হরিণা যুব প্রশিক্ষন শিবির
৩.৮.১৯৭১
স্নেহের ছোট ভাই বাবুল,
আমার স্নেহাশিস ও দোয়া নিও। আব্বাকে আমার সালাম ও কদমবুসি বলিয়ো। আমি তোমাদেরকে না বলিয়া ভারত চলিয়া আসিয়াছি। হরিণা ক্যাম্পে আছি, আমার জন্য কোনো চিন্তা করিও না। আমি স্বপন চৌধুরীর অধীনে আছি। রুপেন চৌধুরী হরিণা ক্যাম্পের যুব প্রশিক্ষণ শিবিরের দায়িত্বে আছে। আমাকে বেশ স্নেহ করে। আমার কাজ শুধু ক্যাম্পের ভিতর। আমার জন্য কোনো চিন্তা করিয়ো না। এইখানে আসিয়া বহু বড় বড় ছত্রনেতার সহিত পরিচয় হইয়াছে। রব ভাই, রাজ্জাক ভাই, তোফায়েল ভাই, মাখন ভাই, ইনু ভাই ও আমাদের দক্ষিণ পাড়ার মনির আহামদ, এ সবাইয়ের সহিত আমার দেখা হইয়াছে, সবাই ভাল আছে। যুদ্ধ যখন শুরু হইয়াছে, খুব সবধানে থাকিবা, না হয় তোমরা নানার বাড়িতে চলিয়া যাও। না হয় রামগড় দিয়া ভারত চলিয়া আসো। দেশ স্বাধীন করার জন্য দেশের বহু লোকজন এদেশে আসিয়াছে, যুদ্ধ করিতেছে, তোমরা শুধু দোয়া করিবে দেশ যেন তাড়াতাড়ি স্বধীন হয়। মৌলানা আব্দুল্লা মোজাহিদ বাহিনীর প্রধান হইয়াছে। সেই আমাদের গরু নিয়া গিয়াছে বলিয়া শুনিয়াছি, চিন্তা করিও না। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেন পরাজয় বরণ করে। রাজকাররা ধান লইয়া গিয়াছে তাহাও শুনিয়াছি, আদিনাথ কাকা সব ঘটনা বলিয়াছে। শুনিয়া আমার খুবই খারাপ লাগিতেছে। আমার জন্য তোমরা কোনো চিন্তা করিয়ো না। জানিতে পারিলাম মামা আব্দুর রাজ্জাক সাহেব পাকবাহিনীর সাথে যুদ্ধ অবস্থায় ব্রহ্মনবাড়িয়া যুদ্ধে শহীদ হইয়াছে। মাকে এই কথা বলিও না। যদি দেশ স্বাধীন হয় তাহা হলে তোমাদের সাথে দেখা হইবে। যুদ্ধে যদি আমি মারাও যাই, কোনো চিন্তা করিয়ো না। যদি আমার রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়, দেশের মানুষ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পায়, তাহা হইলে আমার আত্না শান্তি পাইবে। আমার জন্য সবাই দোয়া করিবা।
খোদা হাফেজ
তোমার বড় ভাই
মোহা. আইয়ুব খান
মুক্তিবাহিনীর সদস্য
================================
চিঠি লেখকঃ মো. আইয়ুব খান
চিঠি প্রাপকঃ বাবুল
চিঠিটি পাঠিয়েছেনঃ জনাব বাবুল,পোঃ ডেমশা, থানাঃ সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।
================================
একাত্তরের চিঠি সংকলনের টেক্স্ট কন্টেন্ট রিভার্সিং: একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




