আজকাল হুটহাট করে আম্মাকে মনে পড়ে!
রাস্তাঘাটে আম্মার বয়সি কোন মহিলাকে দেখেই তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। ভাবার চেস্টা করি আম্মা ঠিক এই সময় কি করছে।
একটা সময় ছিলো, আম্মার বাইরে কিছুই ছিলো না আমার। খেতে বসলে, আম্মা ভাত দেন। বাইরে গেলে, আম্মা বাইরে গেলাম। বাসায় ফিরলে, আম্মা কই আপনি? আসলাম।
ঢাকা সব কেড়ে নিয়েছে। ব্যাক্তি স্বাধীনতা দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু আদর কেড়ে নিয়েছে, আর আদরের মানুষ গুলোকে ঠেলে দিয়েছে অনেক অনেক দূরে।
আজ অফিস থেকে ফিরছিলাম, বাসটা পুরা ফাকা। একদম সামনের সিটে আমি। জানালা খুলে দিয়েছি। মিরপুর লিংক সংসদ ভবনের সামন দিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি তন্দ্রা অবস্থায় আছি। ঘুমিয়ে নাকি জেগে বুঝতে পারছি নাহ, এমন। হুট করে মনে হলো আম্মা মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, আর আমি পরম আদরে মাথা এলিয়ে দিয়ে আছি। তন্দ্রাভাব কাটলো ধানমন্ডি ৩২ এ।
আম্মা বলে আব্বা, প্রতিদিন একবার করে ফোন দিবি। কি এমন ব্যস্ত আমি, এক সপ্তাহে এই একদিন আমার হয়ে উঠলো নাহ! নিকুচি করি নিজেকে!
আর ভালো লাগে নাহ ঢাকা। ফালতু শহর। ইট কাঠের সাথে চলতে চলতে আমিও কেমন জানি পাথর হয়ে যাচ্ছি দিনে দিনে। সবাই কেমন জানি মিথ্যেবাদী। আর মিথ্যেবাদীদের সাথে মিসতে মিসতে হয়ে যাচ্ছি মুখোশ ধারী। মুখে এক ভিতরে এক!
এর চেয়ে গ্রামে গিয়ে বাটুল ভাইয়ের সাথে আমের কেনাবেচা করলেই ভালো হইতো। ওরাও মিথ্যে বলে। তবে চোখে চোখ রেখে মিথ্যে বলাটা এখনো শিখতে পারে নাই। মিথ্যে বলার সময় কেমন জানি চোখের মনি ডানবাম করতে থাকে। পায়ের বুড়ো আঙুল মাটিতে ঘষতে থাকে। আর গলা কেপে কেপে ওঠে! সবচেয়ে বড় কথা, আম্মার সাথে তো থাকতে পারতাম!
ঢাকা নাকি যাদুর শহর! আসলেই তাই। জাদুকরের মত সব মানুষ কেমন জানি একটা মিথ্যের জগতকে সত্য বলে মেনে নিয়েছে। মানুষের চোখে শুধু ধুলি দিয়ে ধান্দাবাজির চেস্টা সবার!
ভাজ্ঞিস কিছু ভালো মানুষ আছে এই এতো এতো মিথ্যুকের ভিড়ে! নাইলে সত্যি সত্যি দম আটকে মরে যেতাম।
ভালো মানুষ গুলো ভালো থাকুক। আর যাদুকর গুলো ধংস হয়ে যাক। নিপাত যাক।