somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অশরীর বা লালশা, প্রেম মিলে মিশে একাকার।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :















মাঝ রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায় মোনার, তার খুব পানির তৃষ্ণা হচ্ছে। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। মাথার কাছে টেবিলের উপর জগে পানি রাখা আছে, কিন্তু সে নড়তে পারছেনা। ডিম লাইটের অস্পষ্ট নীল আলোয় সে তার পায়ের দিকে তাকায়। কে জেন তার পায়ের কাছে বসে আছে! যে বসে আছে তার মুখ দেখা যাচ্ছেনা, তবে লোকটা তার দিকে স্হির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এটা সে বুঝতে পারছে। সে তার ঘার ঘুড়িয়ে ঘড়ির দিকে তাকাতে চেষ্টা করে, কিন্তু সে ঘার ঘুড়াতে পারছেনা। ঘরিটা ডং ডং শব্দ করে উঠে। দেয়ালে একটা টিক টিকি- "টিক টিক" শব্দে ডেকে ওঠে। মোনার স্বাশ কষ্ট হচ্ছে, সে কি মারা যাচ্ছে নাকি মরে গেছে? তার খাটের নিচে এক প্রকারের শব্দ হচ্ছে। কেউ কি তার খাটের নিচে বসে আছে! সে পায়ের দিকে দেখার চেষ্টা করছে। সেখানে কাউকে এখন আর দেখা যাচ্ছে না, একেবারে কর্পুরের মতন উবে গেছে। তার দাদীজান তাকে একটা দোয়া শিখিয়েছিলেন বিপদে পরলে সেই দোয়া পড়তে হয়। মোনা দোয়াটা মনে করার চেষ্টা করছে। দোয়া মনে আসছেনা। কেবল মনে আসছে "টুইংকেল- টুইংকেল লিটেল স্টার" ছড়া। সে মনে মনে "টুইংকেল টুইংকেল" পড়ে বুকে ফু দেবার চেষ্টা করছে, পারছেনা। মুখ দিয়ে ফু বের হচ্ছেনা। হুট করে তার মনে পরে দাদীজান "দোয়াএ কুনুদ" শিখিয়ে ছিলো। কিন্তু এই "কুনুদ" দোয়ার প্রথম লাইন মনে আসছেনা। তার মনে পরছে "আলহামদু সুরা" সে সেই সুরা পড়ে তার বুকে ফুদিতে চেষ্টা করে এবার সে ফু দিতে পারছে। তার শরির হালকা হয়ে যাচ্ছে, বুকের ভাড়টা কিছুটা নেমে গেছে। সে তার ডান পাসে ফিরে ঘড়ির দিকে তাকায়। ঘড়িতে রাত দুটা বাজে।

সে ডাক্তারী পড়ছে, ভুত প্রেতে বিস্বাস তার নাই। সাইকোলজী তার প্রিয় সাব্জেক্ট, সাইকোলজীর ক্লাস গুলো সে মন দিয়ে পড়ে, তার ইচ্ছা সাইক্রেটিষ্ট হবার। বিচিত্র মানুষের অদ্ভুত আচারন তাকে কাছে ডাকে আয়-আয় বলে। সে জানতে চায় মানুষ কেন স্বপ্ন দেখে। রাগ, অভিমান, খোভ বা কান্যা- হাসির উৎপত্যি কোথায়। গত পরশুর সেই লোকটাকে দেখার পরথেকে তার মাথার ভেতর সেই লোকটার চেহারা ঘোর-পাক খাচ্ছে, এই লোকটার মনের ভেতর কি আছে? সেই ক্রু চেহারার অন্তরালের মানুষ টা আসলে কেমন? সে কেন এতটা উসখুস করছিলো।

