আসসালামুয়ালাইকুম ... কেমন আছেন সবাই????
আশা করি ভাল। সামুর ব্লগে আজ প্রথম লেখা । লেখাটি বিষয় বস্তু হচ্ছে চট্টগ্রাম নিয়ে......
চট্টগ্রাম শহরের নানা জানা অজানা গল্প আমরা অনেকেই জানি
তবুও এই সুন্দর শহরটিকে আর একবার সবার কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস......
আসলে আমার বললে ভুল হবে ... কারণ আমি নিজে এটা ফেসবুকে "হৃদয়ে চট্টগ্রাম"নামের ফেন পেজে পড়ে অনুপ্রাণিত হয়েছি সবার কাছে আমাদের চট্টগ্রামকে পরিচয় করিয়ে দিতে সামুতে আমি লেখাটি রি পোস্ট করেছি.
হৃদয়ে চট্টগ্রাম ফেসবুক ফেন পেজ লিঙ্ক ..
আসুন কিছুটা হলেও জানি আমাদের এই চট্টগ্রাম কে......
চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর | বন্দরনগরী নামে পরিচিত। এটি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসাবে পরিচিত চট্টগ্রাম শহর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়াও অনেক গুলো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সীমারেখা বাংলাদেশের বন্দরনগরী হিসেবে স্বীকৃত চট্টগ্রামের পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর, উত্তরে ফেনী নদী ও ভারত, পূর্বে পার্বত্য জেলাসমূহ এবং দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা রয়েছে। তবে শহর চট্টগ্রাম উত্তরে ফৌজহারহাট, দক্ষিণে কালুরঘাট এবং পূর্বে হাটহাজারী পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রশাসনিক অঞ্চল চট্টগ্রাম শহর এলাকা ৯টি থানার অধীনঃ চাঁদগাও, বায়জীদ বোস্তামী, বন্দর, ডাবলমুরিং, কোতোয়ালী, পাহাড়তলী, পাঁচলাইশ এবং নবগঠিত হালিশহর ও খুলশী থানা। চট্টগ্রাম শহরে রয়েছে ৪১টি ওয়ার্ড এবং ২৩৬টি মহল্লা। শহরের মোট এলাকা হলো ২০৯.৬৬ বর্গ কিলোমিটার। চট্টগ্রামের ইতিহাস সীতাকুন্ডু এলাকায় পাওয়া প্রস্তরীভূত অস্ত্র এবং বিভিন্ন মানবসৃষ্ট প্রস্তর খন্ড থেকে ধারণা করা হয় যে, এ অঞ্চলে নব্যপ্রস্তর যুগে অস্ট্রো-এশিয়াটিক জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিল। তবে, অচিরে মঙ্গোলদের দ্বারা তারা বিতাড়িত হয় (হাজার বছরের চট্টগ্রাম, পৃ২৩)। লিখিত ইতিহাসে সম্ভবত প্রথম উল্লেখ গ্রিক ভৌগলিক প্লিনির লিখিত পেরিপ্লাস। সেখানে ক্রিস নামে যে স্থানের বর্ণনা রয়েছে ঐতিহাসিক নলিনীকান্ত ভট্টশালীর মতে সেটি বর্তমানের সন্দীপ। ঐতিহাসিক ল্যাসেনের ধারণা সেখানে উল্লিখিত পেন্টাপোলিশ আসলে চট্টগ্রামেরই আদিনাম। মৌর্য সাম্রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত নয় তবে পূর্ব নোয়াখালির শিলুয়াতে মৌর্য যুগের ব্রাহ্মী লিপিতে একটি মূর্তির পাদলিপি পাওয়া গেছে। তিব্বতের বৌদ্ধ ঐতিহাসিক লামা তারানাথের একটি গ্রন্থে চন্দ্রবংশের শাসনামলের কথা দেখা যায় যার রাজধানী ছিল চট্টগ্রাম। এর উল্লেখ আরাকানের সিথাং মন্দিরের শিলালিপিতেও আছে। তারানাথের গ্রন্থে দশম শতকে গোপীনাথ চন্দ্র নামের রাজার কথা রয়েছে (বাংলাপিডিয়া, খন্ড ৩, পৃ২৭৬)। সে সময় আরবীয় বনিকদের চট্টগ্রামে আগমন ঘটে। আরব ভৌগলিকদের বর্ণনার ‘সমুন্দর’ নামের বন্দরটি যে আসলে চট্টগ্রাম বন্দর তা নিয়ে এখন ঐতিহাসিকরা মোটামুটি নিশ্চিত (হাজার বছরের চট্টগ্রাম, পৃ২৩)। সে সময় পালবংশের রাজা ছিলেন ধর্মপাল। পাল বংশের পর এ অঞ্চলে একাধিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের সৃষ্টি