somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

।।--দ্যা লাইফ ইন অ্যান ইজেল--।।

১৬ ই জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



-"বিরক্ত লাগছে।"
-"হম।"
-"এখন কি করবো?"
-"তোমার বিরক্তির প্রহর শুরু হয়েছে মাত্র। একটা শতাব্দীও কেটে যেতে পারে। স্বাভাবিকভাবে নাও।'
-"প্রচণ্ড বিরক্ত লাগছে।"
-"তো কি করতে চাও?"
-"একটা আঙুল কেটে ফেলি?"
-"ফেলো। যন্ত্রণা তোমার বিরক্তিকে প্রতিস্থাপিত করুক।"
-"কোনটা কাটবো?"
-"নামহীনটা কাটো। অনামিকা। এটা নাকি আবার রিং ফিঙ্গার!! হা হা হা।"

-"নাহ ,থাক। কাটবোনা।"
-"কেন? ভয় পাচ্ছো?"
-"নাহ। কিন্তু একটা সময়ে বড্ড ছেলেমানুষি মনে হবে কাটাকুটিকে। অপরিণত বয়সের কিশোর কিশোরীরা প্রেমে ব্যর্থ হলে এগুলো করে।"
-"বড়ই অদ্ভুত তো!! আর পরিনতরা কি করে? ভালোবাসার কাউকে নির্দ্বিধায় চলে যেতে দেয়?"
-"কি জানি, হয়তো।"
-"তোমার যন্ত্রণা দেখতে খুব ইচ্ছা করছে। দেখাবে?"
-"ঠিক আছে , কেটেই ফেলি তাহলে, কি বল?"
-"হ্যা, ফেলো।"

-"কেটেছি, দেখো।"
-"কাটার সাথে সাথে দর দর করে তো কিছু তরল পদার্থ বের হল। যন্ত্রণা কোথায়?"
-"ওই তো , দেখতে পাচ্ছোনা? গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে ছোপ ছোপ যন্ত্রণা? দেখেছো কি সুন্দর?"
-"হম, অবিশ্বাস্য!!! আমি আজ প্রথম শিখলাম।"

-"আসো, তবে আজ তোমাকে রঙ চেনাই।"
-"রঙ, রঙ। রঙ কি?"
-"রঙ একটা ভাষা। শিখতে চাও?"
-"চাই, চাই। আমি শিখতে চাই। তোমাদের হিসেবে আমি এখনো শিশু। এ চাইল্ড মাস্ট লারন।"

-"এই যে দেখো এটা, এটার নাম সবুজ।"
-"সবুজ মানে কি?"
-"সবুজ মানে তারুন্য, সজীবতা।"
-"তোমার বয়স না আজ ২৪ হলো ?"
-"হ্যাঁ।"
-"তাহলে তোমার মাঝে সবুজ দেখতে পাচ্ছি না কেন?"
-"নষ্ট হয়ে গেছে।"
-"সবুজ ভালো লাগেনি। এটা কি?"
-"ও, এটা? এটার নাম আসমানি।"
-"আসমানি!! কি অদ্ভুত নাম!! এটা কিসের রঙ?"
-"আমি বলি উদারতা, কেউ বলে ভালবাসা।"
-"কেন? কেন তুমি উদারতা ভাবো এটাকে?"
-"উদারতা আকাশের মতোই বিস্তীর্ণ, বিশাল। সীমানা নেই যে তার, তাই তো সে আকাশি।"
-"আর ভালবাসা?"
-"কি জানি, ভালবাসা কি আর সীমাহীন হয়? ভালোবাসার তো শেষ আছে।"
-"ভালোবাসার জন্ম আছে, ভালোবাসার মৃত্যু আছে। ভালোবাসার কি প্রান আছে?"
-"হা হা হা। হাসালে দেখছি। নাহ, অনুভূতিদের প্রান থাকে না। অনুভুতিরা প্রানের গভীরে বেচে থাকে নিশ্চুপে। পরাশ্রয়ী। হা হা।"

-"তুমি হাসছো কেন? এটা কি আনন্দ? আনন্দের রঙ কি?"
-"আনন্দের আলাদা কোন রঙ নেই। আনন্দ লুকিয়ে থাকে সব রঙের ভিতরেই। তাকে খুজে বের করে আনতে হয়।"

-"তুমি পারো? খুজতে?"
-"নাহ, বিরক্ত লাগে।"
-"হম। এইযে গাঢ় জমাট বাধা এক টুকরো অন্ধকারের মতো রঙ দেখতে পাচ্ছি, কি এটা? এটাই কি কালো?"
-"হ্যা, তুমি ঠিকই ধরেছো। এটাই কালো। কালো কিসের রঙ জানো?"