মাহাবুব মেডিক্যাল কলেজে মোনার সিনিয়ার সে সার্জন, মোনার প্রতি তার কিছুটা দুর্বলতা আছে। মোনা টের পায় তবে কখোন কিছু বলেনি। তবুও মাহাবুব কে দেখলে মোনার বুকের ভেতর কেমন একটা ছ্যাত টাইপ অনুভুতি হয়শ, এই অনুভুতির নাম কি প্রেম না ভালোবাসা, কে জানে? পরশু রাতে তার আর মাহাবুবের নাইট ডিউটি ছিল। সে রাতেই মোনা দেখেছিলো লোকটাকে। গায়ে খাকি পোষাক, কোমরে পিস্তল। বার বার অপারেশন থিয়েটারের দরজা দিয়ে ভেতরে দেখছিল। মাহাবুব যখন ও,টি থেকে বের হল লোকটা সাথে সাথে ওকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে কিছু জানতে চেয়ে ছিল। মাহাবুব "কাজ হয়ে গেছে" এই টাইপের একটা জবাব দিয়েছে সেটা মোনা খুব বুঝতে পেরেছিলো। মোনা মাহাবুবের কাছে জানতে চেয়েছিলো কি ব্যাপার? যে মাহাবুব মোনার সাথে কথা বলার জন্য আকুলি -বিকুলি করে, সেও সেদিন কি এক অদ্ভুত কারনে বলেছিলো "তেমন কিছুনা, তুমি ওয়ার্ডে যাও, এখানে কি কর?" মোনা টের পেয়েছিলো দুমঘরের ওপাস টায় এক ধরনের জটলা। বড় বড় গাড়ি গুলো আসছে আর হেড লাইট জ্বালিয়ে কিছুক্ষন পর চলে যাচ্ছে।

মোনা গ্রামের মেয়ে। ইন্টারের পরীক্ষায় সে বোর্ডে স্ট্যান্ড করে বসলো ছোট বেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হবে। সেই ডাক্তার হবার ইচ্ছা বুকে নিয়ে চলে আসলো ঢাকা, এই শহরে। পিছনে ফেলে এলো গ্রামের বেনী দোলানো শৈশব-কৈশর বা খেলার সাথী ছগির দের। ছগির ওর পাশের বাড়ীর ছেলে সারা দিন ছেলেটা মোনাদের বাড়ীতেই থাকতো মোনা আর ও একসাথে স্কুলে যেতো, ঘর কান্যা খেলতো। মোনা কখনো ভালোবাসেনি ছগির কে। ছগিরটা মনে হয় প্রেমে পরে গিয়েছিলো "মোনার"। ছগিরের চান্স হয়েছিল ঢাকা ভার্সিটিতে। সাবজেক্ট নিয়ে ছিলো বোধহয় বাংলা ওর যা বাংলার প্রতি ঝোক। কৈশর থেকেই কবিতা লিখত। মোনার মনে আছে সগির ওকে একটা কবিতা টাইপ ছড়া লিখে, পড়ে শুনিয়ে ছিল সেই মেট্রিকের বছর। সব গুলো লাইন মনে নেই শেষ দুইটা লাইন মনে আছে তার।

মাটি খুরে আনব মানিক, হাজার টাকার সোনা।
বন্ধু তুমি সাথি আমার পাশের বাড়ীর মোনা।

সগির সাথে অনেক দিন দেখা হয়না মোনার। পরশু গুলি হয়েছে ভার্সিটির রাস্তায়, পুলিশ এলো পাথারি গুলি করেছে। কি এক অদ্ভুত কারনে মোনার মনে হচ্ছে সগিরটা আবার গুলির মুখ পড়লো নাতো?! ছোট বেলা থেকেই যে সাহোসি। একবার মনে আছে মোনার, একটা সাপ মোনাকে কামরে দিতে এসেছিলো সগিরটা লাঠি দিয়ে, কি জোড়েই না মেরে ছিলো সাপটাকে! এক বারিতে সাপ বাবার জীবন শেষ। বড় হয়ে অবশ্য বুঝেছে সেদিনের সে নিরীহ প্রানীটা সাপ ছিলো না, তার নাম কেচো। তাতে কি? ছগির সাহস তো দেখিয়ে ছিল।

