somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Paulo Coelho এর adultery (পরকীয়া)

০৯ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(১৯)

না,শুধু গতকালের শরীর খেলার সাথীর সঙ্গটা একটু এড়াতে চাচ্ছি।মনে হলো,এ ঘরের সকলেই জানে,আমাদের শরীর খেলার গল্প,কপালে কোথাও যেন বড় বড় করে লেখা আছে, ‘পরকীয়া প্রেমে মত্ত’।

একটু হেসে বললাম,এ ধরনের অনুষ্ঠানে যাওয়ার বয়স আর নাই,কথাটা আমার স্বামীর খুব একটা পচ্ছন্দ হয়নি।ভাবছিলাম,বাসায় বরং ছেলেমেয়েদের সাথে খেলা করলেই ভাল হতো,
বেবী সিটারের সাথে ওরা হয়তো মুখ গোমরা করে বসে আছে।এমনিতে একটু মদ খেলেই আমি টলমল হয়ে পড়ি,তারপর লোকজনদের সাথে অযথার এটা ওটা কথা বলে আরও বেসামাল হয়ে ছিলাম।তবুও আগ্রহ দেখাতে হবে,মুখে কটা খাবার দিয়ে আলাপ আলোচনায় যোগ দিতে হবে,না হলে কি আর উপরের সিঁড়ি ওঠা যায়।এটাতো জানাই,শহরের গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের কেউ না কেউ অনুষ্ঠানে আসেই,আর অনুষ্ঠানে যাওয়া অনেকটা বাধ্যতামূলক,দেখা পরিচয় হয়তো নতুন একটা আঙ্গিনার স্বাদ।

‘তাহলে চল কেটে পড়ি,না হয়,সামাজিক,কাজের দায়িত্ব পালন করা শেষ।চলো,একটা মুভি রেন্ট করে রাতটা একসাথে কাটা্‌ই বাইরে কোথাও’।
না,আর কিছুক্ষন থেকে যাই,জেকব আর মাদাম কোনিগ আসছে।খুবই খারাপ দেখাবে, অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে হঠাৎ আমরা যদি চলে যাই।ডারিয়ুস তার অতিথিদের ষ্টেজে ডেকে আনছিল এক এক করে,তারা অবশ্য তাদের অভিজ্ঞতার দু একটা কথা বলার সূযোগ ছাড়েনি।একঘেয়িমি কথাবার্তায় ঝিমিয়ে যাচ্ছিলাম।একা যারা ছিল এ ফাঁকে অনেকেই সঙ্গী জোগাড় করার সূযোগে বেশ ব্যাস্ত হয়ে গেছে তখন।মেয়েরা আড়চোখে এঁকে অন্যের দিকে তাকাচ্ছিল,কার কেমন পোষাক,কে কেমন মেকআপ করে আছে,স্বামীর সাথে না একা।
শহরের দিকে তাকিয়ে দেখছিলাম,কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম কথায় কথায়,সময় হলে
চলে যাব।
‘তুমি,কি ব্যাপার এবার তোমার পালা’!
আমি?
‘তোমার নাম ধরে ডাকছে,শুনতে পাচ্ছ না’!
‘ডারিয়ুস যে আমাকে ষ্টেজে ডাকছিল,আমি খেয়াল করিনি।মনে পড়লো,সুইজারল্যান্ডের গতবারের প্রেসিডেণ্টের সাথে ডারিয়ুসের শোতে মানবিধাকার নিয়ে আলাপ আলোচনায় আমিও ছিলাম।আমি তো তেমন কো্ন বিশেষ কেউ একজন না,আমাকে তেমন গুরুত্ব দেয়ার কথা না,বেশ অপ্রস্তত হয়ে গেছি,তা ছাড়া কোন কিছু বলার প্রস্ততিও ছিল না আমার।