-"কিসের?"
-"আভিজাত্যের,দম্ভের রঙ। অবজ্ঞার প্রভু কালো।"
"তাই!!" চিৎকার করে ওঠে সে। "আমি কালো হবো। আমি কালো ভালবাসি!! আসো, শুধু কালোকে রেখে আস্তে আস্তে সব রঙ সরিয়ে ফেলি।"
"ধুর বোকা। তাহলে স্বপ্নও যে মুছে যাবে জগত থেকে। রঙ বেরঙের স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাঁচবে?"
"হম।" হতাশা আচ্ছন্ন করে তাকে।

-"আসো, এটা দেখো। এটা বৈরাগ্য এর রঙ।"
-"বৈরাগ্য? মানে বিরাগ? কি বিচ্ছিরি!!! কি এটা?"
-"এটা হলুদ।"
-"ইশ! দেখেছো কি কটকটে রঙ? একেবারে চোখে এসে লাগে। এটার বিকর্ষণ ক্ষমতা এতো প্রবল কেন? ঠিক যেন সূর্যের মতো!!"

-"হ্যা, সূর্য। গভীর বিরাগ সূর্যের। সূর্য অনেক একা। একটা সূর্য আরেকটা সূর্যের কাছ থেকে শুধু দুরেই সরে যায়, কাছে আর আসেনা।"

-"তোমার মাঝেও তো কিছু হলুদ দেখতে পাচ্ছি।" অবজ্ঞাভরা কণ্ঠে জবাব দেয় সে। "হলুদ ছাড়া তোমার শরীরের বাকি অংশগুলো সব একই রঙের। এই রঙটার সাথে আসমানি রঙটার অনেক মিল। তবে এটা অনেক গাঢ়। এটার নাম কি?"
-"এটার নাম নীল। গাঢ় নীল।"
-"বাহ, সুন্দর তো।"
-"হ্যা, সুন্দর। কষ্টরা সুন্দর। সুন্দর এবং গভীর। সমুদ্রের মতোই গভীর। নীল। কষ্টের রঙ নীল।"
-"নীল এর সাথে হলুদ এ তোমাকে বেমানান লাগছে।"
-"আমি জানি। তবে এটা সত্যি, আমার মাঝে দুটি রঙ একসাথে অবস্থান করতে পারবে না। যেকোনো একটা থাকবে, একটা বিলীন হবে। আমি তাই অপেক্ষা করে আছি।"

-"ইশ! তোমার আঙ্গুল থেকে তরল পড়ে সারা মেঝে তো ভরে গেলো। এটারও তো রঙ আছে একটা। এই পৃথিবীতে আমি এই রঙটা অনেক দেখেছি, অনেক। অথচ তুমি এটাকে এড়িয়ে গেলে। এটার কথা বললে না, কেন?"
-"ওহ , লাল? এটা আমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। কেন জানো?"
-"কেন?"
-"এটাতে সত্য আর মিথ্যা মিশানো। এটাতে মায়া মেশানো। এটাতে কামনা মেশানো। আমি তাদের আলাদা করতে পারিনা। তখন আমার বড় অসহায় লাগে। লাল বিভ্রমের রঙ। মায়ার বিভ্রম, বিভ্রমের মায়া। আমার লাল ভালো লাগে না।"

-"লাল এর মাঝে তাহলে আনন্দ নেই?"
-"আছে। আসো, খুজে বের করে দেখাই তোমাকে।"


চুপ চুপ করে ভেজা জমে থাকা লাল রক্তের মাঝে গভীর আগ্রহে তারা আনন্দ খুজতে থাকে।












সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:০০
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×