মোনা উঠে এক গ্লাস পানি খায়। মাথার ভেতর একটু আগের ঘটনা টা ঘোরপাক খায়। সে এসব কি দেখলো? যে লোকটা ওর পায়ের কাছে বসে থাকতে দেখেছে সেকি কোন অশরীর কিছু! ও থাকে ওর এক খালার বাসায়, খালা চাকরী করে সোনালী ব্যাংকে। ডিভোর্সি বিয়ে থা করেনি আর, করবেওনা মনে হয়। নিমতলির বাড়ীটা খালার নামেই। ব্যাংক থেকে লোন করে পুরোন এই বাড়ী কিনেছেন। এই বাড়ীর আগের মালিক কি কারনে বাড়ী বেচে দিয়েছে বিষয়টা জানতে পারলে একটু সুবিধা হতো, বাড়ীতে ভুত প্রেত আছে কি না জানার। পুরো বাড়ীতে ওরা দুজনই থাকে। ওর কেন যেন মনে হয় বাড়ীটাতে ভুত আছে। কিন্ত ডাক্তারীপড়া একজন মানুষ যদি এভাবে অবলীলায় ভুত-প্রেতে বিশ্বাস করে তাহলে তো হয়েছে, আর রুগী সুস্হ করা হবেনা, নিজেরই থাকতে হবে পাগলা গারদে।

তবে মাঝে মাঝে ওর রুমে কিরকম যেন অস্বস্তি কর ব্যাপার ঘটে। এই যেমন এখন পুরো ঘর মাছের গন্ধে ভরে যাচ্ছে, ও কোন একটা বইয়ে পরেছে ভুতের শরীর দিয়ে নাকি মাছের গন্ধ আসে। গন্ধে ওর কেমন যেন বমি বমি লাগছে। খালার ঘরে চলে যাবে না কি? না থাক সারা দিন চাকরী করে এসে ঘুমিয়েছে খালা এখন জাগানো ঠিক হবেনা, ভেবে ও খাটের উপর বসে। ওর কেন যেন মনে হয় কেউ একজন ওর পিছনে বসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে অপলক। মোনার অস্বস্তি বাড়তে থাকে। সে তার ঘারের কাছে নিঃস্বাস নেবার শব্দ শুনতে পায়। এখন একটা চিৎকার দিলে কেমন হয়? তার আগেই পিছন থেকে একটা চেনা গলা জানতে চায়" মোনা কেমন আছো তুমি?"
মোনা কোন কথা বলে না, সে কি সত্যি কন্ঠটা শুনেছে? সেটা জানার জন্য অপেক্ষা করে। আবার পেছন থেকে জানতে চায় "মোনা কেমন আছো তুমি?"
মোনা মেডিকেলের বইয়ে পড়েছে অধিক টেনশানে মানুষের হ্যালুশিনেসন হয়। মোনারও তাই হচ্ছে। নাহলে ছগির কোথা থেকে আসলো? তার ঘরে। মোনা হ্যালুসিনেশনের ব্যাপারটা বোঝার জন্য সিদ্ধান্ত নিলো সে কথা বলবে সগিরের সাথে। মোনা কাপা গলায় বলে" আমি ভালো আছি, তুমি কেমন আছো সগির?" সগির কিছুখন চুপ করে থেকে বলে "খুব ভালো নেই, বুকের ব্যাথাটা জানন দিচ্ছে খুব।"
-কি হয়েছে তোমার? ,
ও কিছুনা।
- তুমি ক্যানো এসেছো?
তোমাকে একটা কথা বলতে।
-বলো,
আমি তোমাকে ভালোবাসতাম মোনা।
- ভালোবাসতাম বলছো কেন? এখন ভালোবাসোনা।
না এখন আর বাসিনা, ডাক্তার মাহাবুব তোমাকে ভালোবাসে, খুব ভালোবাসে। লোকটার বাংলার প্রতি ভালো বাসা কম কিন্তু তোমার প্রতি অনেক।
-মানে কি তুমি এসব কিভাবে জান?
আমি জানি, আমাদের জানতে হয় তাইনা হলে ছাত্র নেতা।
- তুমি মাহাবুব কে কোথায় দেখেছ?
দেখেছি খুব কাছ থেকে দেখেছি, এক হাতের ব্যাবধানে দেখেছি, কথাও হয়েছে আমার ওর সাথে।ওই বলেছে আমাকে ও তোমাকে ভালোবাসে। -কদিন আগে তোমার সাথে দেখা হয়েছে মাহাবুবের?
এই তো গত পরশু।
-বল কি, সেদিন তো মাহাবুব,,,,,,।
মোনা আমাকে যেতে হবে, মসজিদে আযান হচ্ছে, আমি চলি।