হয়। ৯৫৩ সালে আরাকানের চন্দ্রবংশীয় রাজা সু-লা-তাইং-সন্দয়া চট্টগ্রাম অভিযানে আসলেও কোন এক অজ্ঞাত কারণে তিনি বেশি দূর অগ্রসর না হয়ে একটি স্তম্ভ তৈরি করেন। এটির গায়ে লেখা হয় ‘চেৎ-ত-গৌঙ্গ’ যার অর্থ ‘যুদ্ধ করা অনুচিৎ’। সে থেকে এ এলাকাটি চৈত্তগৌং হয়ে যায় বলে লেখা হয়েছে আরাকানীয় পুথি ‘রাজাওয়াং’-এ। এ চৈত্তগৌং থেকে কালক্রমে চাটিগ্রাম, চাটগাঁ, চট্টগ্রাম, চিটাগাং ইত্যাদি বানানের চল হয়েছে (হাজার বছরের চট্টগ্রাম, পৃ২৩)। চন্দ্রবংশের পর লালবংশ এবং এরপর কয়েকজন রাজার কথা কিছু ঐতিহাসিক উল্লেখ করলেও ঐতিহাসিক শিহাবুদ্দিন তালিশের মতে ১৩৩৮ সালে সুলতান ফকরুদ্দিন মোবারক শাহ-এর চট্টগ্রাম বিজয়ের আগ পর্যন্ত ইতিহাস অস্পষ্ট। এ বিজয়ের ফলে চট্টগ্রাম স্বাধীন সোনারগাঁও রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। সে সময়ে প্রায় ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম আসেন বিখ্যাত মুর পরিব্রাজক ইবনে বতুতা। তিনি লিখেছেন -“বাংলাদেশের যে শহরে আমরা প্রবেশ করলাম তা হল সোদকাওয়াঙ (চট্টগ্রাম)। এটি মহাসমূদ্রের তীরে অবস্থিত একটি বিরাট শহর, এরই কাছে গঙ্গা নদী- যেখানে হিন্দুরা তীর্থ করেন এবং যমুনা নদী একসঙ্গে মিলেছে এবং সেখান থেকে প্রবাহিত হয়ে তারা সমুদ্রে পড়েছে। গঙ্গা নদীর তীরে অসংখ্য জাহাজ ছিল, সেইগুলি দিয়ে তারা লখনৌতির লোকেদের সঙ্গে যুদ্ধ করে। ...আমি সোদওয়াঙ ত্যাগ করে কামরু (কামরূপ) পর্বতমালার দিকে রওনা হলাম।” ১৩৫২-৫৩ সালে ফকরুদ্দীন মোবারক শাহ এর পুত্র ইখতিয়ার উদ্দিন গাজী শাহকে হত্যা করে বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান ইলিয়াস শাহ বাংলার মসনদ দখল করলে চট্টগ্রামও তার করতলগত হয়। তার সময়ে চট্টগ্রাম বাংলার প্রধান বন্দর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর হিন্দুরাজা গণেশ ও তার বংশধররা চট্টগ্রাম শাসন করে। এরপরে বাংলায় হাবসি বংশ প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু ১৪৯২ সালে সুলতান হোসেন শাহ বাংলার সুলতান হোন। কিন্তু চট্টগ্রামের দখল নিয়ে তাকে ১৪১৩-১৪১৭ সাল পর্যন্ত ত্রিপুরার রাজা ধনমানিক্যের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকতে হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত রাজা ধনমানিক্যের মৃত্যুর পর হোসেন শাহ-এর রাজত্ব উত্তর আরাকান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। তার সময়ে উত্তর চট্টগ্রামের নায়েব পরবগল খানের পুত্র ছুটি খাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় শ্রীকর নন্দী মহাভারতের একটি পর্বের বঙ্গানুবাদ করেন। পর্তুগিজদের আগমন ও বন্দরের কতৃত্ব লাভ ১৫১৭ সাল থেকে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে আসতে শুরু করে। বাণিজ্যের চেয়ে তাদের মধ্যে জলদস্যুতার বিষয়টি প্রবল ছিল। সুলতান প্রবলভাবে তাদের দমনের চেষ্টা করেন। কিন্তু এ সময় আফগান শাসক শের শাহ বাংলা আক্রমণ করবে শুনে ভীত সন্ত্রস্ত হোসেন শাহ পর্তুগিজদের সহায়তা কামনা করেন। তখন সামরিক সহায়তার বিনিময়ে ১৫৩৭ সালে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে বাণিজ্য কুঠি নির্মান করে। একই সঙ্গে তাদেরকে বন্দর এলাকার শুল্ক আদায়ের অধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ১৫৩৮ সালে শের শাহ-র সেনাপতি চট্টগ্রাম দখল করে। তবে, ১৫৮০ পর্যন্ত আফগান শাসনামলে সবসময় ত্রিপুরা আর আরাকানীদের সঙ্গে যুদ্ধ চলেছে। আরাকানী শাসন ১৫৮১ সাল থেকে ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সম্পূর্ণভাবে আরাকান রাজাদের অধীনে শাসিত হয়। তবে, পর্তুগিজ জলদস্যুদের দৌরাত্ম এ সময় খুবই বৃদ্ধি পায়। বাধ্য হয়ে আরাকান রাজা ১৬০৩ ও ১৬০৭ সালে শক্ত হাতে পর্তুগিজদের দমন করেন। ১৬০৭ সালেই ফরাসি পরিব্রাজক ডি লাভাল চট্টগ্রাম সফর করেন।