আমাদের মধ্যে অনেক ট্যালেন্টেড ছেলেপুলে ছিল। যারা ক্লাসে বরাবরই ১ থেকে ১০ থাকত। আমি ক্লাসে বুঝতাম ভাল। সবচেয়ে প্রথম যেই দু এক জন বুঝত তাদের মধ্যেই থাকতাম। কিন্তু আমি পরীক্ষায় ১-১০ এ থাকতাম না। যাই হোক, আমি যে খুব অলস ছিলাম সেটাই মনে করতাম। পড়াশুনাকে অত ধ্যান জ্ঞান মনে করতাম না। সেটাই হয়ত আমার ব্যার্থতার কারণ ছিল।
রহস্যের উৎঘাটন করি স্কুলে থাকতে আমাদের জনৈক মেধাবীকে দেখলাম নকল করতে। আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারি নাই। তবুও ধরে নিলাম, তারা মেধা তালিকায় প্রথম দ্বীতিয় স্থানের জন্য হয়ত সামন্য কিছু নকল করে। যাইহোক ততদিনে আমি উদ্ধার করে ফেলেছি কম বেশি সবাই নকল করে শুধু আমি ছাড়া। আমি হয়ত খুব ভীতু প্রকৃতির ছিলাম কিংবা সেই যোগ্যতা আমার ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিন পরীক্ষার আগে দেখলাম আমাদের শামিম ওসমান (ইচ্ছা করেই ছদ্দ নাম) নকল নিয়ে আসছে। তার মেধা নিয়ে আমার কোনই সন্দেহ নাই। আমি অবাক হয়ে বললাম তুই তো এইটা পারিস নকল আনছিস কেন! ও বলল, আমি মুখস্ত লেখলে আমার তো কিছু কিছু বাদ পরবে। কিন্তু যারা নকল করবে ওদের তো আর কিছু বাদ পড়বে না। গ্রেডে তো লেখা থাকবে না কোনটা নকল ছাড়া। অবশেষে, আমি উদ্ধার করলাম কেন মেধাবীদেরও নকল করতে হয়।
এই ভাবে আমরা আমাদের মেধাবী সন্তানদেরও ক্রিমিনাল করছি। কিন্তু মেধাবীরা সহজে ক্রিমিনাল হয় না। সেটা আমার বন্ধুদের ভাল ভাল অবস্থানে দেশের জন্য কাজ করতে দেখে বুঝতে পারি। কিন্তু এটাও জানি অনেক মেধাবী এই ক্রিমিনাল হতে না পেরে নিভে যায় জ্বলে উঠার আগেই। যারা এই হোস্টাইল দুনিয়াই ক্রমিনালদের সাথে এডজাস্ট করতে পারছে, তাদের সাধুবাদ। আর যারা পারে নাই, তাদের জন্য সমবেদনা রইল। ধন্যবাদ সবাইকে।