ডারিয়ুস আমার দিকে তাকিয়ে ছিল,আশেপাশের লোকজনও আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছিল।ধীরে ধীরে হেঁটে যাচ্ছিলাম ডারিয়ুসের দিকে,কিছুটা আত্মস্থ হয়ে গেছি তখন,তা ছাড়া মনটাও কিছুটা খুশী মারিয়ানকে ডাকেনি,জেকবকেও ডাকেনি ষ্টেজে,কেন না রাজনীতির চর্বিত চর্বনে সন্ধ্যাটাকে অসহনীয় করার ইচ্ছা ছিল না,ডারিয়ুসের।

সিড়িটা সাজানো ষ্টেজের মত করে,ষ্টেজে ডারিয়ুসের সাথে হাত মেলানোর পর,তার টেলেভিসন শোতে আমার নীরস উপস্থিতির গল্পটা বললাম।চোখের স্রোতে একা আসা পুরুষেরা খুঁজছিল মেয়েদের আর মেয়েরা দেখে যাচ্ছিল অন্যান্য মেয়েদের।যারা ষ্টেজের আশেপাশে ছিল তারা ভাব দেখাচ্ছিল,আমার কথাগুলো যেন খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছে।

কথার মাঝে খেয়াল করলাম,জেকব আর মারিয়ান একপাশে আমার স্বামীর সাথে কিছু একটা বলছে।মিনিট দুয়েকের বেশী হয়নি,তার মধ্যেই,ওয়েটাররা গ্লাস,খাবার নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল আর লোকজনও ষ্টেজ ছেড়ে অন্য দিকে দেখছিল।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে সরে গেলাম,হাততালি দিল অনেকেই আর ডারিয়ুস,গালে একটা চুমু দিয়ে ধন্যবাদ জানালো।ভিড় ছেড়ে স্বামীর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম,তবে মাঝে মাঝেই লোকজন অযথার বলা,না বলায় ধন্যবাদ দিয়ে অস্থির করছিল আমাকে।অনেকে ওঝাদের লেখাটা নিয়ে মন্তব্য করলো,কজন আবার নিজেদের,‘ আত্মিক যোগাযোগের’,কথা বলতে ভোলেনি।মিনিট দশেক লাগলো স্বামীর কাছে পৌঁছাতে,জেকব আর মাদাম কোনিগ তখন আমার উপস্থাপনায় পঞ্চমুখ আর ফিরে যাওয়ার কথা বলতেই,স্বামী বললো ‘মাদাম কোনিগ তাদের সাথে রাতের খাবার খাওয়ার জন্যে খুবই অনুরোধ করছে’।

‘রাতের খাবার তো কারও হয়নি,তাই একসাথে খেলে খুব একটা খারাপ হবে না।গল্প গুজব হবে আর সাথে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া’,মাদাম কোনিগ বললো।মেকী হাসি মুখে জেকব বলির পাঁঠার মত দাঁড়িয়ে ছিল।একগাদা অজুহাত ছিল আমার,তবে কি দরকার?আমার দেখার ইচ্ছা ছিল,খাবারের আসরের নাটকটা।

বেশী বাদানুবাদ না করে মাদাম কোনিগের পচ্ছন্দের হোটেল, ‘লে আরমুরেসে’,গেলাম সবাই।বেশ নামকরা এক রেস্তোরা,বিদেশ থেকে আসা বন্ধুবান্ধব,পরিচিতদের সবাই নিয়ে যায় ওখানে খাবারের জন্যে,পনির দিয়ে তৈরী চমৎকার কটা খাবার আছে ওদের,ওয়েটাররাও বেশ কটা ভাষায় দক্ষ,শহরের মাঝখানে…তবে জেনেভায় লোকজনদের কাছে তেমন একটা বিশেষত্ব নেই।

আমরা পৌছালাম কোনিগদের কিছুক্ষন পরে,জেকব সিগারেটের অজুহাত দিয়ে বাইরের শীতে দাঁড়িয়ে ছিল,মারিয়ান ভেতরে কোথাও বসে ছিল।স্বামীকে বললাম ভেতরে মারিয়ানকে সঙ্গ দিতে আর আমি সিগারেটের জেকবের সাথে সঙ্গ দিই।স্বামী বললো,ওটা খুব বেমানান হবে,তার চেয়ে বরং আমি মাদাম কোনিগের কাছে যাই।বুঝিয়ে বললাম দুজন মেয়েমানুষের গল্প তেমন একটা জুতসই হবে না।