তবে সে সময় পর্তুগিজ জলদস্যু গঞ্জালেস সন্দীপ দখল করে রাখে। পর্তুগিজ মিশনারি পাদ্রি ম্যানরিক ১৬৩০-১৬৩৪ সময়কালে চট্টগ্রামে উপস্থিতকালে চট্টগ্রাম শাসক আলামেনের প্রশংসা করে যান। ১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম মোগলদের হস্তগত হয়। চট্টগ্রামে আরাকানী শাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম আরাকানীদের কাছ থেকে অনেক কিছুই গ্রহণ করে। জমির পরিমাণে মঘী কানির ব্যবহার এখনো চট্টগ্রামে রয়েছে। মঘী সনের ব্যবহারও দীর্ঘদিন প্রচলিত ছিল। সে সময়ে আরাকানে মুসলিম জনবসতি বাড়ে। আরকান রাজসভায় কবি আলাওলের মতো বাংলা কবিদের পৃষ্ঠপোষকতায় সেখানে বাংলা সাহিত্যের প্রভূত উন্নতি হয়। পদ্মাবতী আলাওলের অন্যতম কাব্য। মোঘল শাসনামল ১৬৬৬ সালে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খানকে চট্টগ্রাম দখলের নির্দেশ দেন। সুবেদারের পুত্র উমেদ খাঁর নেতৃত্বে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় আরাকানীদের পরাজিত করে এবং আরাকানী দূর্গ দখল করে। যথারীতি পর্তুগিজরা আরাকানীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে মোঘলদের পক্ষ নেয়। মোগল সেনাপতি উমেদ খাঁ চট্টগ্রামের প্রথম ফৌজদারের দায়িত্ব পান। শুরু হয় চট্টগ্রামে মোঘল শাসন। তবে মোঘলদের শাসনামলের পুরোটা সময় আরাকানীরা চট্টগ্রাম অধিকারের চেষ্টা চালায়। টমাস প্রাট নামে এক ইংরেজ আরাকানীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে মোঘলদের পরাজিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। কোলকাতার গোড়াপত্তনকারী ইংরেজ জব চার্নকও ১৬৮৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দখলের ব্যর্থ অভিযান চালায়। ১৬৮৮ সালে কাপ্তেন হিথেরও অনুরূপ অভিযান সফল হয় নি। ১৬৭০ ও ১৭১০ সালে আরাকানীরা চট্টগ্রামের সীমান্তে ব্যর্থ হয়। কিন্তু ১৭২৫ সালে প্রায় ৩০ হাজার মগ সৈন্য চট্টগ্রামে ঢুকে পড়ে চট্টগ্রামবাসীকে বিপদাপন্ন করে ফেলে। তবে শেষপর্যন্ত মোঘলরা তাদের তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়। এই সময় মোঘলদের কারণে ইংরেজরা চট্টগ্রাম বন্দর কোনভাবেই দখল করতে পারে নি। মোঘলরা পার্বত্য এলাকার অদিবাসীদের সঙ্গে, বিশেষ করে চাকমা সম্প্রদায়ের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে সদ্ভাব বজায় রাখে। পলাশীর যুদ্ধ ও ইংরেজদের কাছে চট্টগ্রাম হস্তান্তর পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর ইংরেজরা চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য নবাব মীর জাফরের ওপর চাপ সৃস্টি করে। তবে, মীরজাফর কোনভাবেই ইংরেজদের চট্টগ্রাম বন্দরের কর্তৃত্ব দিতে রাজী হোননি। ফলে, ইংরেজরা তাঁকে সরিয়ে মীর কাশিমকে বাংলার নবাব বানানোর ষড়যন্ত্র করে। ১৭৬১ সালে মীর জাফরকে অপসারণ করে মীর কাশিম