মোনা পিছনে তাকায় সেখান সাদার উপর লাল চেকের শার্ট পরে হ্যাংলা টাইপের একটা ছেলে বসে আছে। তার হাত বুকের উপর আংঙ্গুলের ফাঁক গলিয়ে রক্ত ঝড়ছে। সে ছেলেটার মুখের দিকে তাকায় তার মুখ দেখা যায় না। অসচ্ছ-ঘোলাটে কুয়াশার চাদর ভেদ করে সরে যেতে থাকে সগির। মোনা জ্ঞান হারায়।

সাল ১৯৫৩ তারিখ ২১শে ফেব্রুয়ারী ভোর ৬ টাঃ

মোনা বিছানায় শুয়ে আছে পাশেই সুয়ে আছে মাহাবুব। পাকিস্তান সরকারের সাথে মাহাবুবের মহরম দহরমের কারনে সে বিশাল কোয়াটার পেয়েছে, মোনার সাথে তার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৬মাস। মাহাবুবকে কিছুটা বিঃসন্ন দেখায়। সে বিছানায় শুয়েই একটা সিগারেট ধরায়। মোনা জানতে চায়- কি হলো? তারা তারী কর, প্রভাত ফেরীতে যাব। মাহাবুব কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে- "কি যে করোনা তোমরা! শহীদের জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করো আল্লহতালার কাছে, আল্লাহ যেন তাদের বেহেস্ত নাসীব করেন, ঐসব প্রভাতফেরী টেরীতে কিচ্ছু হয়না, মোনা ভদ্র ভাবে বলে- "শোন মাহাবুব শহীদ দের জায়গা বেহেস্তে হবে এটা আল্লাহ তালা ঘোষনা দিয়েছেন, তোমাকে এটা চিন্তা করতে হবেনা। দোয়া তো তাদের জন্য করবই। ফুল না দিলাম ঘটনাটা যে খানে ঘটল সেখানে গিয়ে কিছুক্ষন নিরবে দ্বাড়িয়ে থাকলেও তো মনে সান্তি মেলে। তুমি চল তো তারাতারী," মাহাবুব অনিচ্ছা নিয়ে উঠে দাড়ায়। মোনা উঠে গিয়ে তোয়ালেটা মাহাবুবের হাতে দিয়ে বলে- যাও গোসল কর।

মোনা মাহাবুবের কাপর রাখার আলমারীটা খোলে ওর সাদা পান্জাবীটার খোঁজে, এই ৬মাসে ও কখোন খোলেনী আলমারীটা যত দরকারী অদরকারী কাগজে ঠাসা। পন্জাবী খুজতে গিয়ে কাপরের ভাঁজ থেকে একটা ভাঁজ করা কাগজ ছিটকে পরে মেঝেতে। মোনা কাগজটা হাতে তুলে নেয়। কাগজে এখনো লেগে আছে রক্তের দাগ। কাপা হাতে কাগজ টা খোলে মোনা,