‘রাতের খাবারের ব্যাপারটায়,আমিও কম অবাক হইনি’,আমার স্বামী চলে যাওয়ার পরে জেকব বললো।
আমার ভাবটা ছিল,এটাতে বিচলিত হওয়ার তেমন কি আছে?তোমার কি নিজেকে খুব দোষী
মনে হচ্ছে?মনে হচ্ছে তোমার বিয়ের এখানেই শেষ(ঐ দূর্বোধ্য হারামী মহিলাটার সাথে)?
‘না,না,তেমন কিছু না।শুধু এটাই যে…’।

আমাদের আলাপ থেমে গেল মারিয়ানের উপস্থিতিতে,গালে নিয়মমত তিনটা চুমু দিয়ে,
জেকবকে অনেকটা আদেশ দিয়েই বললো সিগারেট ফেলে দিয়ে ভেতরে যাওয়ার জন্যে।
কথাটায় লুকানো একটা ইঙ্গিত ছিলঃআমি তোমাদের দুজনকে সন্দেহ করছি,না জানি তোমরা দুজনে কি সব মতলব আটছো।মনে রাখবে আমি তোমার চেয়ে অনেক বেশী বুদ্ধিমতি শুধু না, বেশি চালাকও।

খাবারের অর্ডার হলো,পনীর আর বিশেষ ধরনের চিপস।আমার স্বামী অবশ্য অর্ডার দিল,সসেজ আর রুটি।মদ ছিল সাথে।খাবারের অপেক্ষায় গল্প গুজবে একটা মদের বোতল শেষ হয়ে দ্বিতীয় বোতলটা আসলো।স্বামীকে বললাম,বেশী মদ না খেতে,না হলে গাড়ীটা আবার রেখে যেতে হবে।

খাবারের সাথে তিন নম্বর মদের বোতলটাও আসলো।অযথার কথাও থেমে থাকেনি,
জেকবের ইলেকশন জেতার পর নতুন সব দায়িত্বের কথা,আমার দু একটা লেখাও বাদ পড়েনি,বাড়ীঘরের দাম পড়তির দিকে,আর সুইস ব্যাঙ্কের গোপনীয়তার যুগটাও শেষ হয়ে আসছে।অনেকেই এখন সিংগাপুর না হয় দুবাই এর দিকে ছুটছে।

অপেক্ষা করে ছিলাম,কখন যে পাগল কুকুরটা ছুটে আসবে কামড় দিতে,কিন্ত না,কিছুই ঘটেনি যথারীতি শান্ত সুরে কেটে গেল সময়।আয়েসেই দু এক গ্লাস মদ খাচ্ছি,হঠাৎ দরজাটা খুলে গেল, ‘কদিন আগে আমরা বেশ কজন বন্ধু বসে বসে ঈর্ষা নিয়ে আলাপ আলোচনা করছিলাম’,মারিয়ান বললো, ‘ঈর্ষা সমন্ধে তোমার কি ধারণা’?

খাবারের টেবিলে এ ধরণের গল্প কোনদিন শুনিনি আর ঈর্ষা সমন্ধে আমার ধারণা!হারামী মেয়েটা চেষ্টা করছে,কি ভাবে মানুষকে বিচলিত করা যায়?মারিয়ান হয়তো সারাদিন এ চিন্তা নিয়েই ব্যাস্ত ছিল।‘ঈর্ষার উপস্থিতি অযথার একটা বোকামী’,এ সব বলে মারিয়ান হয়তো আমাকে কোনভাবে অস্থির করার চেষ্টা করছে।

‘ঈর্ষা কাকে বলে এটা আমার চেয়ে বেশী হয়তো কেউ জানে না,ছোটবেলা থেকেই ও ধরণের একটা পরিবেশে জন্ম আমার’,আমার স্বামী মন্তব্য করলো।
কি অদ্ভুত?নিজের ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে,কোন বোকা লোক ছাড়া অন্য কেউ বাইরের লোকের সাথে কথা বলে?

