somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই কেমন ভালবাসা ?? হুমায়ুন কবির (সুমন)

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একটি পর্দানশীল মেয়ে ও তার বান্ধুবীরা মিলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য টাকা উঠাইতেছে তাদের কলেজের গেইটের সামনে দাড়িয়ে আর কলেজের গেইটের সামনে দিয়ে গেছে ব্যস্ত একটা রাস্তা । হঠাৎ এক লোক এসে তাদেরকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে চলে গেল, টাকা পেয়ে সকলেই অবাক আর ভাবতে লাগল কি অদ্ভুত ব্যাপার, মানুষে দিতেছে ৫ টাকা, ১০ টাকা বা জোরে গেলে ১০০ টাকা কিন্তু এই অপরিচিত লোকটি ৫০০০ টাকা দিল ।
যাই হোক তারপর তারা যে টাকা উঠিয়েছিল তা দিয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করতে পারে নাই কারন দূর্ভাগ্য বশত কোন একজন টাকাটা নিয়ে উদাও হয়ে গেলে ।

যে লোক ৫০০০ টাকা দিয়েছিল সেই লোকটি কিছু দিন ধরে মেয়েটির খোজ খবর নিল, তারপর একদিন ফোনে তাদের কথাও হল । বলা বাহুল্য তারা একে অপরকে এর আগে কখনো দেখেইনি চিনা তো দূরের কথা । কিছু দিন পর ছেলেটি জানতে পারল মেয়েটি একটি গরীব ঘরের মেয়ে । ইতিমধ্যে ছেলেটি মেয়েটির জন্য বেশকিছু জামা কাপড় পাঠিয়েছে যা ছিল অনেক দামী । এই প্রথম মেয়েটি এত উন্নত মানে পোশাক পেল । এমন উপহার দেখে তার বান্ধুবীরা তো খুব ঈর্ষান্বিত হল এবং বলতে লাগল এটা কি করে সম্ভব ?? এরপর যখন মেয়েটি কলেজে ছিল তার পাকে হঠাৎ একদিন ছেলেটি তার নিজস্ব ১টা পাজারো গাড়ি নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে হাজির । ছেলেটির এমন উপস্থিতি শুধু মেয়েটির পরিবারকে নয়, আশে পাশের অন্য মানুষদেরকেও তাক লাগিয়েছিল । ছেলেটি আসার সময় ঐ মেয়ের পরিবারের সবার জন্য কাপড় চোপড় সহ আরো অনেক কিছু এনেছিল । ছেলেটি এত বড় ধনী হয়েও কোন সংকোচ না করে কিছুহ্মন মেয়েটির বাড়িতে থেকে দূপরের খানা খেয়ে ছেলেটি চলে গেল ।

মেয়েটি যখন বাড়ি আসল তখন ঘটনাটি শুনে নিজেও অবাক হল আর ভাবতে লাগল, এটা কি করে সম্ভব ?? ছেলেটির পরিবার যখন এই বিষয়ে জানতে পেরেছে তখন অনেকেই অনেক কিছু বলা বলি শুরু করল, তা শুনে ছেলেটি স্পষ্ট করে সবাইকে জানিয়ে দিল, এই বিষয়ে এরপর থেকে যেন কারো মুখ থেকে কোন কিছু না শুনি । বাড়িতে ফিরে এসে মেয়েটিকে যখন ছেলেটি ফোন দিল তখন মেয়েটি বলল আচ্ছা কেন আপনি এমন করে হঠাৎ গরীবের বাড়িতে হাজির ?? ছেলেটি বলল এটাতো তুমি আশা করনি, তাই দেখিয়ে দিলাম । এরপর মেয়েটির মনে হাজারো প্রশ্ন উকিঁ দিতেছে । এর মাঝে ছেলেটি মেয়েটিকে অনেক ধরনের অনেক পরামর্শ দিল যার মধ্যে কোন একটিও মেয়েটি ঠিকমত পালন করেনি । এমন আচরনে ছেলেটি খুব মর্মাহত হলো । সেই যাই হোক এর কিছুদিনের মধ্যে ছেলেটি বেশকিছু টাকা দিয়ে মেয়েটির পরিবারের জন্য একটা নতুন ঘর বানিয়ে দিল কারন আগের ঘরটিতে মানুষ বসবাসের জন্য উপযোগী ছিল না । এরই মাঝে ছেলেটির সাথে অনেক সময় মনমালিন্য হত মেয়েটির কারন ছেলেটির কোন কথা মেয়েটি শুনত না এরপরেও মেয়েটি কিন্তু মুখে বলত যে , সেই ছেলেটিকে খুব পছন্দ করে । এমন কথা শুনে ছেলেটি প্রায় বিরক্তিবোধ করত কারন মেয়েটি মুখে যা বলে তার আংশিকও মেয়েটির কাজ কর্মে দেখা যায় না । এত কিছুর পরও ছেলেটি মেয়েটির পরিবারের জন্য যখন যা করা দরকার করে যাচ্ছে । ছেলেটির প্রতি মেয়েটির এমন অবহেলা যখন মেয়েটির পরিবার জানতে পারল, তখন তারা সবাই মেয়েটিকে বলতে লাগল তুই আসলে পাগল নাকি, যে ছেলেটি তোর কারনে আমাদের জন্যও এত কিছু করতেছে, কিভাবে তুমি তাকে এমন অবহেলা কর ??মেয়েটির অবহেলা আর ছেলেটির বিষন্নতার মধ্যদিয়ে কেটে গেল প্রায় দুটি বছর । এমনি একদিন মেয়েটি পরিবারসহ ছেলেটির বাড়িতে হাজির হলো । এই প্রথম ছেলেটি মেয়েটিকে সরাসরি দেখতে পেল । মেয়েটির আগমনে কথা শুনে ছেলেটির পরিবারের অনেকেই মেয়েটিকে দেখতে আসল. তবে মেয়েটিকে নিয়ে কে কি মন্তব্য করেছে তা মেয়েটি কিছুই জানেনি । মেয়েটি বাড়ি ফেরার সময় ছেলেটি বেশ কয়েক হাজার টাকা মেয়েটির হাতে ধরিয়ে দিল । এরপরেও মেয়েটির কাছ থেকে ছেলেটি তার মনের মত কোন আচার আচরন বা ব্যবহার পায়নি যাতে প্রায় সময় ছেলেটি খুব হতাশ হত । এর কিছুদিন পর মেয়েটির এক ভাইয়ের বিয়ের দিন ঠিক হলো ,এই সময়ে ছেলেটি কিছু দিনের জন্য বাহিরে গেল । ওখান থেকেই যখন মেয়েটির ভাইয়ের বিয়ের কথা শুনল তখন ছেলেটি বেশ কিছু টাকা পাঠিয়ে দিল । ইচ্ছা করলে মেয়েটির পরিবার ঐ ছেলের জন্য অপেহ্মা করে পরেও বিয়েটা করাতে পারত, কিন্তু তারা তা করেনি এমনকি মেয়েটিরও ইচ্ছা ছিল না যে, ছেলেটি বিয়েতে উপস্থিত থাকুক যদিও ছেলেটির টাকাতেই বিয়ে হচ্ছে । এই বিষয়ে ছেলেটি খুব কষ্ট পেয়েছে কারন ছেলেটির অনেক স্বপ্ন ছিল যে বিয়েতে সেই অনেক ধুমধাম করে অনুষ্ঠান করবে । এরপরেও ছেলেটি প্রায় সময় মেয়েটির পরিবারে জন্য অনেক কিছু পাঠাত । মেয়েটি অনেক আগ থেকেই মনে মনে ভাবতে লাগল যে, ছেলেটি কেন তাকে এত বেশি পছন্দ করে, তাহলে কি ছেলেটি তাকে বিয়ে করবে, যার জন্যই ছেলেটি মেয়েটির জন্য এত পাগল অথচ এতকিছু মাঝেও ভুলে ডাবেন না যে, ছেলেটি মাত্র