somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বিয়াটা আর হইল না!

০১ লা জুন, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বয়সটা আর কম হইল না, গুনে গুনে ২৯। আর কত এভাবে কি একা একা থাকা যায়। কেমন একা একা লাগে। বিয়ার ব্যাপারে না ভাবলে আবার সমস্যা কোন দিন দেখা যাইব কোন পট্টির রেগুলার কাস্টমার হইয়া গেছি। অনেক সমস্যারে ভাই/বোনেরা। তাই দুলাভাই বুদ্ধি দিল শালা বাবু এবার কাজটা সেরেই ফেল, আর দেরী কেন!!! দুলাভাইয়ের কথায় বিশেষ সাহস পাইয়া গেলাম মেয়ে দেখতে। মেয়ে ত না যেন একটা সাক্ষাত পরী আইয়া সামনে দাড়াইয়া রইছে। আমার চক্ষু ত কপালে উঠছেই দুলাভাই দেহি মাছি হান্দানের ব্যবস্থা করছে, মুখটা এক্কেরে হা কইরা খুইলা রাকছে। যাই হোক নিজেরা সংযত হইয়া মাইয়ারে বইতা কইলাম। সে কি মাইয়ার হাসি এক্কেরে ক্লোজ আপ। পড়ালেখা যা করছে মাশাল্লা আমার পোলা মাইয়ারা শিক্ষিত বানাইতে পারবো। মাইয়ার চোখের বিশেষ চাহনি দেইখা বুঝলাম আমারে তেনার মনে ধরছে। আমি ত খুশি তে, মনে কইতাছিল কান্দি। বন্ধুরা বহুত খোটা মারছিল আমারে কোন মাইয়া কোন দিন পছন্দ করবনা। আরো কইছিল কালা পোলার কাছে কে মাইয়া বিয়া দিব? আজ মনে হইতাছে সবগুলার গোয়ায় দুইঠা লাথি মাইরা আসি।

যাই হোক দেখাদেখি ত অনেক হইল, এবার পোলার ব্যাপারে জিগান শুরু করল মাইয়া পক্ষ। করারি কথা জিগাইবনা তাগো মাইয়া বিয়া দিব বইলা কথা। তোমার নাম কি বাবা? জী রহিম মোল্লা উরফে করিম। মাইয়ার মায়ে জিগায় এটা আবার কেমন নাম হইল? আমি কইলাম নানী রাখছে রহিম মোল্লা আর দাদী রাকছে করিম মোল্লা, নানী মইরা গেছে তাই এহন দাদীরে খুশি করার লাইগা করিম নামটা ইউুস করি। ভাল ভাল, মাইয়ার মা বাহবা দিল। তা বাবা লেখাপড়া কতদুর করছ? জী মে...... দুলাভাই হাত টিপি দিয়া কইল জী পোলা মার্স্টাড পাশ। আমি কইলাম দুলা...... ভাই কি....ক....ন? দুলাভাই আবার চাপ দিয়া আস্তে আস্তে কয় চুপ, এগুলা বিয়ার টাইমে কইতে হয়। আমি মনে মনে কই তাইলে কি আমার বইনরেও এমনে বিয়া করছে নাকি হালায়? তা বাবা কি কাজ কাম কর? জী কবি....তা, আবার দুলাভাই চাপ দিয়া ধরল, জী পোলা কাস্টম অফিসে কাজ করে। দুলাভাইয়ের দিকে তাকাইয়া চোখে চোখে জিগাইলাম এইগুলা কি কন? দুলাভাই উওর দিল চাইপা যা, পরে দেখা যাইব। যাই হোক মাইয়া পক্ষের সবার পোলারে মাইনে আমারে পছন্দ হইল।

বিয়ার তারিখ পাকাপাকি হইতাছে, আমার যে কি খুশি তাগতাছিল, মনে হইতাছিল পুকুরে একটা লাফ দিয়া কতক্ষন সাতার কাইটা আসি। যাই হোক কতক্ষন পর দেহি দুলাভাইয়ের চিল্লাচিল্লির আওয়াজ। আরে করে কি!! কি হইছে দুলাভাই? শালাবাবু এরা তোমারে যৌতুকে কিছূ দিব না। আমি কইলাম আমনে কি কি দাবী করছেন? দুলাভাই কয় বেশি কিছু আর কি করলাম শুধু একটা মোটরসাইকেল, বাজারে যে দোকানটা আছে মাইয়ার বাপের হেইডা তোর নামে লেইখা দিতে আর টিভি ফ্রিজ, খাট পালংক, আর নগদ ১লক্ষ ট্যাকা। ক আমি কি বেশি কিছু চাইছি। আমি মনে মনে কই হালা বাকী রাকছোস কি, মনে হইতাছে আমি বিয়া করতে আসি নাই বাজারে জিনিস পএ কিনতে আইচি। পরে আমি এক্কেরে গলা ফাটাইয়া কইলাম 'আমার কিছু লাগব না, মাইয়ারে আমি এমনিতেই নিয়া যামু' মাইয়ার মা খুব খুশি হইয়া গেল, আমার কপালে এক্কেরে ছ্যাপ সহ একটা চুমু খাইল, ওই দিকে আমার দুলাভাই মুখটা প্যাচার মত কইরা রাখছে, আর মনে মনে আমারে গালি দিতাছে।