‘ছোটবেলা থেকেই আমার প্রতিজ্ঞা,ঈর্ষার কোন অবস্থান থাকবে না আমার জীবনে।খুব একটা সহজ না,কেননা আমরা সবাই চাই ভালবাসা,বিশ্বাসের বাঁধনে সবাইকে ধরে রাখতে।তবে শেষমেষ ঠিকই আয়ত্ব করতে কষ্ট হয়নি,আমার বৌ প্রায় প্রতিদিনই নতুন লোকজনের সাথে দেখা করে,ব্যাস্ত থাকে সাক্ষাৎকারে,অনেক সময় বাড়ী ফিরতে বেশ দেরী করে,কোন দিন আমার কাছ থেকে কোন কথাবার্তা,মুখঝামটা শোনেনি,বলা যায় সূযোগটাই হয়নি’।

এটা আমি কোনদিন শুনিনি,এটাও আমার জানা ছিল না ঈর্ষার সমুদ্রে কেটে গেছে আমার স্বামীর ছোটবেলা।হারামী মেয়েটা একটা ডাইনীর মত তার আলাপে মানুষকে টেনে নিতে পারেঃরাতের খাবার খাওয়া হবে,সিগারেট ফেলে দাও আর আমার আলোচনায় যোগ দাও।
আমার স্বামীর কথাগুলোর দুটো কারণ হতে পারে,হয়তো মারিয়ানের রাতের খাবারের দাওয়াত নিয়ে তার মনে কোন সন্দেহ আছে,আর রক্ষা করার চেষ্টা করছে আমাকে।
আরেকটা হতে পারে সে সবাইকে জানান দিতে চায় তার জীবনে আমার প্রাধান্যটা।আমি হাত বাড়িয়ে তার হাতটা ধরলাম,তার চেহারার এ দিকটা কোনদিন আমার চোখে পড়েনি।
‘আর হ্যা,লিন্ডা,তোমার ঈর্ষা হয় না স্বামীর ব্যাপার সেপারে’?
আমি?

না,অবশ্যই না,আমি ওকে সম্পূর্ন বিশ্বাস করি।আমি মনে করি ঈর্ষা এক ধরণের বাতিক,
একটা রোগ।লোকজন যাদের কোন আত্মবিশ্বাসের অভাব নাই,আত্মমর্যাদা বলে কোন কিছু নাই,তারাই ভাবে নিজেদের দাম্পত্য জীবন খুবই ঠুনকো।আর তুমি?
মারিয়ান তার নিজের ফাঁদে নিজেই আঁটকে গেছে।

‘ঐ আমি যা বললাম ওটা বোকামীর প্রকাশ’।
তুমি যা বললে সেটা কি ঠিক?এমন যদি হতো,তুমি জান,তোমার স্বামী পরকীয়া প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে তা হলে কি বলতে?
জেকবের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে তখন একেবারেই,মদের গেলাসে চুমুক না দিয়ে ও চুপচাপ বসে ছিল।

‘আমি জানি আমার স্বামী নানান ধরনের কথাবার্তা বলে প্রতিদিন,যারা তাদের নিজেদের একটা নীরস জীবনে অস্থির হয়ে আছে।তোমাদের পত্রিকায়ও নিশ্চয় ও ধরণের লোকজন আছে,যারা ঐ এক জুনিয়ার রির্পোটার হিসাবেই জীবনটা শেষ করবে…’।

