
আমি ভোটার ফরম জমা দিয়েছিলাম ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। উক্ত মাসে আমার আঙ্গুলের ছাপ ও ছবি তুলা হয়। আমি আমার জাতীয় পরিচয় পত্র হাতে পাই ২০১৯ সালে। আর স্মার্টকার্ড হাতে পাই ২০২২ সালে। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পযর্ন্ত আমি নির্বাচন অফিসে ঘুরেছি, ন্যাশনাল আইডি কার্ড হাতে পাওয়ার জন্য। কবে আসবে? কবে দিবে ইত্যাদি জানার জন্য যেতাম। এই ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পযর্ন্ত নির্বাচন অফিসে যেতে যেতে ওদের কাজ কারবার প্রায় বুঝে গেছি। তাই আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমার এই পোস্ট।
আমার আলোচনাটি একদম বেসিক লেভেলে:
প্রথমে নির্বাচন অফিস থেকে একটি ফরম বিতরন করা হয়। সেই ফরম নির্বাচন অফিসে জমা হয়। পরে আঙ্গুলের চাপ ও ছবি সংগ্রহ করার তারিখ ও স্থান ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হয়। অনেক সময় আঙ্গুলের চাপ ও ছবি সংগ্রহ করার তারিখ ও স্থান নোটিশ আকারে নির্বাচন অফিসে টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়।
আঙ্গুল এর ছাপ ও ছবি তোলা:
প্রথমে আঙ্গুলের ছাপ ও ছবি সংগ্রহের জন্য ভেন্যু নির্বাচন করা হয়। যেমন আমাদের ভবেরচর গ্রামের জন্য ভবেরচর ওয়াজীর আলী উচ্চ বিদ্যালয়। পরে নিদিষ্ট তারিখে একে একে উপস্থিত সবার ফ্রিংগার প্রিন্ট ও ছবি নেওয়া হয়। ফরমের সাথে ডিজিটাল জন্ম সনদ, বাপ মা এর জাতীয় পরিচয় পত্র, সর্বশেষ শিক্ষাগত সনদ নেওয়া হয়।
নাগরিকের তথ্য সার্ভারে প্রবেশকরণ:
একজন নাগরিকে তথ্য সার্ভারে প্রবেশ করানোর আগে সকল তথ্য যাচাই বাচাই করা হয়। বিশেষ করে জন্ম নিবন্ধন। জন্ম নিবন্ধন ভুল হলে বা ভুয়া জন্ম সনদ প্রদান করার ফলে অনেক সময় ঐ আবেদনটি বাতিল হয়ে যায়।
সকল তথ্য সার্ভারে এন্ট্রি হবার পর, এটা যাচাই করা হয় যে উক্ত ব্যাক্তি ডাবল ভোটার হয়েছে কি না? মানে সে যদি পূর্বে
ভোটার হবার পর যদি সে আবার ভোটার হয় হয় তাহলে তার পুরাতন জাতীয় পরিচয় পত্র ও নতুন জাতীয় পরিচয় পত্র দুইটাই লক হয়ে যাবে।
সব কিছু ঠিক থাকলে ১৮ বছর হলে ভোটার লিস্টে নাম ওঠবে। এখন তো মনে হয় ১৬ বছর হলেই ভোটার নিবন্ধন করানো হয়। আমাদের সময় এইটা থাকলে ভালো হতো। তবে ১৬ বছরের নাগরিকগণ ভোটার লিস্টে নাম ওঠবে না।
জাতীয় পরিচয় পত্র প্রাপ্তি:
এখন এই ওয়েব সাইড থেকে নতুন ভোটারদের আইডি কার্ড নামানো যায়। আবার এই লিংক থেকেই নতুন ভোটার এর জন্য ফরম পূরন করানো হয়। এই লিংক থেকে সংশোধন করানো হয়। এই সার্ভিস করোনা মহামারির পর শুরু হয়েছে।
আমাদের সময়। ভোটার লিস্টে নাম ওঠলে ভোটার আইডি কার্ড ছাপানোর জন্য টেন্ডার দেওয়া হতো। বা বিজি প্রেসে প্রিন্ট করা হতো। এই তথ্য আমি পাই নাই। আমাকে বলে নাই। তারপর জাতীয় পরিচয় পত্র যার যার উপজেলা নির্বাচন অফিসে পাঠানো হয়। পরে সময় ও সুযোগ বুঝে জাতীয় পরিচয় পত্র বিতরণ করা হয়।
যারা নিদির্ষ্ট সময়ে ফ্রিংগার প্রিন্ট দিতে পারেন নাই, তাদের কি হয়:
তারা সময় করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে আসবেন। ছবি তুলে আসবেন।
মৃত লোক ভোটার থেকে বাদ দেয় কিভাবে:
একজন লোক মারা গেছেন, প্রমাণ সাপেক্ষে তার নাম ভোটার লিস্ট থেকে কেটে দেওয়া হয়। যেমন রফিক সাব মারা গেলেন। তার মৃত্যু সনদ নিয়ে, তার সন্তানেরা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করেন তাহলে তাহলে রফিকের নাম ভোটার লিস্ট থেকে কাটা যাবে। এখন কোন সন্তানের ঠেকা পড়ছে পিতার মৃত্যু সনদ নিয়ে নির্বাচন অফিসে যাওয়ার। সন্তানেরা বড়জোর ভূমি অফিসে যাবে।
মনে করেন আপনি শ্রিনগর উপজেলায় ভোটার। আপনি গজারিয়া উপজেলায় বাড়ি করেছেন। সেখানে ভোটার হবেন।
এই ক্ষেত্রে এই ফরমটি ডাউনলোড করবেন। এই ফরমটি পূরন করবেন। কারেন্ট বিলের কাগজ, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট/ ওর্য়াড কাউন্সিলর এর প্রত্যয়ন পত্র ও হোল্ডিং ট্যাক্স ফরমের সাথে জমা দিবেন। ছয় মাসে কাজ হয়ে যাবে।
আমি প্রায় ১০/১২ জন সেনা সদস্য, পুলিশ সদস্য ও সিভিল লোকদের এই ভোটার ট্রান্সফার করেছি। ২০০৭ সালে যখন এই আইডি কার্ড করা হয়, অনেকে ছুটি না পাওয়ার জন্য তারা কর্মস্থলে ভোটার হয়েছিলো। তাদের ভোটার তাদের কর্মস্থল ছেড়ে যার যার এলাকায় নিয়ে গেছি।
আজ এই পযর্ন্ত। আর কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