কতক্ষণ বাদে আমারে আর মাইয়ারে একলা ছাইরা দিল, মাইনে একটু ফ্রি হইবার লাইগা। যেটার আশায় আমি এতক্ষন আছিলাম। মাইয়া মোটামুটি ভালই মর্ডান, এক্কেরে সাজাই কথা কয়, আমারে নিজের ঘরে লইয়া গেল(কেউ অন্য কিছু মনে কইরেন না, এমনেতেই লইয়া গেছিল, তার ঘরটা দেখাবার লাইগা)। ভালই এক্কেরে সুন্দর পরিপাটি করা সবকিছু। মাইয়া আমারে জিগাইল চাকরি করা ছাড়া আমি আর কি করি? মনে মনে কই চাকরিটাই ত নাই, যাই হোক কইলাম আসলে আমি মাঝে মাঝে লেখালিখি করি। মাইয়া কইল কোথায়? কোন পেপারে? আমি কইলাম না কোন পেপারে না অন্য একটা জায়গায়। মাইয়া আবার জিগায় আপনে কি লিখতে পছন্দ করেন? আমি কইলাম বেসিকলী আমি কবিতা লিখি তাছাড়া মাঝে মাঝে গল্প লিখি। কি টাইপের গল্প? কি মোর জ্বালা একটু ভালবাসার কথা কও কি শুরু করলা(মনে মনে আমি কইতাছি) জী এই মনে করেন ভালবাসার গল্প আর কি। ও আচ্ছা তাইলে ত আপনে খুব রোমান্টিক। লজ্জায় আমি একেবারে কুচুমুচু হয়ে গেলাম। জীবনে প্রথম কোন মাইয়া আমারে এইরকম একটা কমেন্ট করল। মাইয়া আবার জিগায় আচ্ছা বললেন না তো আপনে কোন পেপারে লেখালিখি করেন? কি জ্বালা। হঠাৎ চোখ পড়ল ঘরের কোনে কম্পিউটারের দিকে, বল্লাম আপনারা কি নেট ব্যবহার করেন? মাইয়া কইল জী আমাদের নেট কানেকশন আছে। যাই হোক এইবার এক্কেরে ভাব মাইরা কইলাম দেহেন আমি কোন জায়গায় লেহালেহি করি, এইডা যেন তেন কিছু না, এখানে বহুত নামী দামী মানুষ লেহালেহি করে, আর এই সব লেহালেহি লইয়া একটা বই ও কইলাম বাইর হইছে। এই কথা কইতে কইতে ব্রাউজারটা খুইলা ঢুইকা পড়লাম সামহোয়্যার বোলগে। কইলাম দেহেন আমি কোন জায়গায় লেখালেখি করি, তারপর মাইয়ার দিকে চাইতে দেহি 'বাংলার নারী' র মত চোখ মুখ কইরা কইতাছে লম্পট, চোরের দল, ভন্ড প্রতারক, রাজাকার, তুই এই জায়গায় লেহালেহি করস! এই সব জায়গায় সব শুধু কাদা ছোড়াছুড়ি, গলাবাজি, গালিবাজি, তুই এমন জায়গায় লেহালেহি করস, যা তোর লগে বিয়াই করুম না, তোরে ১ তালাক ২ তালাক ৩ তালাক দিলাম, যা আমাগো ঘরের থেইকা বাহির হও, ভাবমূর্তি বেশি ভাল না দেইখা মাইয়ারে কইলাম শান্ত হইতে ,মাইয়া কয় তোরে একটা কোপ দিয়া কল্লা ফালাইয়া দিমু, যা এহান থেইক্যা। অবস্থার অবনতি দেইখা দুলাভাইরে লইয়া পলাইলাম, পুরা রাস্তায় খালি হিসাব মিলাইবার চেষ্টা করলাম, আমি কি এমন দেখাইলাম, কি এমন প্রসংশা করলাম! মাইয়া ইমন চইটা গেল, আরো নানা বিধ প্রশ্ন।

মিজাজটা আরো খারাপ হইয়া গেছে দুলাভাইয়ের এমন অট্টহাসি দেইখা, হালার পুতেরে কাহিনীটা কওন উচিত হয়নাই। এহন আমার পুরা শরীরটা জ্বলতাছে। যা শালা আমার বিয়াটাই হইল না। সামহো্য়্যার তোরে দেইখা লমু এই বইলা রহিম মোল্লা উরফে করিমের ধ্বংসীয় চিৎকার।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:৩৬
২১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×