(ছবিঃ হারিয়ে যাওয়া বুড়িগঙ্গার গাঁ ঘেঁষে সাত গম্বুজ মসজিদ।)
বুড়িগঙ্গার পানি তখন বড় বড় ঢেউ খেলত। বুক দিয়ে ধীরে ধীরে বয়ে যেত কতশত লঞ্চ-জাহাজ আর নৌকা। এক কূল থেকে আরেক কূলে দেখা যেত শুধুই জল। ভরা যৌবনা এই নদীটির তীর ঘেঁষেই উঠে দাঁড়িয়েছিল একটি মসজিদ। মানুষজন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসে নামাজ আদায় করে ডুব দিত বুড়িগঙ্গার অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে। বলছিলাম ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত সাত গম্বুজ মসজিদের কথা (এই মসজিদের নামেই সাতমসজিদ রোড নামকরণ হয়েছে)।
(ছবি কৃতজ্ঞতাঃ স্যার চার্লস ডি'ওইলি)
(ছবিঃ সংগৃহীত)
তবে সেইদিন গত হয়েছে বহু কাল আগেই। আনুমানিক ১৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে শায়েস্তা খাঁর পুত্র উমিদ খাঁর নির্মিত এই মসজিদটির আশেপাশে এখন নদীর কোন অস্তিত্ব নেই। আছে বড় বড় দালানকোঠা আর শহরের চিরচেনা ভিড়।
ঢাকার ঐতিহ্যবাহী যে কয়টি মসজিদ আমি দেখেছি তার মধ্যে এটি অন্যতম মসজিদ যার এখন পর্যন্ত তেমন কোন বিকৃত হয়নি। মসজিদটির মূল গম্বুজ মুলত তিনটি এবং চার কোণায় রয়েছে আরও চারটি অনুগম্বুজ।
মসজিদটির এক পাশে রয়েছে ছোট গোরস্থান। সামনে রয়েছে বিশাল বাগান যা মসজিদটির সৌন্দর্যকে কিঞ্চিৎ বৃদ্ধিই করেছে।
মসজিদটির পূর্ব পাশে (মূল রাস্তার বিপরীত দিকে) রয়েছে একটি মাজার। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ভাষায় বলা যায় ‘অজানা সমাধি’। তবে কথিত আছে এটি শায়েস্তা খাঁর মেয়ের সমাধি। অনেকে ‘বিবির মাজার’ বলেও জায়গাটিকে সম্বোধন করে থাকে।
অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা ঢাকার এই ঐতিহাসিক মসজিদটিকে অক্ষত দেখে বেশ ভালো অনুভব করেছিলাম। আশা রাখি ভবিষ্যতেও এটি এবং এরকম আরও সকল স্থাপনা যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের মধ্যেই থাকবে।
-২৭/১২/২০১৬ ইং, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৩