somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণিতভীতি কাটিয়ে উঠা কেন প্রয়োজন

২১ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় গণিত একটা কী-ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। আমরা যতই ভাবি গণিতকে পাশ কাটিয়ে গেলেই চলবে, ততই বলা যায় গণিত আমাদেরকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরবে। ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা করা যাক।

জীববিজ্ঞান, গণিত, রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞান- এই চার বিষয়ের উপর পরীক্ষা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় এই প্রতিটা বিষয়ে ৩০ নম্বর করে উত্তর দিতে হয়। মোট ১২০ নম্বরের পরীক্ষা, সময় হচ্ছে ১ ঘন্টা ৪৫ মিনিট। সময় ব্যবস্থাপনা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।আমরা যদি ১ ঘন্টা ৪৫ মিনিট বা ১০৫ মিনিটকে ১২০ দিয়ে ভাগ করি তবে আমরা দেখতে পাই যে প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর দিতে আমরা সময় পাব মাত্র ৫২ সেকেন্ডের মত। এক অর্থে এইটুকু সময়ই যথেষ্ট, আবার আরেক অর্থে এই সময় আসলে খুবই অপ্রতুল।যেমন- পরীক্ষকেরা অনেক ভেবেচিন্তেই পরীক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত সময় কতটুকু তা নির্ধারণ করেছেন। পরীক্ষকদের অভিজ্ঞতা এবং বিজ্ঞতা বিবেচনায় আনলে অবশ্যই এইটুকু সময়ই যথেষ্ট। অন্যদিকে যে পরিক্ষার্থী পরীক্ষায় সম্পুর্ণ উত্তর দিতে পারেনি তাকে জিজ্ঞেস করলে পাবেন ভিন্ন উত্তর। তার মতে এই পরীক্ষার মত কঠিন পরীক্ষা আর নেই! কিন্তু আসলে পরীক্ষার হলে কি ঘটছে?

প্রথমেই সময় ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোন রকমের চিন্তা না করে গেলে পরীক্ষার হলে কি অবস্থা হয় তা চিন্তা করা যাক। ধরুন “ক” নামক একজন পরিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। সে প্রথমেই প্রশ্ন হাতে নিয়ে ভাবল যে যেহেতু সে গণিতে পারদর্শী তাই গণিতের উত্তর দিবে প্রথমে। গণিতের বীজগণিত অংশ খুব দ্রুত উত্তরও করে ফেলল সে। জ্যামিতি/ক্যালকুলাসের উত্তর দিতে গিয়ে দেখল সেটাতে একটু বিশদ হিসাবনিকাশের প্রয়োজন। তাই সে হিসাবে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। অনেকক্ষণ হিসেব-নিকেশ করে অংকগুলো মিলালো। এভাবে বলবিদ্যা অংশও দ্রুত উত্তর দিয়ে দিল। পুরো গণিতের উত্তর না দেওয়া পর্যন্ত সে থামল না। কারণ সে জানে গণিতেই তাকে সবচেয়ে নম্বর তুলতে হবে। উত্তর দিতে দিতে সে হয়তো খেয়ালই করেনি কখন ১ ঘন্টা পার হয়ে গেছে। ঘন্টার আওয়াজে তার সম্বিত ফিরলো। এবার তাকে বাকি বিষয়গুলো মাত্র ৪৫ মিনিটে উত্তর দিতে হবে যেখানে পদার্থবিজ্ঞান আর রসায়নের অংকগুলোও আছে। অবস্থা বেগতিক দেখে সে প্যানিকে আক্রান্ত হল। এবং ফলস্বরূপ দেখা গেল যে তার পক্ষে অনেক প্রশ্নের উত্তরই দেওয়া সম্ভব হয়নি, সেসব প্রশ্নের উত্তর জানার পরেও! অথচ সে যদি সময় সম্পর্কে একটু সচেতন থাকত এবং একটা পূর্ব পরিকল্পনা নিয়ে আসত তাহলে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো শুন্য।অন্যদিকে যে পরিক্ষার্থী আগে থেকেই একটা পরিকল্পনা নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেছে, তার জন্য কোন প্রশ্নই কঠিন না। এবং সফলতা পাবে সেই।

এত কথা বলার আসলে কোন প্রয়োজনই ছিলো না। আমার লেখার মুল উদ্দেশ্য “কেন আমরা গণিতকে গুরুত্ব দিব?” এই প্রশ্নের উত্তর নিহিত রয়েছে আসলে আমার আগের কথাগুলোতেই। কারণ পরীক্ষার হলের সময় ব্যবস্থাপনার অনেকাংশ জুড়ে থাকা উচিত গণিত। গণিত করতে অন্যান্য বিষয় থেকে বেশি সময় লাগে। তাই গণিতের জন্য সবসময় আলাদা সময় বরাদ্দ রাখা উচিত। তারউপর আবার যত প্রস্তুতিই নেওয়া হোক না কেন দেখা যায় যে গণিতে কখনই পূর্ণ নম্বর পাওয়া সম্ভব হয় না। প্রতিবছরই প্রশ্নে এমন কিছু অংকথাকে যেগুলো উত্তর বের করা বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং সব ছাত্র-ছাত্রীর পক্ষে মাথা ঠান্ডা রেখে সেসব প্রশ্নের উত্তর বের করা সম্ভবও না। এর সাথে যদি গণিতভীতি যুক্ত হয় তাহলে গণিতে ফেল করা ছাড়া গতি নেই। পরীক্ষার হলে সবচেয়ে ভালো সময় ব্যবস্থাপনা হচ্ছে-

১) প্রথমে জীববিজ্ঞান পার্টের উত্তর দেওয়া। এবং উত্তর দেওয়ার সময় কোন প্রশ্নের উত্তর না জানলে সেটা নিয়ে বেশি মাথা না ঘামিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। পরে সময় হলে শেষের দিকে গিয়ে না পারা প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে আবার মাথা ঘামানো যেতে পারে।

২) এরপর অবশ্যই রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞানের থিওরিটিকাল অংশের উত্তর দিতে হবে। এখানেও প্রশ্নের উত্তর না জানলে আগের পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

৩) এবার গণিতে হাত দিতে হবে। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নের অংকগুলোর যেগুলো খুব সহজে উত্তর দেওয়া যায় সেগুলো দ্রুত দাগিয়ে ফেলতে হবে। তারপর দীর্ঘ অংকগুলোর দিকে নজর দিতে হবে।

খেয়াল রাখতে হবে, প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপে যেন ৩০ মিনিটের বেশি সময় না লাগে। ৩য় ধাপে ১ ঘন্টা সময় ব্যয় করা যাবে এবং এই ধাপে উত্তর দেওয়ার সময় কখনই তাড়াহুড়া করা যাবে না। তাড়াহুড়া করলে কখনই অংক মিলবে না। সবশেষে, শেষ ১৫ মিনিটেনা পারা প্রশ্নগুলো নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে। এই সময় ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করলে সাফল্য অবশ্যম্ভাবী।মনে রাখতে হবে, একমাত্র সঠিক পরিকল্পনাই পারে একজন পরিক্ষার্থীকে ভর্তি যুদ্ধের বিশাল সমুদ্র সফলভাবে পারি দেওয়ার উপযুক্ত করতে।

আরও লেখা পড়ুন।
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×