২৯/১১/৭১
শ্রদ্ধাবরেযু,
ভাই, সালাম জেনো। কুচবিহার থেকে একটা চিঠি দিয়েছি গত সপ্তাহে বা তার কিছু আগে। পেলে কি না জানাবে। তোমার বা আমার চিঠি প্রায়শই হারাচ্ছে। কিছুদিন আগে কুচবিহার থেকে ফিরনাম। শত্রুদের কাছ থেকে সদ্য দখল করে নেওয়া বিস্তীর্ণ অঞ্চল দেখে এলাম। দশটা থানা আমাদের দখলে। অসম্ভব সুন্দর ডিফেন্স। জীবনযাত্রা বেশ নরমাল। ভরতীয় সৈন্য দ্ধিতীয় ডিফেন্সে আছে-- চিন্তার বিশেষ কিছু নেই বলে আমার বিশ্বাস। আমাদের সৈন্য বা মিলিটারি অফিসাররা নিজেদের স্বাতন্ত্র্য রাখতে যথেষ্ঠ সমর্থ। ডিসকারেজ হয়ো না। পাকিস্তানে ফিরবার সামান্যতম বাসনাও বাদ দাও। ঢাকার অবস্থা আবার দিন দিন খারাপ হতে চলেছে। খবরও বিশেষ পাওয়া যাচ্ছে না। চিঠিপত্র লিখো মাঝে মাঝে।
কুচবিহারে বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছে। কয়েক দিন গেছলাম ভাইয়ের ক্যাম্পে। ওখানে সেক্টর অফিসে আছেন। কাজ করছেন– ফ্রন্টে যেতে হয় না। কাজেই তাঁকেও কাজেই থাকতে আমি বলেছি। চিনু একেবারে ফ্রন্টে আছে– থেকে ৬/৭ মাইল দূরে তাদের বেস্। ওর এক কমরেডের সাথে দেখা হয়েছে–ওরা ভালো আছে–গ্রামাঞ্চলে ওরা দেবতার মতো পূজ্য বলে শুনেছি। আমি আগামীকাল আবার কুচবিহার যাচ্ছি–কলকাতায় থাকছি না, আর কাজ ওদিকেই হবে বোধ হয়। চিঠি কুচবিহারে দিও। ঠিকানা, প্রযত্নে: তাইবুর রহমান, ইনচার্জ, বাংলাদেশ যুব শিবির, সুভাষ পল্লী, কুচবিহার, উত্তরবঙ্গ, ভারত।
মুশতাক ইলাহী।
=============================================
চিঠি লেখকঃ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মুশতাক এলাহী। তাঁর পিতার নামঃ খন্দকার দাদ এলাহী, ঠিকানাঃ ধাপ, মেডিকেল মোড়, রংপুর।
চিঠি প্রাপকঃ ভাই কে. মাহমুদ এলাহী।
চিঠিটি পাঠিয়েছেনঃ ড. কে মাহমুদ এলাহী। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ, ঢাকা। তিনি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মুশতাক এলাহীর ভাই।
=============================================
চিঠি সংকলনের টেক্স্ট কন্টেন্ট প্রকল্পের অংশ হিসাবে প্রকাশিত

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




