চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে, একটু তৃপ্ততা নিয়ে যখন ভাবলাম ছবিটা একে শেষ করব। ঠিক তখনই দেখি আমার আশে-পাশে ছবি আঁকার তুলি নাই, রঙ নাই। এখন কি করি? মাকে ডাকলাম, মা মা।
কি হয়েছে?
আমার ছবি আঁকার তুলি আর রঙ কোথায়?
ও সে তো আমি রেখে দিয়েছি।
তাড়াতাড়ি দাও। মাত্রই তো দেখলাম পাশে, চায়ে চুমুক দিতেই উধাও করে দিলে কিভাবে?
এতো কথা বলিস না, আমি দিয়ে যাচ্ছি।
মা সবকিছু দিয়ে গেলেন। আমিও মনোযোগ দিয়ে হাতে তুলি নিয়ে আঁকতে শুরু করে দিলাম। এখন একটি গাছের ডালের ছবি আঁকছি। ডালটা সোজা দিয়ে দিলাম। মূলত সবাই ডাল একটু বাঁকাই আঁকে।
একটু পর একটা সিগারেট ধরিয়ে যখন আঁকতে শুরু করব, দেখি আঁকা ছবিগুলো নড়ে-চড়ে উঠছে। এ কি কান্ড? আমি তো অবাক!
গা ঝাড়া দিয়ে ছবিগুলো শরীরের রঙগুলো ছিটিয়ে দিল আমার গায়ের উপর। সেখান থেকে একটা গাছ বের হয়ে তার সদ্য জন্ম নেওয়া হাত দিয়ে আমার হাতের তুলিটা কেড়ে নিল।
কিছুক্ষণ পর আমি নিজেকে দেখতে পেলাম না। নিজের অস্তিত্ব অনুভব করছি কিন্তু দেখতে পাচ্ছি না। কেমন যেন লাগতে শুরু করল। পেটের ভিতর থেকে সবকিছু বের হয়ে যেতে চাচ্ছে। কিন্তু জোর করে ধরে রেখেছি।
গাছটা এবার তুলিতে রঙ মাখালো। তারপর ধীরে ধীরে আমাকে আঁকতে শুরু করল। আমি তো অবাক। কিন্তু এখন ভাবছি অন্য কথা। যদি মা এসে পরে। তাহলে তো চিৎকার করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে।
দূর থেকে পায়ের আওয়াজ শুনতে পেলাম। বুঝলাম কেউ আমার কক্ষের দিকে এগোচ্ছে। ধীরে ধীরে শব্দটা স্পষ্ট হতে লাগল। গাছটাও আমাকে একে যাচ্ছে একমনে।
পায়ের আওয়াজটা ক্রমেই কাছিয়ে আসছে। গাছটাও তার কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু তখনই দেখতে পেলাম মায়ের মুখখানা। কিন্তু মা আমাকে কোন রকম রিএ্যাক্ট করল না। আমি একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লাম। গাছটাকে ধন্যবাদ দিলাম। আমাকে ঠিক সময়ে একে শেষ করতে পেরেছে বলে।