বাংলার নবাব হয়ে ইংরেজদের বর্ধমান, মেদিনীপুর ও চট্টগ্রাম হস্তান্তরিত করেন। চট্টগ্রামের শেষ ফৌজদার রেজা খাঁ সরকারিভাবে চট্টগ্রামের শাসন প্রথম ইংরেজ চিফ ভেরেলস্ট-এর হাতে সমর্পন করেন। শুরু হয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন। কোম্পানির শাসনামলে চট্টগ্রামবাসীর ওপর করারোপ দিনে দিনে বাড়তে থাকে। তবে, ১৮৫৭ সালের আগে চাকমাদের বিদ্রোহ আর সন্দীপের জমিদার আবু তোরাপের বিদ্রোহ ছাড়া ইংরেজ কোম্পানিকে তেমন একটা কঠিন সময় পার করতে হয় নি। সন্দীপের জমিদার আবু তোরাপ কৃষকদের সংগঠিত করে ইংরেজদের প্রতিরোধ করেন। কিন্তু ১৭৭৬ সনে হরিষপুরের যুদ্ধে তিনি পরাজিত ও নিহত হলে সন্দীপের প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ে। অন্যদিকে ১৭৭৬ থেকে ১৭৮৯ সাল পর্যন্ত চাকমারা প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সম্মুখ সমরে চাকমাদের কাবু করতে না পেরে ইংরেজরা তাদের বিরুদ্ধে কঠিন অর্থনৈতিক অবরোধ দিয়ে শেষ পযর্ন্ত চাকমাদের কাবু করে। ইংরেজরা আন্দরকিল্লা জামে মসজিদকে গোলাবারুদের গুদামে পরিণত করলে চট্টগ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। মসজিদের জন্য নবাবী আমলে প্রদত্ত লাখেরাজ জমি ১৮৩৮ সালের জরিপের সময় বাজেয়াপ্ত করা হয়। পরে খান বাহাদুর হামিদুল্লাহ খান কলিকাতায় গিয়ে গভর্নরের কাছ থেকে এটি উদ্ধার করেন। নগর প্রশাসন চট্টগ্রাম শহর এলাকা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-এর অধীনস্ত। শহরবাসীদের সরাসরি ভোটে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। বর্তমানে এই শহরের মেয়র মনজুর আলম (মনজু)। শহরের আইন-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য নিযুক্ত রয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর সদর দপ্তর দামপাড়ায় অবস্থিত। চট্টগ্রামের প্রধান আদালতের স্থান লালদীঘি ও কোতোয়ালী এলাকায় ঐতিহাসিক কোর্ট বিল্ডিং এ। অর্থনীতি বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো চট্টগ্রামের অর্থনীতিও কৃষি ও বাণিজ্য নির্ভর। চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বানিজ্যিক রাজধানী। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের প্রথম রপ্তানী প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল বা EPZ চট্টগ্রামে স্থাপিত হয়। কৃষি চট্টগ্রামের কৃষির প্রধান শস্য ধান। এছাড়া শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে ব্যপক শাকসবজির চাষ হয়। উল্লেখযোগ্য শাকসবজির মধ্যে রয়েছে- বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, সাদা কুমড়া, লাউ, ঢেড়শ, ঝিংগা, চিচিংগা, শশা, বরবটি, সীম, মটরশুঁটি, টমেটো, মুলা, বীট, গাজর, শালগম, ফুলকপি, বাধাকপি, পটল করলা, বিভিন্ন রকমের শাক ইত্যাদি। ফলমূলের ক্ষেত্রে নারিকেলই মুখ্য। তবে, আম, কলা ও কাঁঠালের উৎপাদনও হয়ে থাকে। তামাক ১৯৬০ এর দশকে শংখ ও মাতামুহুর নদীর তীরবর্তী এলাকায় তামাক চাষ শুরু হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বাংলাদেশ টোব্যাকো কোম্পানি (এখন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানী) রাঙ্গুনিয়াতে তামাক চাষের ব্যবস্থা করে এবং পরে লাভজনক হওয়ায় চাষীরা তা অব্যাহত রাখে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলায় গড়ে ?? টন তামাক উৎপন্ন হয়। লবন সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় লবন চাষ লাভজনক। ইতিহাসে দেখা যায় ১৭৯৫ সালে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলে গড়ে বার্ষিক ১৫ লাখ টন লবন উৎপন্ন হতো। মৎস চাষ ও আহরণ চট্টগ্রাম জেলায় মাছচাষের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। সমুদ্র এবং নদী-নালার প্রাচূর্য এর মূল কারণ। শহরের অদূরের হালদা নদীর উৎসমুখ থেকে মদুনাঘাট পর্ষন্ত মিঠা পানির প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে বেশ উর্বর। বৃহত্তর চট্টগ্রামে দিঘী, বিল ও হাওড়ের সংখ্যা ৫৬৮,[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পুকুর ও ডোবার সংখ্যা ৯৫,৯৪১।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মোট আয়তন ৮৫,৭০০ একর (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ১৯৮১), কর্ণফুলী নদীর মোহনায় প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার একর বিস্তৃত মাছ ধরার জায়গা হিসাবে চিহ্নিত। রপ্তানির ক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছ হাঙ্গর, স্কেট, রে, হেরিং, শার্কফিন এবং চিংড়ি উল্লেখ্য। শুঁটকি চট্টগ্রামের মাছ চাষ ও আহরনের একটি উল্ল্যেখযোগ্য দিক হলে শুঁটকি (মাছ শুকিয়ে সংরক্ষণ করা)। সোনাদিয়া, সন্দ্বীপ প্রভৃতি দ্বীপাঞ্চল থেকে শুঁটকি মাছ চট্টগ্রামের বাণিজ্য কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়। ব্রিটিশ আমলে শুঁটকি রেঙ্গুনে রপ্তানি করা হতো। শিল্প বন্দর নগরী হিসাবে ব্রিটিশ-পূর্ব, ব্রিটিশ এবং পাকিস্তান পর্বে চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল। বন্দরভিত্তিক কর্মকান্ড ছাড়াও ব্রিটিশ আমলে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের সদর দপ্তর চট্টগ্রামে স্থাপিত হয়। পাকিস্তান পর্বে চট্টগ্রামে ভারী শিল্প যেমন - ইস্পাত, মোটরগাড়ি, পাট, বস্ত্র, সুতা, তামাক, ম্যাচ ও ঔষধ শিল্পের কারখানা গড়ে ওঠে। তাছাড়া কিছু বহুজাতিক কোম্পানির সদর দপ্তরও চট্টগ্রামে গড়ে ওঠে। সাহিত্য চট্টগ্রামে বাংলা সাহিত্যের বিকাশ শুরু ষোড়শ শতকে। সে সময়কার চট্টগ্রামের শাসক পরাগল শাহ এবং তার পুত্র ছুটি খাঁর সভা কবি ছিলেন কবীন্দ্র পরমেশ্বর ও শ্রীকর নন্দী। কবীন্দ্র পরমেশ্বর মহাভারতে মহাভারতের অশ্বমেধ পর্বের একটি সংক্ষিপ্ত বাংলা অনুবাদ করেন। আর শ্রীকর নন্দী জৈমিনি সংহিতা অবলম্বনে অশ্বমেধ পর্বের বিস্তারিত অনুবাদ করেন। সংস্কৃতি চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। জানা ইতিহাসের শুরু থেকে চট্টগ্রামে আরাকানী মঘীদের প্রভাব লক্ষনীয়। ফলে গ্রামীণ সংস্কৃতিতেও এর প্রভাব রয়েছে। সে সময় এখানকার রাজারা বৌদ্ধধর্মাবলম্বী হওয়ায় তার প্রভাবও যথেষ্ট। সুলতানি, আফগান ও মোগল আমলেও আরাকানীদের সঙ্গে যুদ্ধ বিগ্রহ লেগেই ছিল। ফলে শেষ পর্যন্ত মঘীদের প্রভাব বিলুপ্ত হয়নি। তবে, চট্টগ্রামের বর্তমান সংস্কৃতির উন্মেষ হয় ১৭৯৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের পর। এর ফলে ভারতীয় উপমহাদেশে সামাজিক ধানোৎপাদন ও বন্টনে পদ্ধতিগত আমূল পরিবর্তন হয়। অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও একটি নতুন মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়। নতুন এরই ফাঁকে ইংরেজরা প্রচলনা করে ইংরেজি শিক্ষা। মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে পাশ্চাত্যের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করে। