দেশে নির্বাচন, নাকি জাহান্নামের আজাব বুঝা বড় দায়। আতঙ্কে-ভয়ে দিন কাটাতে সাধারণ জনগণের, ছাত্রদের। বলা নেই কওয়া নেই, যখন তখন পেটোয়া পুলিশ দরজায় কড়া নাড়ে। ডিএমপি তো বলেই দিলো ব্যাচলেরদের ঢাকায় থাকা যাবে না। বাড়ির মালিকও এতদিন ব্যাচেলরদের প্রতি অন্যদৃষ্টিতে তাকাতো। আর এখন রাষ্ট্রও অন্যভাবে তাকায়। ছিঃ..... ।
৪জি-৩জি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আঃ লীগ বলেই দিলো নৌকায় ভোট না দিলে যেন কেউ কেন্দ্রের আশেপাশে না যায়।
সেনাবাহিনী রাস্তাঘাট ঘুরেফিরে দেখছে। আনন্দ করছে। নিজেদের দীর্ঘদিনের ক্যান্টনমেন্টবাস থেকে বেরিয়ে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে সরকারি গাড়ি চাপিয়ে জনগণের নির্যাতন উপভোগ করছে।
কিছু মানুষ বলে দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে গেছে, রাস্তাঘাট অনেক কিছুই হয়েছে। কিন্তু কই চট্টগ্রামের হালিশহর, আগ্রাবাদের মূল সড়কটাতো গত ৪-৫ বছরেও ঠিক হতে দেখিনি। কবে ভাঙ্গা শুরু হইছে তা নাই বা বললাম। এরকম আশেপাশের অনেক কিছু আগের মতো বেহাল হয়ে পড়ে আছে। কয়েকটা ব্রিজ কালবার্ট দিয়ে উন্নয়নের রোল মডেল বলা যায় না। যেখানে হাজারটা ফ্লাইওভার হওয়ার কথা সেখানে দুই একটা দেখেই আমরা ঢেকুর তুলি। যেখানে জঙ্গী রাষ্ট্র পাকিস্তানেরও ৩ টি, সৌদি আরবের ১৩ টি, ভারতের ৮৮ টি, যুক্তরাষ্ট্রের ১৬১৬ টি স্যাটেলাইট রয়েছে সেখানে এ যুগে এসে আমরা একটা স্যাটেলাইট পাঠিয়ে সারাদেশে রাষ্ট্রিয় উৎসব পালন করে বসে আছি।
না পাইতে না পাইতে অবস্থা এমন হইছে, এখন অল্প কিছু পাইলে মনে হয় আমাদের ভাগ্য ভালো তাই পেয়েছি। কিন্তু আমরা বুঝিনা এটা আমাদের অধিকার। এটা আমাদেরই। যতদিন আমরা বুঝবো না এগুলো আমাদেরই, ততদিন এসব ঠোটকাটা রাজনীতিবিদেরা আমাদের উপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে যাবে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা অস্র দিয়েই পুলিশ আজ জনগণকে অকালে কবরে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
তখন আমরা ভাবি, তো কি হইছে! সে তো আমার কেঊ না। আমার কোন আত্মীয়ও না। সে আঃ লীগ, সে বিএনপি, মারছে ভালো হইছে। কিন্তু আমরা বুঝিনা, এ গুলির নলটা একদিন আমাদের দিকেও ঘুরে আসবে।
আমরা সাধারণ মানুষ। নির্বাচন আসলে কি জিনিস তা আমাদের উপলব্ধির বয়স হয়নি। কে ক্ষমতা নিবে, কার ক্ষমতা নেয়া উচিৎ সেটাও উপলব্ধির বয়স হয়নি। কিন্তু আমি বুঝি আমার অধিকার কি! একটা ব্যালট পেপারে সিল মারতে হবে, তারপর সেটা বক্সে রাখতে হবে। ঠিক এটাই বুঝি। বুঝিনা কিভাবে দুইটা সিল মারতে হবে।
কিন্তু সাধারণদের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ কেন? মানবতা বলতে কিছুই নেই? একটা কুকুরও রাস্তায় নিরাপদ বোধ করে দিব্যি আনন্দে ঘুরেবেড়ায়, কিন্তু একটা সাধারণ মানুষ? মানুষের জীবন কি কুকুর বিড়ালের চেয়ে খারাপ হয়ে গেছে?
যারা এতোকিছু দেখার পরেও বলেন দেশের পরিস্থিতি ভালো, স্বাভাবিক। তাদের মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। তাদের সমাজে-রাষ্ট্রে বসবাসের যোগ্যতাই নেই। তাদের বাস হওয়া উচিৎ পাগলা গারদে, জঙ্গলে।
মনে হচ্ছে, ইতিহাসের অন্যতম লজ্জাজনক অধ্যায়ের সাক্ষী হচ্ছি। রইল কর্তাদের প্রতি একরাশ ঘৃণা, তাদের নাসিকা ধুলায় মলিন হোক।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩০