এই খালি যাবে ঢাকা মেডিকেল? এই রিকশা যাবে নীলক্ষেত??? এই মামা যাবে চানখারপুল???শাহবাগ যাবা??? এই সকল নিত্য প্রয়োজনীয় জায়গা গুলোর মধ্যমণি প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।প্রতিষ্ঠত হওয়ার সময় এর আয়তন ছিল ৬৫০ একর। আর বর্তমানে ২৫৪ একর আছে খাতা-কলমে।বাস্তবতা এর চেয়ে অনেক কম । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ ভোমরা শিক্ষার্থীরা এর মধ্যে কতটুকু ব্যবহার করে তার হিসেব করা যাক।
১। শুরুতেই হাইকোর্ট থেকে ঢাকা মেডিকেল যাওয়ার রাস্তাটির কথা। সারা বাংলাদেশ যদি ৪কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্য সীমার নীচে থাকে তাহলে এই রাস্তায় চোখ বুলালেই পাওয়া যাবে কয়েক হাজার। কেউবা ফুল বিক্রির নামে ,কেউ ভিক্ষা বৃত্তি,কেউ পাবলিক টয়লেট হিসেবে ব্যবহার করে এই পথটি,হাসপাতালের মত সারি সারি শোয়ার জন্য ব্যবহার করা তো আছেই।দোয়েল চত্বর থেকে সামনে এগিয়ে মোকারম ভবনের সামনে যাওয়ার পথটি রিকশাওয়ালা,বাসের ড্রাইভার (বিভিন্ন জেলা থেকে আন্দোলনের নামে আসা বাসের) ও টোকাইদের অভয়াশ্রম।এটিকে তারা ব্যবহার করে বিশ্রাম,প্রস্রাব,পায়খানা ও আড্ডা দেয়ার জায়গা হিসেবে । কি সুন্দর দৃশ্য এখানে টোকাইদের নানা রকম জৈবিক চাহিদাও দিনে দুপুরে মেটাতে দেখা যায় কখনও কখনও। এই রাস্তার পাশ ব্যবহার করা আর বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানো উভয় সংকটের মত।
২।দোয়েল চত্বর থেকে টি,এস,সি
এটার বর্তমান দায়িত্ব আছেন টোকাইদের দলের মহিলা সদস্যরা ।তাদের বিচরণ থেকে সব সময়।এরা আড্ডা দেয়া ও ব্যক্তিগত নানা কাজে
ব্যবহার করেন যাতায়াতের এই অতি প্রয়োজনীয় রাস্তাটি। এছাড়া বিভিন্ন মানুষের মলমূত্র ত্যাগের জন্য এটা মনে হয় সবার কাছে পছন্দের উপরের সারিতে ,তাই এখানে এলেই প্রস্রাব-পায়খানা চাপে,আর কি নিদর্শন রেখে যান। এছাড়া পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট এর প্রবেশ মুখে বসে রিকশা-ভ্যান চালক ও অনাথদের ঘন্টার পর ঘন্টা রেস্ট নেয়া,বসে সময় কাটানো। একটু এগুলেই পরমাণু শক্তি কমিশনের গেট এর চার পাশে গোটা পঞ্চাশেক মানুষ আপনি পাবেন,যাদের চাল-চলন ও কথা বার্তা এতটাই বেফাস যে মনে হয় জায়গাটি তারা ভাড়া নিয়েছেন।
৩।এবার দোয়েল চত্বর থেকে চানখারপুল
এখান দিয়ে হাটলে বোঝার উপায় নেই যে এটা কার্জন হলের মত এত ঐতিহাসিক জায়গা। এখান দিয়ে হাটলে আপনি দেখতে পাবেন কোন রিকশাওয়ালার রিকশা নষ্ট হয়েছে তা মেরামতের ব্যবস্থা,দেখবেন রিকশাওয়ালাদের খারাবের ব্যবস্তা,আপনি লক্ষ্য করবেন রাস্তার পশ্চিম পাশটি ব্যবহৃত হচ্ছে পাবলিক টয়লেট হিসেবে । একটু এগিয়ে আসলে শহীদুল্লাহ হল এর দেয়াল ঘেঁষে হাটলে দেখবেন দিনে দুপুরে প্যাথেডিন নিচ্ছে, আর নানা রকম নেশা জাতীয় দ্রব্য ত আছেই । টোকাইদের প্রিয়জন(গার্লফ্রেন্ড হতে পারে বা বঊ) এর সাথে একান্ত সময় কাটাতে মন চাইলেই তাদের প্রথম পছন্দ মনে হয় দোয়েল চত্বর থেকে চানখারপুল এই রাস্তা।
৪। শহীদুল্লাহ হলের মোড় থেকে একুশে হল
কারও যদি সস্তা ড্রাগ নিতে ইচ্ছা হয় সে এখানে আসতে পারেন।এখানে যত্নসহ প্যাথেডিন দেয়ার কলাকৌশল শিক্ষা দেন অভিজ্ঞ টোকাইদের সর্দার জনৈ্ক সজকদকদলফ। আর রিকশা পার্কিং, টোকাই বিশ্রাম এর ব্যবস্তা করেন স্বয়ং টোকাই সম্রাট এর নিজস্ব তত্ত্বাবধানে।
৫।শহীদ মিনার থেকে ট,এস,সি /শহীদ মিনার থেকে পলাশী
এই রাস্তার কথা কি বলব এর ৮৫ ভাগ এখন টোকাই ,রিকশাওয়ালাদের দখলে
৬।জগ্ননাথ হলের পূর্ব গেট থেকে টি,এস,সি মোড়
এই রাস্তা অনেকটা পরিত্যক্ত ,পায়খানা এখানে সেখানে এটা নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা।এখানে আবার সুন্দর দৃশ্য দেখা যায় সারি সারি রিকশা
তার উপর বসে আলিশান আড্ডা,কিছুক্ষণ পর পর টয়লেট ব্যবহার।
৭। বাংলাদেশে ২ কোটি ভিক্ষুক থাকলে তার দেড়কোটি মনে হয় এই ক্যাম্পাসে।
৮।ফুলার রোড থেকে ভিসি চত্বর
এই রাস্তার কথা কি বলব এখানে বড় বড় নামি দামি বাইক চালক,সিগারেটবাজদের আস্তানা।
আমরা জানি যে একটি ভালো জেনারেশন পেতে হলে জেনারেশনটিকে বেড়ে উঠার পরিপূর্ণ পরিবেশ দিয়ে হবে। এই যদি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যকার রাস্তাঘাটের অবস্থা তাহলে কি বলব আমরা খারাপ আছি ,না না তা হবে কেন আমরা ত ভালোই আছি । আর কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। পারলে কিছু করেন....