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের ইতিহাস সমৃদ্ধ।শেফালি ঘোষ এবং শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণব কে বলা হয় চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞি । মাইজভান্ডারি গান ও কবিয়াল গান চট্টগ্রামের অ্ন্যতম ঐতিহ্য । কবিয়াল রমেশ শীল একজন বিখ্যাত কিংবদন্তি শিল্পী ।জনপ্রিয় ব্যান্ড সোলস, এল আর বি ,রেঁনেসা ,নগরবাউল এর জন্ম চট্টগ্রাম থেকেই । আইয়ুব বাচ্চু, কুমার বিশ্বজিত, নাকিব খান, পার্থ বডুয়া, সন্দি্পন ,্নাসিম আলি খান, মিলা ইসলাম চট্টগ্রামের সন্তান ।নৃত্যে চট্টগ্রামের ইতিহাস মনে রখার মত । রুনু বিশ্বাস জাতীয় পর্যায়ে বিখ্যাত নৃত্যগুরু। চট্টগ্রামের বিখ্যাত সাংস্কৃতিক সংগঠন হল দৃষ্টি চট্টগ্রাম http://www.drishtyctg.com , বোধন আবৃত্তি পরিষদ , প্রমা , আলাউদ্দিন ললিতকলা একাডেমি , প্রাপন একাডেমি , উদিচি , আবৃত্তি সমন্নয় পরিষদ , ফু্লকি, রবিন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা , রক্তকরবী , আর্য সঙ্গীত , সঙ্গীত পরিষদ । মডেল নোবেল , মৌটুসি ,শ্রাবস্তীর চট্টগ্রামে জন্ম । সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয় জেলা শিল্পকলা একাডেমি, মুসলিম হল, থিয়েটার ইন্সটিটিউট এ । খাদ্য চট্টগ্রামের মানুষ ভোজন রসিক হিসেবে পরিচিত। শুঁটকি মাছ , মধুভাত, বেলা বিস্কিট ,বাকর খানি ,লক্ষিশাক ,কালো গরুর গো্স্ত ভুনা ,পেলন ডাল, মেজবানি মাংস, আফলাতুন হালুয়া, তাল পিঠা ,নোনা ইলিশ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহি খাদ্য । গণমাধ্যম চট্টগ্রামের উল্লেখযোগ্য দৈনিক পত্রিকার মধ্যে রয়েছে দৈনিক পূর্বকোণ,দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ এবং দৈনিক আজাদী। বাংলাদেশ বেতারের চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মূল স্টুডিও আগ্রাবাদে অবস্থিত। এছাড়া কালুরঘাটে একটি বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র রয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন এর চট্টগ্রাম কেন্দ্র পাহাড়তলীতে অবস্থিত। বেসরকারী এফএম রেডিও রেডিও ফূর্তি এবং রেডিও টুডের চট্টগ্রাম সম্প্রচার কেন্দ্র রয়েছে। শিক্ষা চট্টগ্রামে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে ভারতের অন্যান্য স্থানের মতো ধর্ম ভিত্তিক তিন ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। আরবি নির্ভর মুসলমানদের জন্য মক্তব-মাদ্রাসা, সংস্কৃত ভাষা নির্ভর হিন্দুদের জন্য টোল-পাঠশালা-চতুষ্পাঠী এবং বৌদ্ধদের জন্য কেয়াং বা বিহার। সে সময় রাষ্ট্রাচারের ভাষা ছিল ফারসি। ফলে হিন্দুদের অনেকে ফারসি ভাষা শিখতেন। আবার রাষ্ট্র পরিচালনা এবং জনসংযোগের জন্য মুসলিম আলেমদের সংস্কৃত জানাটা ছিল দরকারী। এ সকল প্রতিষ্ঠানে হাতে লেখা বই ব্যবহৃত হতো। ইংরেজদের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থার আগ পর্যন্ত এই তিন ধারাই ছিল চট্টগ্রামের শিক্ষার মূল বৈশিষ্ট্য। ১৭৬০ সালে কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠত হলেও ইংরেজি শিক্ষা বিস্তারের কোন উদ্যোগ দেখা যায় নি, সমগ্র ভারত