তোরে ১ তালাক ২ তালাক ৩ তালাক দিলাম, যা আমাগো ঘরের থেইকা বাহির হও, ভাবমূর্তি বেশি ভাল না দেইখা মাইয়ারে কইলাম শান্ত হইতে ,মাইয়া কয় তোরে একটা কোপ দিয়া কল্লা ফালাইয়া দিমু, যা এহান থেইক্যা। অবস্থার অবনতি দেইখা দুলাভাইরে লইয়া পলাইলাম, পুরা রাস্তায় খালি হিসাব মিলাইবার চেষ্টা করলাম, আমি কি এমন দেখাইলাম, কি এমন প্রসংশা করলাম! মাইয়া ইমন চইটা গেল, আরো নানা বিধ প্রশ্ন।
মিজাজটা আরো খারাপ হইয়া গেছে দুলাভাইয়ের এমন অট্টহাসি দেইখা, হালার পুতেরে কাহিনীটা কওন উচিত হয়নাই। এহন আমার পুরা শরীরটা জ্বলতাছে। যা শালা আমার বিয়াটাই হইল না। সামহো্য়্যার তোরে দেইখা লমু এই বইলা রহিম মোল্লা উরফে করিমের ধ্বংসীয় চিৎকার।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:৩৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