ছোট বেলায় পড়া পংতি গুলো চোখের সামনে ভেষে ওঠে একে একে, এই কবিতাটাই তো লিখেছিলো সগির মোনাকে নিয়ে। এই কবিতার গায়ের রক্ত কেন?! সে পড়তে আরম্ভ করে, তার চোখের জ্বল আর কাগজের গায়ের শুকিয়ে যাওয়া রক্ত মিলে মিশে একা কার হয়ে যেতে থাকে কবিতার ছন্দের বেদনায়,


তুই বুঝিস না তোর কারনে মনের ভেতর আগুন,
তোরই জন্য ফুল বাগানে নতুন ফুলে ফাগুন।

তুই বুঝিস না তুই না এলে ফুল ফোটেনা বনে,
তোর কারনেই মন পাখিরা ডাকছে না আর মনে।

তোরই আশায় ছন্ন ছাড়া দিন গুলো হয় গোনা,
তোর গালারই গলার মালায়, সাদা রংয়ের সোনা।

চাদের আলোয় ভাসে পুকুর, ভাসে সাদা হাস,
তোর কারনে আকুল আমি আকুল দুর্বা ঘাস।

নয়ন তারায় চোখের ভেতর তুই যে ঘুরে বেরাস,
সাঝ সকালে শিতে ভোরে তোর প্রেমেরী আভাস।

চন্দ্র বিন্দু চাদের কনা মুক্ত ঝরা রোদ,
তোর হাতের ঐ কাচের চুড়ী সুখের নতুন বোধ।

রাত পাহারায় নামছে পরি নামছে জোনাকীরা,
তোর নাকেরই নাকের ফুলে শিশির কনার হীরা

আমি ভাবি তুই ভাবিস প্রেম ছাড়া কি চলে?
আকাশ কুশুম নগ্ন ফুলের মালা তোর গলে।

নীল শাড়ী তে হাটবি একা, চলবি নুপুর পায়ে,
স্বচ্ছ জ্বলের ঘোলা কাদা লাগবে না তোর গায়ে।

তোর জন্য পাগল আমি, না পাই যদি দেখা,
সত্যি বলছি পালিয়ে যাবো, চাদে যাবো একা।

মাটি খুরে আনব মানিক, হাজার টাকার সোনা।
বন্ধু তুমি সাথি আমার পাশের বাড়ির মোনা।



শেষ কথাঃ

মোনার আর যাওয়া হয়না মাহাবুবের সাথে প্রভাত ফেরীতে। মাহাবুবের কাছে মোনা কেবল জানতে চেয়েছিল সেদিন রাতে সেই পুলিশ অফিসার তোমাকে বলে ছিলো সগির কে মেরে ফেলতে তাইনা? সগিরের বুকে গুলি লেগেছিল। সগির তোমাকে অপারেশনের থিয়েটারে বলেছিলো আমার কথা আমি ওর পরিচিত এই হাসপাতালেই পড়ি। তুমি অপারশন করতে গিয়ে এই কবিতাটা পেলে ওর বুক পকেটে। তাই আমাকে পাবার জন্য, তুমি মেনে নিলে পুলিশ অফিসারের কথা মেরে ফেললে সগির কে। এর পর লাশ দুমঘর থেকে তুলেদিলে পুলিশের জিপে, গুম করে ফেলার জন্য। আমি ৫২র ২১ তারিখের পরথেকে খুজেছি সগিরকে গ্রামে খবর নিয়েছি ও নেই- কোথাওনেই। পুরা বাংলার কেউ জানলোনা, তোমরা কি ভাবে একজন শহিদের নাম লুকিয়েদিলে ইতিহাস থেকে, মুছে দিলে একটা মানুষের স্বপ্ন ভালোবাসা বা দেশ প্রেম।

