এইতো গত কিছুদিন আগে আমাদের পাশের বাড়ির ৩০/৩৫ বছরের এক ভাবি তার ২ মেয়ে ও ১ ছেলেকে রেখে ২৫ বছরের তার চাচাতো দেবরের সঙ্গে পালিয়ে গেছে । এই খবরটা এখন আমাদের গ্রামের ছোট বড় সবার মুখে মুখে । অনেকেই বলতেছে অমুকের বউ তার পেটের সন্তানদের কথা চিন্তা না করে কেমন করে পারল এই কাজটা করতে ?? গ্রামের সবাই আরো অনেক ধরনের মন্তব্য করতেছে, যা ছিল অশালীন । অথচ যে বা যারা মন্তব্য করতেছে তাদের মা , বোন বা বউযে কখন কিভাবে আবার এমন ঘটনা ঘটায় তা নিয়ে কারো মাথা ব্যাথ্যা নেই । সবাই ব্যস্ত আছে শুধু অন্যের সমালোচনায় ।
নিয়তির কি পরিহাস এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই চুন্নু চাচার মেয়ে লিজাকে নিজ ঘরেই রাতের আধারে ধর্ষন করে গেল অজ্ঞাত কিছু যুবক । আর লিজাকে ধর্ষন করবেই না কেন , সেতো প্রতিদিন কলেজে যেতে এমন টাইট পিট পোশাক পরে বের হয় যা দেখে বৃদ্ধদের ও আবার যুবক হতে মন চায় । গত সপ্তাহে আমার এক মামাতো বোনের বিয়ের গায়ে হলুদে গেলাম যদিও আমি গায়ে হলুদের নামে কোন অনুষ্ঠান করার পহ্মে না । আহ, গায়ে হলুদে গিয়েতো আমি অবাক কারন অনেকগুলো মেয়ে সবাই হলুদ রঙ্গের শাড়ি পরা এবং বিউটি পার্লার থেকে এমন ভাবে সেজে এসেছে যে বুঝাই যাচ্ছে না কার বিয়ে ? আর এই মেয়ের দলের পেছনে আছো অনেক গুলো যুবক যাদের মধ্যে বেশীর ভাগই স্কুল কলেজের শিহ্মার্থী । তাদের এই অবাধ মেলামেশা দেখে ২/১ জন মুরব্বীকে বললাম এই যে হলুদের অনুষ্ঠানে ছেলে মেয়েদের হাতাহাতি ,নাচা নাচি করতেছে আপনারা কিছু বলেন না কেন ?? তাদের উত্তর আমাকে হতভম্ব করে দিল, বলতেছে আরে বাবা বিয়ে বলে একটা কথা, এমনতো হবেই এখানে একটু আকটু ছেলে মেয়ে আনন্দতো করবেই আবার বলার কি আছে ??
সমাজের এমন নৈতিক অধঃপতন দেখে আমি বড়ই চিন্তিত এই ভেবে আগামী ৫/১০ বছর পরে নাকি আরো কত কি দেখতে হবে ?? আমাদের প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিহ্মিকার মেয়ে নাকি কোন টেলিভিশন চ্যনেলে নাচ গানের প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়েছে তাই তিনি সকল ছাত্রকে দোয়া করতে বলেছেন । এমন খবর শুনে ভাবতে লাগলাম কি আজব ব্যাপার হবে নর্তকী তার জন্য আবার দোয়া । ইদানিং তো দেখতেছি অনেক মেয়ে এমন টাইট বোরকা পরে যে তার শরীরের আগে পিছের সব স্পষ্টভাবে দেখা যায়, এমন বোরকা পরনের উদ্দেশ্য কি তা আমার বুঝে আসে না । মোবাইল এটাতো এখন এমন জিনিসে পরিনত হয়েছে যে ভাত না খেয়ে থাকা যায় তবে মোবাইল ছাড়া চলা অসম্ভব । আর ভারতীয় অপ সংস্কৃতির টেলিভিশন চ্যানেলতো এখন বাংলার ঘরে ঘরে থাকা মনে হয় বাধ্যতামূলক । স্টার জলসা না দেখতে পেরে আত্নহত্যার মত জঘন্য কাজও ইতি মধ্যে হয়ে গেছে ।
আমার মনে হয় দেশের টিভি চ্যানেলগুলো বের হয়েছে শুধু প্রবাসীদের জন্য কারন বাংলাদেশের টেভি চ্যানেলগুলো দেশের লোক দেখে বলে মনে হয় না । আমাদের দেশ নাকি ৮৫% মুসলীমের দেশ অথচ মেয়েদের পর্দা কাকে বলে তা ১% জানে কিনা সন্দেহ কারন সমাজে মামাতো ভাই,খালাতো ভাই, চাচাতো ভাই , তালতো ভাই, ফুফাতো ভাই এমন সব ভাইয়ের সাথে ঠাট্রা মশকারা করা দোষের কিছু নয় তবে যখন তারা মেয়েকে নিয়ে পালায় তখন কেন আহাজারি করে ?? শরিয়তের নিয়মকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল আজ স্বীকৃত, ভাবি দেবরের সম্পর্ক কত যে জগন্য তা হাদীস পড়লে জানা যায় অথচ সমাজের লোকেরা বলে বড় ভাবি নাকি মায়ের সমান তাইতো অনেকেই দেবরকে তো গোসলও করিয়ে দেয় । এরপর নেশা অবস্থায় আপন বাবা ধারা মেয়ে ধর্ষিত হচ্ছে, নেশাগ্রস্থ ছেলের হাতে বাবা মা খুন এসব এখন পুরোনো । মেয়েদের অবাধ স্বাধীনতার কারনে আপন মেয়ের হাতেই বাবা মা খুন তাও সবাই জানে । সমাজের এত অধপঃতন অথচ নামধারী ইসলামীক কোন দল বা সংঘঠনের কোন ভূমিকা নেই চোখে পড়ার মত । সবাই আছে নিজেদের কর্মী বা সমর্থক বাড়াতে ব্যস্ত ইসলাম প্রতিষ্ঠা বা কায়েম করা কথা শুধু মুখেই থেকে যায় ।
ভারতের নায়িকা সানি লিয়নি আসবে বাংলাদেশে , তার আসা বন্ধ করতে সোস্যাল মিডিয়া সহ কিছু ইসলামী সংঘঠনের হুজুগে সমর্থকদের প্রতিবাদ দেখে মনে হচ্ছে তারা সানি লিয়নের আসা বন্ধ করতে পারলেই স্বার্থক হবে আর এটাই মনে হয় শুধু ইসলামের কাজ অন্য কিছু আছে বলে তারা জানে বলে মনে হচ্ছে না । অথচ বাংলার আনাচে কানাচে যে হাজারো সানির জন্ম হতে চলছে তা নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথ্যা নেই , কিন্তু কেন আছে কোন জবাব ??