‘তা আছে,একগাদা’,চিপস আর কিছুটা পনির নিয়ে,কোন আবেগ ছাড়াই উত্তর দিলাম। মারিয়ান আমার চোখের দিকে তাকিয়ে ছিল।
আমি জানি তুমি আমাকে নিয়েই আলোচনা করছো,কিন্ত আমি চাই না আমার স্বামী কিছু একটা সন্দেহ করুক।
আমি মারিয়ানের জন্যে একটুও বিচলিত হইনি,আর এটা তো জানাই,চাপে ভঁয়ে হয়তো জেকবের সব কিছু বলা ছাড়া উপায় ছিল না।
আমার শান্ত ভাবে,আমি নিজেই অবাক হচ্ছিলাম,হয়তো হতে পারে এটা আর কিছু না মদের প্রভাব,না হয় আমার মনের লুকানো দানবটা বেশ মজা পাচ্ছে এই খেলায়।হয়তো মজা পাচ্ছে সেই মেয়েটার সাথে খেলায় যে ভাবে সবই তার জানা,যে ভাবে সব কিছুই তার আয়ত্বের মধ্যে।
‘থামলে কেন,বলে যাও’,মুখে খাবার দিতে দিতে বললাম।
‘সবাই জানে,শরীরের কাঙ্গাল মেয়েদের আমি একটুও ভঁয় করি না।তা ছাড়া আমি তোমার মত না,জেকবকে আমি একেবারেই বিশ্বাস করি না,এর মধ্যেই কয়েকবার বাইরের কয়েকজনের সাথে ফষ্টিনষ্টি করতে ওর বাধে নি।রক্তমাংসের যোগাযোগ বেশ দূর্বল…’।

দূর্বল একটা হাসি দিয়ে জেকব মদে চুমুক দিল,বোতলটা খালি হয়ে গেছে তখন,মারিয়ান ইঙ্গিতে ওয়েটারকে আরেকটা বোতল আনতে বললো।

‘…আমি মনে করি এ ধরণের ঘটনা পারিবারিক জীবনের একটা অংশ।আমার পুরুষ ঐ ধরণের বেশ্যা,ছেনালদের কাছে ওর আর্কষন এত বেশী,তা হলে ওর প্রতি আমারই বা আর্কষনের কি থাকতে পারে?জান আমি ঈর্ষা বোধ করি না,বরং আমি শারীরিক আরও উত্তেজিত হয়ে উঠি তার শরীরটা খোঁজার জন্যে।অনেক সময় আমি কাপড়চোপড় খুলে ন্যাংটা হয়ে দাড়াই,আর পা দুটো ফাঁক করে বলি,অন্যান্যদের সাথে যা করলে সেটাই করো আমার সাথে।অনেক সময় জানতে চাই তার আনন্দের মাত্রাটা কেমন ছিল,ওটাও আমাকে নিয়ে যায় আনন্দের চরমে’।

জেকব কষ্টের হাসি হেসে বললো, ‘যা বলছে,এসব আর কিছু না মারিয়ানের কল্পনার ফসল।আজকাল বানিয়ে বানিয়ে কথা বলতে মারিয়ানের একটুও দ্বিধা হয় না।এই তো হঠাৎ কদিন আগে প্রস্তাব দিল,স্বামী স্ত্রী বদল করার ক্লাবে যাওয়ার জন্যে’।

জেকব ঠাট্টা করছিল না,তবুও মারিয়ান সহ আমরা সবাই হেসে উঠলাম।অবাক হলাম দেখে,জেকবকে অবিশ্বাসী,পরকীয়াতে ভেসে যাওয়া পুরুষ বলাতে,জেকবের কোন লজ্জা হয়নি, বরং সে গর্ব বোধ করছিল।আমার স্বামীকে দেখলাম,মারিয়ানের উত্তরটা শুনে সে বেশ উত্তেজিত হয়ে গেছে,খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চাচ্ছিল মারিয়ানের পরকীয়া প্রেমের উত্তেজনার গল্পকথা।জেকবের কাছ থেকে ক্লাবটার নাম ঠিকানা জানার চেষ্টা করছিল আমার স্বামী,এটা বলতেও তার দ্বিধা হইনি,নতুন কিছু একটা করতে সে খুবই আগ্রহী।জানি না আমার স্বামীর আগ্রহটা কি বাস্তব,না,ঝড়ো আবহাওয়াটাকে একটু শান্ত করার চেষ্টা।মারিয়ান বললো ঠিকানাটা ঠিক তার সাথে নেই,তবে কথার ভাবটা এমন ছিল যে যদি টেলিফোন নাম্বার দেয় তবে পরে তাকে টেক্সট করে জানাবে।

