মন খারাপ করা একটা মেয়েকে নিয়ে গল্প করতে ইচ্ছে করছে।
মেয়েটা একলা থাকে উপজেলা টাইপ একটা শহরে। সে থাকে একটা লজিং বাসায়। কেন থাকে, কি করে সেখানে, তাঁর বাবা-মা কোথায়, ভাই বোন আছে কি না, প্রেমিক আছে কি নাই.........কিচ্ছু জানি না। শুধু জানি, মেয়েটার মন খারাপ। ভীষণ রকমের খারাপ।
কিন্তু তাঁর মুখ দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। কেন জানি দেখে মনে হয় সব সময় ই তাঁর ঠোটের কোনায় হাসি লেগে আছে। এক ই হাসি নানা রকম অর্থ বোঝায়। যার মনে যেমন চিন্তা হাসিটার অর্থ তাঁর কাছে তেমন করে ধরা দেয়। কেউ ভাবে উপহাসের হাসি, কেউ ভাবে ভালোবাসার!
মন খারাপ ভাবটা নিয়ে মেয়েটা আজ রাতে ঘুমাতে পারে নি। খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। গোসল করেছে। সাদা সুতির জামদানীর মাঝে লাল ছোট ছোট ফুল ফুটানো শাড়ি অনেক যত্ন করে পড়েছে......।। উত্তরবঙ্গে অনেক শীত বলে একটা সাল ও নিয়েছে।। তারপরে চলে গেছে বাসার ছাদে।
ছাদটা বিশাল বলে কুয়াশা রেলিং গুলোকে ঢেকে ফেলেছে। এর জন্যই হয়তো ছাদটাকে মনে হচ্ছে বিশাল খোলা প্রান্তর। মেয়েটার হাতে একটা কালো কফির মগ। সে আস্তে আস্তে হাঁটছে আর কফির মগে চুমুক দিচ্ছে।
এই ভাবে অনেকক্ষণ চলে গেছে, সেই দিকে মেয়েটার খোঁজ ই নাই......।। কিন্তু সেই খোঁজটা রাখছে পাশের বাসার জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকা হেলাল হাফিজ নামের ছেলেটি। ছেলেটার অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমানোর অভ্যাস। কি মনে করে একদিন সকালে উঠে জানালার দিকে চোখ পড়তেই সে চমকে উঠলো! ছাদে কি পরী নেমে এসেছে নাকি?
ধাক্কাটা সাম্লিয়ে নিয়েই দে দেখল, যে দাড়িয়ে আছে সে পরি-ই বটে; তবে কল্পনার!
এই ভাবে কেটে গেলো বেশ কিছু দিন। হেলাল হাফিজের এখন ঘুম ভাঙ্গে অনেক ভোরে। সে ও মেয়েটার মত করে এক কাপ কফি হাতে দাড়িয়ে থাকে জানালার পাশে। এই ভাবে যে কত দিন কেটে গেলো!
কি মনে করে একদিন মেয়েটা দেখে ফেলল তাকে। এই একদিন, দুই-দিন; তিন-দিন; চার-দিনে পরিণত হল। অবশেষে মেয়েটা একদিন হাতের ইশারায় হেলাল হাফিজকে জিজ্ঞেস করল, -"কি"?
হেলাল হাফিজ জানালা থেকে সরে আসলো। চেয়ারটা টেনে নিলো নিজের দিকে। তারপর ধপ করে বসে হাতে কলমটা নিয়েই একবারের জন্যও কিছু না ভেবে খবরের কাগজের ফাঁকা যায়গায় লিখে ফেলল,
নিউট্রন বোমা বোঝো,
মানুষ বোঝো না?
____________________________________