ইসলামী সংঘঠনগুলোর বা দলের ধোকাবাজী ও হেফাজত ইসলামের মুনাফিকতা ঃ বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধের নামে ইসলামের হুকুম পালনের মধ্যে বাধা দিচ্ছে তা কারো নজরে পড়ে না । টেলিভিশন, সিনেমা , অবাধ মেলামেশার কারনে আজ যিনা করা সহজ কিন্তু হাজারো প্রশ্ন তুলে বিয়ে করাকে কঠিন করে দিয়েছে তাও কারো নজরে আসে না । সামান্য খেলার জন্য আযান বন্ধ করতেছে এমনি কি মাদ্রাসাও বন্ধ করতেছে তাও নজরে আসে না । বিয়ে বাড়িতে নাচ গানের আসর দিনে দিনে বেড়েই চলছে তা নিয়েও কারো মাথা ব্যাথা নেই । শিহ্মা প্রতিষ্ঠানের বইতে ইসলাম বিদ্বেষী লেখা আর যৈানতাই ভরা কিন্তু কারো মাথা ব্যাথ্যা নেই, কিন্তু কেন ?? সব চেয়ে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে সামান্য স্বার্থে ইসলামের নামে দল, মত , গ্রুপ সৃষ্টি করে আজ বির্পযয়ের সৃষ্টি করতেছে আলেম নামে যালেমরা । সামান্য প্রতিবাদ, মিটিং, মিছিল, সভা-সমাবেশ করে আজ পর্যন্ত ইসলামের কোন লাভ হয়েছে বলে আমার নজরে আসে না হ্মতি ছাড়া । লোক দেখানো আন্দোলন করে কখনো ইসলাম কায়েম হবে না । আন্দোলন হতে হবে মুহাম্মদ (সাঃ) এর মত , মাত্র একজন মুসলীমের জীবন বাচাতে বাইয়াত নিয়েছিল ১৪০০ সাহাবী অথচ তথাকথিত রাসূলের সৈনিকরা আজ হাজার হাজার মুসলীমকে মৃত্যুর মুখে দেখেও নিরব । বাংলাদেশের ভন্ড পীর চরমোনাই নাকি মুজাহীদদের আমীর অথচ জীবনে কখনো কোন অস্ত্র ধরছে কিনা সন্দেহ । জামায়াত ইসলাম নাকি জিহাদের জন্য তৎপর অথচ আজ পর্যন্ত বিশ্ব মুসলীমকে সাহায্যের জন্য একজন লোকও বের হয়েছে বলে জানি না যদির এক সাইদী সাহেবের মামলার রায়ে প্রান দিল ১৭০ এর উপরে এটা কি ইসলামের আনুগত্য না হয়ে ব্যক্তি আনুগত্যে বহিঃপ্রকাশ হল না । হেফাজত ইসলাম যা এখন মনে হচ্ছে মুনাফিকতার এক নতুন নাম । নিজেদের কর্মীদের লাশ রাস্তায় দেখেও তারা নিরব । সর্বশেষ তারা বলেছে লতিফি সিদ্দিকীকে জামীন দিলে আন্দোলনে জাপিয়ে পড়বে কিন্তু আজ নাস্তিক লতিফ বাহিরে আর হেফাজতের নেতারা নিরব । হেফাজত ইসলামের বন্ধু নয় শত্রু তা জাতীর কাছে আস্তে আস্তে প্রমানীত হবে , অপেহ্মায় থাকুন । তাবলীগ জামাত এরা যে কেমন ইসলাম মানে তা তাদের আমীররাও জানে না । তথাকথিত ৮৫% মুসলীম দেশে কি করে এত সিনেমা হল থাকতে পারে ? প্রতিটি ছোট বড় সব শহরেই আছে পতিতালয়, কেউ কি কখনো তা বন্ধের জন্য কথা বলেছে ?? নিজেদের মধ্যে এত সমস্যা থাকতে না দেখেও না দেখার ভান করে এখন অনেকই উঠে পড়ে লেগেছে সানি লিয়নের পিছনে । প্রত্যেকের ঘরে ঘরে বা আশে পাশে যে হাজারো সানি লিয়ন জন্ম নিচ্ছে তা যদি এখনো নজরে না আসে তাহলে যে কি হবে আল্লাহই ভাল জানে । যারা এমন হুজুগে ইসলাম পালন করে তারা কখনো জান্নাতের ঘ্রান পাবে বলে কুরআন হাদীস বলে না ।
এখনো সময় আছে পূর্নাঙ্গ ইসলামে প্রবেশ করার , দুনিয়ার মোহে আজ ইসলামকে কুলষিত করে রেখেছে আলেম নামে যালেমরা যার মাধ্যমে ধোকায় পড়ছে সাধারন মানুষেরা । লোক দেখানো কোন আন্দোলন আর নয় , নামে বেনামে দল বানিয়ে ইসলামকে ভাগ আর নয় , আজই অঙ্গিকার করুন বিপদে আপদে সব সময় থাকব একজন আরেক জনের সাথে , যার ভিত্তি হবে এক পরিচয়ে , সেটা হল মুসলীম । যাতে থাকবে না জাতীয়তাবাদ বা বর্নবাদ ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০৩