আমি ছোট কাল থেকেই ভীতু ছিলাম। বন্ধুদের কাছ থেকে অপমান হবার ভয়, তাদের কাছে উপহাসের পাত্র হবার ভয়। বাসাতেও শান্তি নেই। একটু থেকে একটু ভুল হলে আম্মু এত বকা দিতো যে যা বলার বাহিরে। তখন নিজেকে খুব ছোট মনে হতো। কারন স্কুলে কোন সহপাঠীদের কাছ থেকে সহযোগিতা মূলক আচরন পাই নি। বাসাতেও আতঙ্কে থাকতাম। ঘরে কেউ কোন ভুল করলেই হতো! সেটার দায় আমার উপর চাপতো, এবং আমি ধমক খেতাম।
আর কোন দিন প্রাণ খুলে হাসতেও পারে নি! কারন সেই হাসি বেশীক্ষণ স্থায়ী হতো না। কারন আমার মুখে হাসি দেখলেই কেউ না কেউ খোটা দিয়ে আমার মন খারাপ করে দিতো।
আমার একটা প্রিয় বিলাই ছিলো৷ তাকে দেখলে খু্ব ভালো লাগতো। সে ও আমাকে ছেড়ে চলে যায়। তারপর আমি যেন একা হয়ে গেলাম।
আমার পছন্দের স্থান ছিলো আমার রুম। আর প্রিয় সময় ছিলো রাতের বেলা। আমার রুমে এবং রাতের বেলা আমাকে কেউ ডিসটার্ব করতো না।
সে সময় রাতে পড়ার টেবিলে বসে ভাবতাম, যে দিন আমি শুক্রাণু অবস্থায় ছিলাম, সেদিন কেন রেইসে জিতে গেলাম! আমার অন্য প্রতিযোগি কেন জিতলো না!!!
যখন সপ্তম পড়তাম, তখন একজন মেডাম ছিলো যে কিনা শুধু শুধু আমাকে ধমক দিতো। আর সহপাঠীরা মজা করে হাসতে। আর সহপাঠীরা তো যে যেভাবে পারতো অপমান অপদস্ত করিতো। কেন জানি তখন নিজেকে খু্ব অসহায় লাগতো।
শুধু রাতের বেলা একটু ভালো লাগলো। তাও চার দেয়ালের মাঝে। আমার রুমে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপন মনে আষাঢ়ে গল্প ভাবতাম। যেমন আমি গোয়েন্দা হবো, উকিল হবো ইত্যাদি ইত্যাদি। রাতে একটুও ভয় করতো না। বরং রাতের নৈসর্গিক সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করতো।
নানী বাড়ি বলেন বা দাদী বাড়ি বলেন, কোন জায়গায় আমি শান্তি পাই নি। সবাই আমাকে খোচা মেরে খাটো করে কথা বলতো।
এখন ও রাতের নৈসর্গিক সৌন্দর্য ভালো লাগে। বিশেষ করে রাতে যখন চাঁদ ওঠে। আমি চাঁদের সাথে কথা বলি। গাছের সাথে কথা বলি। তারা আমার বন্ধু। তাদের সাথে মন খুলে কথা বলা যায়। আর কারো সাথে কথা বলা যেতো না।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৩