somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাই সঠিক পরিকল্পনা-১

১৪ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের পর্বগুলোতে আমরা দেখেছি কিভাবে পরীক্ষাভীতি একজন সম্ভাবনাময় ছাত্রের ক্যারিয়ারকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দিতে পারে। আমরা এটাও জেনেছি যে এই পরীক্ষাভীতি একজন ছাত্রের মনে এমনি এমনি তৈরি হয় না। প্রত্যাশার চাপ, আশা আর বাস্তবতার ফারাক- এসবই পরীক্ষাভীতির মুল কারণ। এখন এই পরীক্ষাভীতি আমরা কাটিয়ে উঠবো কিভাবে? এর আগের পর্বে আমি মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের ব্যাপারে আলোচনা করার চেস্টা করেছি। সেখানে কিভাবে মেডিকেলে ভর্তির নিজেকে প্রস্তুত করার পাশাপাশি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্যও সমান তালে প্রস্তুত করা যায়। আজকে আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা করব।



আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তবে বিশেষায়িত প্রযুক্তি বা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় বলতে শুধু ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়কেই বুঝি- ১) বুয়েট (বাংলাদেশ প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), ২) চুয়েট (চট্টগ্রাম প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), ৩)কুয়েট (খুলনা প্রকৌশল এবং প্রযক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) এবং ৪)রুয়েট (রাজশাহী প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত একই স্টাইলে এবং প্রায় কাছাকাছি সময়েই ভর্তি পরীক্ষা হয়। ভর্তি পরীক্ষা হয় ইংরেজী, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং গণিতের উপর। পরীক্ষার ধরন লিখিত এবং ২/৩ ঘন্টাব্যাপী পরীক্ষা হয়। গণিতেতো গণিত করাই লাগে, সাথে সাথে দেখা যায় পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নেও বেশিরভাগ সময় বিষয়ভিত্তিক গণিত করা লাগছে। অর্থাৎ এই পরীক্ষাগুলোতে কোন পরিক্ষার্থীর বিষয়ভিত্তিক গাণিতিক জ্ঞান এবং প্রায়োগিক ক্ষমতার পরীক্ষা নেওয়া হয়। যে পরিক্ষার্থী যত বেশি অনুশীলন করেছে তার সফলতার হার তত বেশি এবং সাথে সাথে মাথা ঠান্ডা রেখে দ্রুতগতিতে উত্তর করাতেও পারদর্শী হতে হয়। এইচ.এস.সি পরীক্ষার মত লিখিত হওয়ায় পরিক্ষার্থীদের সফলতার জন্য তেমন বেগ পেতেও হয় না। তবে আবার এমনি এমনি কেউ ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যাবে না, যার সচেতন এবং সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে পারবে তারাই টিকবে।



এখন একজন ছাত্র যখন ফাইনাল পরীক্ষার পর পরই ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে তখন তার মাথায় একটা জিনিসই কাজ করে – “আমাকে বেশি পরিমাণে গণিত অনুশীলন করতে হবে।“ তার পরিকল্পনার মাঝে কখনই জীববিজ্ঞান কিংবা অন্য কোন কিছু স্থান পায় না। কারণ তার দরকারও নেই। পরিকল্পনা আর চাওয়া-পাওয়া মত সব কিছু চললে ঠিক আছে। কিন্তু যদি কোন কারণে পরিকল্পনার বাইরে কিছু ঘটে তখন? পরিকল্পনার বাইরে কিছু ঘটলে কি করা উচিত তা জানার আগে আমাদের জানতে পরিকল্পনার বাইরে কিছু ঘটার সম্ভাবনা কতটুকু?



ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেমুলত দুই ধাপে যোগ্য ছাত্র-ছাত্রী বাছাই করা হয়। প্রথম ধাপে বিশেষায়িত বিষয়গুলোতে (পদার্থ, গণিত, রসায়ন এবং ইংরেজী) প্রয়োজনীয় নম্বর প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে ভর্তির আবেদনপত্র চাওয়া হয়। বুয়েটে এই চার বিষয়ে নুন্যতম ১৮ গ্রেড চাওয়া হয়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চাওয়া হয় ১২/ ১৩। কোন কারণে যদি (দুর্ঘটনাবশতঃ) ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর কোন পরিক্ষার্থী যদি দেখে সে এই প্রয়োজনীয় নম্বর পায়নি তবে তার আগের কয়েকমাসের প্রস্তুতি বিফলেই চলে যায়। আর এমনটা হতেই পারে। কারণ অনেক ভালো ছাত্রও প্যানিক কিংবা হঠাৎ প্রেসারের কারণে মনমত পরীক্ষা দিতে পারে না। এরপর আসা যাক ভর্তি পরীক্ষার কথায়। সাধারণত এই ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে প্রতিটা বিষয়ের গভীর থেকে প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্ন আসতে পারে কোন পরীক্ষায় এমনটা হয় না? কিন্তু এখানে প্রসংগটা একটু ভিন্ন। পদার্থবিজ্ঞানের যে অংকটা করে আপনি পদার্থবিজ্ঞানে ৮০+ নম্বর পেয়ে এসেছেন সেই একই অংক কিন্তু আপনাকে ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার নিশ্চয়তা দিতে পারে না। কারণ ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষার অংকগুলো একই হলেও দেখা যাবে যে আপনি পরীক্ষার হলেই সেটা প্রথম দেখেছেন!! মাথা ঠান্ডা থাকলে যত কঠিন অংকই হোক সমাধান করা কোন ব্যাপার না। চেস্টা চালিয়ে গেলে সমাধানের পথ পাওয়া কোন ব্যাপার নয়। কিন্তু ঐ যে প্যানিক আর নার্ভাসনেস- যেটা যেকোন মুহূর্তে চলে আসতেই পারে। তাই ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।



তাহলে আমরা ধরে নিতেই পারি, There is not any certainty in life whatever you do. তাই আমাদের সবসময় একটা plan B বা দ্বিতীয় পরিকল্পনা করে রাখতে হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়া পরিক্ষার্থীদের জন্য সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির চেস্টা করা ছাড়া আর কোন পথ খোলা থাকে না। কারণ এই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পর অল্প সময়ের মাঝে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া তাদের পক্ষে অসম্ভব। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার জন্য কি পরিমাণ Dedication আর Determination লাগে তা এক কথায় ব্যাখ্যা করে বোঝানো অসম্ভব। এখন এই plan B কিভাবে সাজানো উচিত কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য নিজেকে কিভাবে প্রস্তুত করা উচিত তা নিয়ে আমরা পরবর্তী পর্বে আলোচনা করব


এখানে ক্লিক করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×