
চিত্র: মাথাভাঙ্গা নদী, জেলা নির্বাচন অফিসের সাথে, চুয়াডাঙ্গা।
23°38'04.7"N 88°48'42.4"E
কোন কারন ছাড়াই, মানটা খারাপ। মনে চাচ্ছে ইউরোপের উন্নত দেশের কোন নির্জন নিরিবিলি গ্রামে চলে যাই। সেই দেশের নাগরিকত্ব নেই। এবং সেখানে একটি বাড়ি কিনি। সেই বাড়িতে শুধু আমি একাই থাকবো। আমার বাসায় অন্য কাউকে থাকতে দিবো না। মেহমান আসলেও তাদের জন্য হোটেল ভাড়া করবো।
আজ মনে পড়ছে চুয়াডাঙ্গা জেলার কথা। ২০১৯ সাল। সদ্য স্নাতক পাশ করেছি। আব্বুর সরকারি কোর্য়াটার্ যে কলোনী তে, সেই কলোনীর সীমানার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মাথাভাঙ্গা নদী। আমি ওয়াচ টাওয়ার এর উপড়ে বসে নদী দেখতাম। আর আকাশ কুসুম চিন্তায়, হারিয়ে যেতাম। আগেই বলেছি, তখন সদ্য স্নাতক পাশ করেছি। চোখে রঙ্গীন সপ্ন। সরকারি চাকরি করবো। টাকা কামাবো। নতুন নতুন ইলেকট্রনিক ডিবাইস কিনবো। লেপটপ কিনবো। আইফোন কিনবো। বাসায় ব্রডব্যান্ড লাইন লাগাবো। আর কতই না আকাশ কুসুম চিন্তা করেছি। এই সময় ছেলেরা বিয়ের ও চিন্তা করে। আমি বিয়ে চিন্তা করি নাই। আমি মোটা। বেশী স্থাস্থ্যের জন্যে আমাকে বিদখুটে দেখতে লাগে। তাই আমি বিয়ের আশা তখন ছেড়েই দিয়ে ছিলাম।
চুয়াডাঙ্গার সেই বাসাটি আমাকে যেন এখনো ডাকে। মনে হয় যেন বিল্ডিং এর প্রতিটি ইট আমাকে স্মরন করে। তারা বলে “হে ইমরোজ, তুমি কই?” সে সময় আমার সাথে আমাদের ভবেরচর পোস্ট মাষ্টারের সাখে ভালো সুসম্পর্ক ছিলো। এখনো ভালো সম্পর্ক আছে। সে সময় উনার সাথে নিয়মিতি যোগাযোগ রাখতাম। অনেকে যেমন ভালো বন্ধুর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে, আমিও তার সাথে যোগাযোগ রাখতাম। আর যোগাযোগ রাখতাম আমাদের মসজিদের সাবেক ইমামের সাথে। তখন ঐ ইমাম কে চাকরিচ্যুদ করা হয়। ঐ ইমাম কিন্তু কাঠ মোল্লা ছিলেন না। তিনি অসুখ হাসপাতালে যেতে বলতেন। সবাই কে ভালো করে লেখাপড়া করতে বলতেন। তিনি কাউকে পানি পড়া, কলম পড়া দিতেন না। এই সৎ থাকার কারনে তাকে চাকরিচুৎ করা হয়। আমি জীবনে অনেক কাঠমোল্লা দেখেছি। তাদের সাথে চলি নাই। কাঠমোল্লাদের মনে মনে ঘৃণা করতাম। তাদের আমি এড়িয়ে চলতাম। কিন্তু সাবেক সেই হুজুর এখন টেইলারি কাজ করেন। এখন ভালো সাবলম্বী।
আমি সেই পোস্ট মাষ্টার ও হুজুর কে নিয়মিত চিঠি লিখতাম। কতবার যে চুয়াডাঙ্গা পোস্ট অফিস গেছি তার কোন হিসাব নাই। তারা সবাই এক সপ্তাহের ভেতরে চিঠি পেতেন। চিঠি পেয়ে তারা ফোন দিতেন। চিঠি তে মনের সকল আবেগ লিখা যায়। সেই আবেগ ফেসবুক ম্যাসেজ্ঞার, হোয়াট এপে পাই না।
সেখানে আন্টি বয়সী এক মহিলা থাকতো। খুব সুন্দর। তাকে খুব ভালো লাগতো। সে বিবাহিত ছিলো। একজন মানুষ আরেকজন মানুষ কে পছন্দ করবে, এটাই স্বভাবিক। তাকে আজ খুব মনে পড়ছে।
হয়তো একদিন আমি অনেক টাকার মালিক হবো। একটা বাড়ি থাকবে। একটি গাড়ি থাকবে। হয়তো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও রাউটারের ব্যবসা থাকবে। থাকবে না শরীরের শক্তি। থাকবে না শখ পূরন করার শারিরীক শক্তি। আমার মনে চায় দেশ বিদেশ ঘুরি।

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