আমি বললাম,মানুষ যারা ঈর্ষায় কাতর হয়ে থাকে,তারা দেখাতে চায় উল্টোটা।তাদের জানার আগ্রহ এতই বেশী,অস্থিরতায় তারা চেষ্টা ক্রে,কোন ভাবে তারা যদি জানতে পারে জীবন সঙ্গীর নোংরা কান্ড কাহিনী,তবে ওটাতো একটা চরম বোকামী।সোচ্চার চেহারার পেছনে লুকানো আছে একগাঁদা কান্না।
যেমন তোমার স্বামীর সাথে আমারই একটা অবৈধ সর্ম্পক থাকতে পারে,সেটা কি আমি বলবো?
আমার গলার স্বরটা একটু অন্যরকমহয়ে গেছে তখন,আমার স্বামীও অবাক হয়ে তাকিয়ে
দেখছিল,আমাকে।
‘ওটা খুব একটু বেশী হয়ে গেল না’?আমার স্বামী বললো।

না,আমি মনে করি না।আমি তো এগুলো আলাপ আলোচনা করিনি,মাদাম কোনিগ যে কোথায় নিয়ে যেতে চাচ্ছে কথাবার্তা,ঠিক বুঝে ওঠা সম্ভব না।অযথা মারিয়ান কেন যে আমাকে আড়চোখে দেখে যাচ্ছে,আর এমন সব কথাবার্তা নিয়ে আলাপ আলোচনা করছে,যাতে তার ছাড়া আর কারও খুব একটা আগ্রহ আছে বলে মনে হয় না।

মারিয়ান হতবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়েছিল।মনে হলো,মারিয়ান ভাবতে পারেনি তার সাজানো নাটকের অঙ্ক এ ভাবে বদলে যাবে,যে ভাবে সে সব কিছু নিয়ন্ত্রন করে,এখানেও সে রকম হবে সবকিছু,এটাই ছিল তার ধারণা।

আমি আবার বললাম,অনেক মানুষ যারা ঈর্ষার রোগে ভোগে,এমন না যে তাদের স্বামী বা বৌ পরকীয়া প্রেমে মত্ত,বরং তাদের প্রাধান্য পাওয়ার ইচ্ছাটা সেখানে সোচ্চার।জেকব ওয়েটারকে ডেকে বিলটা দিতে বললো।জেকবের আমন্ত্রন,ওদের বিল দেয়াটাই স্বাভাবিক।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম বেশ দেরী হয়ে গেছে,বেবী সিটার হয়তো বেশ অস্থির হয়ে গেছে!উঠে,সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে আমার কোটটা আনতে গেলাম,এর মধ্যে আলাপ আলোচনা
বদলে ছেলেমেয়ে তাদের নিয়ে দায়িত্ববোধের দিকে চলে গেছে।
‘লিন্ডা কি সত্যি সত্যি ভাবছিল,আমি তাকে নিয়ে কিছু বলছিলাম’,মারিয়ান জিজ্ঞাসা করলো আমার স্বামীকে।
‘অবশ্যই না,ওটা ভাবার কোন কারণ আছে কি’?
বাইরের শীতের ঝটকা বাতাসে বের হয়ে গেলাম,আমরা।আমার রাগ,অস্থিরতা আমাকে বলতে বাধ্য করলো,হ্যা মারিয়ান আমাকেই নিয়েই কথা বলছিল,সে মানসিক ভাবে এতই অপ্রকৃতস্থ যে ইলেকশনের দিনেও এ ধরণের কথাবার্তা বলতে সে ছাড়েনি।নিজের প্রতিপত্তি,ক্ষমতা দেখানো,আর জেকবের চিন্তাধারার সবকিছু তো তার কাছ থেকেই আসা।আমার স্বামী বললো,মদের মাত্রাটা হয়তো একটু বেশী হয়ে গেছে,আর বেশি কিছু না বলাটাই ভাল।

০০০০০০০০০০০

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৪২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×