somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা ব্লগ দিবসে সকলের প্রতি সবিনয়ে অনুরোধ................................................

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনা নংঃ ১
বেশ কিছুদিন আগে আমাদের পাশ্ববর্তি গ্রামে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। গ্রামের অন্যতম বিত্তশালী ব্যক্তির একমাত্র ছেলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি! বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি হবার কারণে ভালো মন্দের বাছ-বিচার করার সক্ষমতা তার ছিল না। একদিন গ্রামের কিছু বদ প্রকৃতির ছেলে সেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি ছেলেটিকে একটি নির্জন জায়গায় ডেকে নিয়ে যায়! তারপর তারা তাকে ভুলভাল বুঝিয়ে গাজা খাওয়ায়! তারা ছেলেটিকে গাজা খাইয়ে মজা দেখতে চেয়েছিল! কিন্তু তাদের এই মজা দেখতে চাওয়াই ছেলেটার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়াল! গাজায় টান দেবার কারণে তার ‍বুকে মারাত্নক ব্যথা শুরু হয়! এক পর্যায়ে সে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফেলে রেখে অন্যান্যরা পালিয়ে যায়! গ্রামের আর এক লোক ছেলেটিকে মূমুর্ষ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তার বাড়িতে খবর পাঠায়! সেখান থেকে তাকে মিঠাপুকুর উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার বলে, সে হার্টএ্যাটাক করেছে! সেখান থেকে তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়! সেখানেও তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় পিজি হাসপাতালে পাঠানো হয়! আর পিজিতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারদিন পর মৃত্যুবরণ করে সেই ছেলেটি!

আজ নতুন করে ভাবতে হয়, আজকে যারা সুস্থ মানুষ! তারা সকলেই কি সুস্থ বুদ্ধির অধিকারী? নাকি সুস্থ মানুষের আড়ালে অসুস্থ বুদ্ধির কারার করছেন?

ঘটনা নংঃ২
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার এক প্রতিভাবান প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর নাম হুমায়ন কবির। বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। দেড় বছর বয়সে পোলিও রোগে আক্রান্ত হন তিনি। এর পর পায়ে কোনো শক্তি না থাকায় এখন হুইল চেয়ারই একমাত্র ভরসা তার।



রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ১২ নং মিলনপুর ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় তিনি। দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও কলেজ থেকে এইচএসসিতে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। পরে ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে মেধা তালিকার মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এমন কি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরও পরীক্ষার ফলাফলে কোনো ভাটা পড়েনি। সবসময় নিজেকে প্রথম শ্রেণীতে ধরে রেখেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময় প্রতিবন্ধি কোটা থাকার পর তিনি সেটা গ্রহণ করেননি । নিজের মেধা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। বর্তমানে তার একটাই লক্ষ্য বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করা।
লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য একটি বই লেখেন। এখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন কমন থাকায় বইটি নিয়ে ভালোই সাড়া পড়ে। এ পর্যন্ত মোট তিনবার তিনি বই বের করেন। অবসরে গল্প লেখেন হুমায়ন।
তিনি যে শুধু এখানেই তার প্রতিভাকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন তা নয়। সবচেয়ে পুলকিত হওয়ার বিষয়, তিনি একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী ক্রিকেট টিমের অলরাউন্ডার খেলোয়াড় তিনি। এছাড়াও তিনি নিজ এলাকায় দুর্গাপুর তরুণ স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তার এই পর্যন্ত আসার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন তার গর্বিত বাবা ফজলুল হক।

আজকে এই হুমায়ূনের বাবার মত সমাজের প্রত্যেকটা ব্যক্তিই যদি দায়িত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে তাহলে, হুমায়ূনের মত অন্যান্য প্রতিবন্ধিরাও দেশ গড়ায় সমান অংশিদার হতে পারবে! তারাও হতে পারে আমাদের সম্পদ! তাই আসুন, “বাংলা ব্লগ দিবসে সচেতন ব্লগাররা”আমাদের বিবেকটাকে জাগ্রত করি! প্রতিবন্ধিদের দিকে বাড়িয়ে দেই আমাদের সাহায্যপূর্ন হাত! তাদেরকে ভালোবাসি, আমাদের আপন ভাই কিংবা বোনের মত! তাদেরকে করুনা নয় বরঞ্জ শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার সঙ্গে তাদের প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করি!
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২৯
১৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×