বর্ষে। ১৭৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত কলকাতা মাদ্রাসা ছাড়া শিক্ষা বিস্তারে কোম্পানির আর কোন উদ্যোগ ছিল না। ১৮১৩ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারতে শিক্ষা বিস্তারের জন্য আইন পাশ করে। এর পর ভারতের বিভিন্ন স্থানে মিশনারী স্কুলের সংখ্যা বাড়ে তবে ১৮৩৬ এর আগে চট্টগ্রামে সে মাপের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে নি। ১৮৩৬ সালে জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন চট্টগ্রাম জেলা স্কুল নামে প্রথম ইংরেজি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান চালু করে। এলাকার খ্রীস্টান মিশনারীরা ১৮৪১ সালে সেন্ট প্লাসিডস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৪৪ সালে ভারতের বড়লাট ল্ড হার্ডিঞ্জ রাজকার্যে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ইংরেজি জানা আবশ্যক ঘোষণা করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ে। ১৮৫৬ ও ১৮৭১ সালে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হলেও সেগুলো ছিল স্বল্পস্থায়ী। ১৮৬০ খ্রীস্টাব্দে মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল প্রতিষ্ঠত হয়। ১৮৮৫ সালে শেখ-ই-চাটগাম কাজেম আলী চিটাগাং ইংলিশ স্কুল নামে একটি মধ্য ইংরেজি স্কুল (অর্থাৎ ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৮৮ সালে এটি হাই স্কুলে উন্নীত হয়। চট্টগ্রাম শহরের মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয় গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল (স্থাপিত ১৮৩৬), মুসলিম হাই স্কুল, ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারী ঊচ্চ বিদ্যালয়, ডাঃ খাস্তগীর বালিকা বিদ্যালয়, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়, সেন্ট প্লাসিডস,সেন্ট স্কলাসটিকা,নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ,চট্টগ্রাম সরকারী বালিকা ঊচ্চ বিদ্যালয়,চট্রগ্রাম সেনানিবাস উচ্চ বিদ্যালয়, অপর্ণাচরন সিটি করপোরেশন স্কুল,আগ্রাবাদ সরকারী কলোনী উচ্চ বিদ্যালয়, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, মহসিন স্কুল(স্থাপিত ১৮৭৪), হাতে খড়ি উচ্চবিদ্যালয়,আগ্রাবাদ বালিকা বিদ্যালয় ইত্যাদি।এছাড়াও শহরের বাইরে আরও কিছু ভাল মানের স্কুল কলেজ রয়েছে যেমন চুয়েট স্কুল এন্ড কলেজ যেটি রাউজানে অবস্তিত। উল্লেখযোগ্য কলেজের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম কলেজ, মহসিন কলেজ, সরকারী বাণিজ্য কলেজ, সিটি কলেজ এবং আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ। চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, যা শহরের ২২ কিলোমিটার উত্তরে ফতেহাবাদে অবস্থিত। চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং কারিগরি ও প্রকৌশলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা প্রদান করা হয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে রয়েছে ,বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি), আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি),প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, ইত্যাদি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ চিকিৎসা শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র। এছাড়া শহরে বেসরকারী মেডিকেল কলেজ ইউএসটিসি,মা ও শিশু হাস্পাতাল মেডিকাল কলেজ, সাউদার্ন মেডিক্যাল কলেজ, চট্টগ্রাম ডেন্টাল কলেজ রয়েছে। ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষঠান গুলোর মধ্যে আছে সানশাইন গ্রামার স্কু্ল,চিটাগাং গ্রামার স্কুল,বে ভিউ, লিটল জুয়েলস, সামাফিল্ডস স্কুল, রেডিয়্যান্ট স্কুল, সাউথ পয়েন্ট স্কুল, সাইডার ইন্টা্ন্যাশনাল স্কুল,মাস্টারমাইন্ড স্কুল,চাইল্ড হেভেন স্কুল,প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।শহরের একমাত্র আমেরিকান কারিকুলাম ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিসঠান উইলিয়াম কেরি একাডেমি। খেলাধূলা বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামে বিভিন্ন জনপ্রিয় খেলা যেমন ফুটবল, ক্রিকেট, বিলিয়ার্ড, টেবিল টেনিস, এথলেটিক্স, স্নুকার, দাবা ইত্যাদি প্রচলিত রয়েছে। চট্টগ্রামের ঐতিহাসিকগণ অবশ্য বেশ কিছু প্রাচীন খেলার কথা উল্লেখ করে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে বলীখেলা, গরুর লড়াই. তুম্বুরু, চুঁয়াখেলা, ঘাডুঘাডু, টুনি ভাইয়র টুনি, তৈইক্যা চুরি, হাতগুত্তি, কইল্যা, কড়ি, নাউট্টা চড়াই, ডাংগুলি, নৌকা বাইচ ইত্যাদি। এর মধ্যে জব্বারের বলীখেলার কারণে বলীখেলা, কুস্তি এবং নৌকা বাইচ এখনও চালু আছে। গ্রামাঞ্চলে বৈচি, ডাংগুলি এখনো দৃষ্টি আকর্ষন করে। তবে, অন্যগুলোর তেমন কোন প্রচলন দেখা যায় না। জাতীয় পর্যায়ে চট্টগ্রামের খেলোয়াড়দের যথেষ্ঠ সুনাম রয়েছে। দেশের বাইরে থেকে সুনাম আনার ক্ষেত্রেও চট্টগ্রামের ক্রীড়াবিদদের অবদান উল্লেখযোগ্য। আইসিসি ট্রফি জেতা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দলনেতা ছিলেন আকরাম খান। কমনওয়েলথ গেমস থেকে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম স্বর্ণপদক অর্জনকারী চট্টগ্রামের শুটার আতিকুর রহমান। চট্টগ্রামের স্প্রিন্টার মোশাররফ হোসেন শামীম জাতীয় পর্যায়ে পরপর ৭ বার ১০০ মিটার স্প্রিন্টে চ্যাম্পিয়ন হোন। এ কারণে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ দল যখন প্রথম বিশ্ব অলিম্পিকে অংশ নেয় তখন মোশাররফ হোসেন শামীম বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র ক্রীড়াবিদ ছিলেন। চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গণের মূল কেন্দ্র চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম। চট্টগ্রামের প্রধান ক্রীড়া সংগঠন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া পরিষদের প্রধান কার্যালয় এই স্টেডিয়ামে। ঐতিহাসিক স্থানসমূহঃ লালদিঘী ও লালদিঘী ময়দান, বদর আউলিয়ার দরগা, বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার, সিটি কর্পোরেশন ভবন, আদালত ভবন, চেরাগি পাহাড় মোড় (স্মৃতি মিনার),জে এম সেন হল, পাহাড়তলীতে প্রীতিলতার স্মৃতি স্মারক, পার্ক , বিনোদন ও প্রাকৃতিক স্থানঃ ফয়'স লেক, জাতি-তাত্ত্বিক যাদুঘর (চট্টগ্রাম), মুসলিম হল, স্বাধীনতা পার্ক, ডিসি হিল পার্ক। স্মৃতিসৌধ ও স্মারকঃ শহীদ মিনার, ওয়ার সিমেট্রি।
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন......
ফেসবুক ফেন পেজ এ লাইক দিতে প্লিজ ভুলবেন না
সবাইকে ধন্যবাদ ......
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