একবার মেয়েটিকে দেখেছে । না, না , না মেয়েটির ভাবনা মোটেও সত্য নয় কারন ছেলেটি ছিল বিবাহিত । এটার জানার পর মেয়েটি ফোনের মাধ্যমে ছেলেটিকে প্রশ্ন করল, আপনি আমার জন্য এত কিছু করলেন কেন ?? ছেলেটি বলল তোমার থেকে কোন কিছুর পাওয়ার আশায় আমি কিছু করিনি, যদি করতাম তাহলে তোমার এত অবহেলার পরও আমি তোমার খবর রাখতাম না । আমি তোমাকে ভালবাসি পছন্দ করি এটা সত্য কারন তুমি আমার চোখে অনেক ধার্মীক , আল্লাহ আমাকে সামর্থ দিয়েছে তাই তোমার জন্য এতটুকু করতে পেরেছি । তোমাকে ভালবাসি বলেই যাতে তুমি সুখে থাকতে পার, তার জন্যই আমার এই সামান্য চেষ্টা আর যেইদিন শুনব তুমি খুব সুখে আছো সেইদিন আমি মনে করব আমি সফল হয়েছি । ভালবাসা মানেই কাছে পাওয়া নয় , ভালবাসার মানুষটির মুখে হাসি ফুটানোই হচ্ছে ভালবাসার সার্থকতা । এরপর মেয়েটি বলল দেখুন আপনি সব সময় ভাবতেন আমি আপনাকে অবহেলা করি আসলে তা ঠিক নয় কারন কেউ যদি আমার কোন উপকার করে তাহলে আমি তার এমন কোন সুনাম করি না বা তার সাথে এমন ভাল ব্যবহার করি না যাতে সেই মনে করে আমি উপকার পেয়েই এমন করতেছি । আপনি আমার যা উপকার করেছেন তা কখনো ভুলার মত নয় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তা মনে থাকবে তা আপনার বিশ্বাস হোক বা না হোক । আর বিশ্বাস না হবারও কথা কারন আমার পেছনের আচার আচরনে আপনি খুব কষ্ট পেয়েছেন তারপরেও আমি বলব এটাই সত্য, এটাই বাস্তব । আর আমার ভাইয়ের বিয়েতে আপনি থাকতে না পেরে খুব মর্মাহত হয়েছেন এটা আমি জানি, তবে কেন আমি আপনার উপস্থিতি চাই নি, তাকি জানেন ?? আপনার স্ট্যাটাস আর আমার স্ট্যাটাসের মধ্যে অনেক দূরত্ব , আপনি হয়ত সব কিছুকে সহজ করে নিতে পারেন কারন আপনি উদার মনের কিন্তু আপনার পরিবারতো এমন নাও হতে পারে । আপনার পরিবার সহ যদি বিয়েতে উপস্থিত হতেন তাহলে আমি নিশ্চিত আপনি অপমান বোধ করতেন এবং আমিও । আপনি আমার জন্য কিনা করেছেন কিন্তু বিনিময়ে আমি কখনো আপনার কোন উপকারে আসতে পারিনি তবে হা আমি সব সময় আপনার জন্য দোয়া করি আর যদি কখনো সুযোগ হয় তাহলে বুঝিয়ে দিব আমি কি অবহেলা করতাম নাকি ............. । এরপর এক সময়ে খুব ধুমধাম করে অন্য একটি ছেলের সাথে মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেল বিদায় অনুষ্ঠানে ছেলেটি বলল তোমার সাথে আমার আর যোগাযোগ হবে না আর হা তবে তোমার সন্তান হলে অবশ্যই আমাকে জানাবে । কথাটি শুনে মেয়েটি খুব কষ্ট পেল । ( প্রিয় পাঠক এটাকে আপনি কি বলবেন ?? )
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×