কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফিস ছিলো সন্ধ্যা ৭টা থেকে। ইফতারির পর পরই শুরু করতে হবে অফিসের কাজ।
স্বভাবতই বাসা থেকে বের হবার সময় বাবা- মা'এর প্রশ্ন এখন ইফতারির টাইমে কেন অফিস নিলি? কি করবো অফিস তো আর আমার সময় দেখে আশে নাহ, সে ঠিক হয় নিয়োগকারীর ইচ্ছা অনুযায়ী।
অফিসে গেলাম ইফতারের কিছু আগেই। গিয় দেখি সবাই ইফতারি নিয়ে বসে আছে যে যার টেবিলে। যেই ছেলেটা সবার জন্য মুড়ি মাখা নিয়ে আশে সেও সবাইকে তা দিয়ে চলে গেছে। আমার জন্য কিছুই নাই। ইফতারির সাথে একটা দিনার বক্স দেয় কিন্তু সেটাও নাই। পরে এক বড় ভাইকে কথাটা বলার পরে উনি আমার জন্য দিনার বক্স এর ব্যবস্থা করে দিলেন। সবার সামনে দেখি শরবত এর গ্লাস, আর আমার সামনে জুসের প্যাকেট। কিন্তু এতে তেমন একটা খারাপ লাগে নি। জুস দিয়েই রোজা ভাংলাম। কিন্তু তার পরেই কেমন যেন খারাপ লাগা শুরু করতে লাগলো।
আমার সামনে মুড়ি মাখানো নাই। কেন নাই? বাসায় থাকলে তো এখন নিজেই তা মাখাতাম, সবার সাথে নিজেও খেতাম। হ্যা পাশের জনের কাছে খুঁজলে যে তিনি শেয়ার করবেন না তা কিন্তু নয়, আবার নিজেরও কখনও এই মুড়ি মাখা নিয়ে এমন খারাপ লাগবে ভাবি নাই। আমার আশে পাশের দু এক জনেরও দেখলাম আমার মতই অবস্থা। থাক অকারণে তাদের আর জ্বালাতন করতে মন চাইছিলো নাহ। কিন্তু নামায পড়তে যাবার সময়, বা সেখান থেকে ফেরার সময়ও কেন জানি বার বার মনে হচ্ছিলো আমার সাথে আজ কেনো এমন হলো? হ্যাঁ অনেক দেশেই আমাদের মতন মিড়ি মাখানো খাওয়া হয় না জানি। কিন্তু আমাদের এখানে হয়ত ছোট বেলা থেকে দেখে আশার কারণেই সেদিন এমন খারাপ লাগায় মন ছেয়ে গিয়েছিলো। সারা সন্ধ্যা মনে কেমন জানি খুঁতখুঁত করতে লাগলো।
জানি নাহ কেনো সেই খারাপ লাগা তৈরি হয়েছিলো। তবে তা ছিলো সাময়িক। পরে আবার এটাও ভেবেছিলাম অনেকেইতো খাবারও পায় না......।। আমার কত সৌভাগ্য আমি খাবার পেয়েছি। হয়তো তা বাসার সবার সাথে বসে খাওয়া যাচ্ছে নাহ ঠিকই কিন্তু আমি তাদের থেকে সৌভাগ্যবান। নিজেকে সৌভাগ্যবান ভাবতে পেরে আবার আস্তে আস্তে মন ভালো হতে থাকে...... ...... ...... কিন্তু আবার তার কিছু পরেই মনে হল আসলেই কি আজ আমি ইফতারি করেছি?
মুড়ি মাখা খোরের অপূর্ণ ইফতেরর স্বাদ সেদিনের মতন থেকেই গিয়েছিলো। কিন্তু মনে হলো আমার মতন যেন অন্য কারো এমন না হয়।