মোনা একাই থাকে তার সেই খালার বাসায় খালার সাথে, মাহাবুবের সাথে ছাড়া ছাড়ি হবার সময় মোনা জানতে চেয়েছিলো তুমি কি আমাকে সত্যিই ভালো বাসতে, মাহাবুব বলেছিল না, আমি কেবল তোমার শরির টাকে চেয়েছি আর আহাম্মক ছগির চেয়েছিলো তোমার মন। এখনো মাঝে মাঝে মাঝ রাতে ছগির এসে দাড়িয়ে থাকে মোনার বিছানার পাশে, অপলক চেয়ে থাকে মোনার দিকে, নিরবে। মোনারও ভালো লাগে ছগিরকে কাছে পেয়ে, তার কাছে আহম্মক ছগিরই সত্যি কারের ভালো বাসা। সে নিস্চিন্তে ঘুমায়।

মাঝে মাঝে মোনার খুব মন খারাপহয় সে সগিরের চেহারাটা দেখতে পারেনা। আর পারবেই বা কিভাবে? ঘাতকরা তো সেদিন ছগিরের লাশের মুখটাকে থেতলে দিয়েছিল ব্যানেটের খোচায়, ওর আইডেন্টিটি মুছে দেবার জন্য।

মুখ বন্ধঃ এই গল্পের সব চরিত্র কাল্পনিক, কেবল আমার দেখা একটা স্বপ্ন হুবহু ঢুকিয়ে দিয়েছি। আমি কবিতা লিখিনা, কবিতা লিখতে গেলেই ছড়া টাইপের হয়ে যায়। তাই লিখেছি ছড়া টাইপের কবিতা। গল্পে ব্যাবহারিত ছড়াটা আমারই লেখা, যারা কবিতা লেখেন আমার ধৃষ্টতা ক্ষমার চোখে দেখবেন।
ভাষা আন্দলনের যে কজন শহিদের নাম আমরা জানি, তারা ছাড়াও আরো কয়েকজন শহিদ হয়েছিলেন সেদিন, যাদের কে গুম করে ফেলেছিলো পাকিস্তান পুলিশ। তথ্য সূত্রঃ আমার বাবা। সেই রকম শহীদদের একজন কে কল্পনায় এনে এই লেখার জন্ম। আর হ্যা অনেকদিন ভাবছি ভুত নিয়ে কিছু লিখি, যদিও আমি নিজে কোনদিন ভুত দেখিনি। তবে চেষ্টা করেছি দেখার, হানা বাড়ীতে গিয়েছি, কবরস্হান, সশানে গিয়েছি ফল হয়নি। তবে এক রাতে বাশঝাড়ের নিচ দিয়ে যাবার পর কিন্চিত বমি আর পেট খারাপের মতন হয়ে ছিল, তবে পরে বুঝেছিলাম সেটা মামার সাথে বেশি পরিমানে বাদাম খেয়ে ফেলার কারনে হয়ে ছিল। ভালো থাকবেন সবাই। লেখাটা বড় হয়ে গেলো। কষ্ট করে যারা পড়বেন তাদের আগাম ধন্যবাদ। রাত জেগে লিখলাম কিছু টাইপো আছে সকালে ঠিক করে দিবো।

অদৃশ্য কোন এক কারনে কোরআনের একটা আয়াত লিখি, "সত্য এসে যখন মিথ্যার সামনে দ্বাড়ায় মিথ্যা বিলুপ্ত হয়।"

উৎসর্গঃ জানা অজানা সকল শহীদ দের উদ্যেশ্যে, ভালো থাকুন শহীদেরা জান্নাতে চির শান্তিতে।




ফেইস বুকে আমার পেইজ দেখতে চাইলে নিচের লিংকে যানঃ

Click This Link

আমার রিসেন্ট একটি লেখাঃ
অচেনা বিছানায় চুরি সম্মান বা এই আমরা।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:০৩
৩৮টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×