সাকিব আল হাসান বাংলাদেশ ক্রিকেট এর গর্ব৷ কিন্তু ইদানিং তাকে নিয়ে হইচই খুব বেশি হচ্ছে৷ আসলে সেই হইচই করার উৎস তৈরি করে দিচ্ছে৷ অবশ্য ক্যারিয়ারের প্রথমদিকে অনেকটা ভদ্র টাইপের থাকলেও ইদানিং তার আচরণটা মাঝে মধ্যে ক্রিকেটার সুলভ থাকছে না৷ বিসিবিও মাঝেমধ্যে তাকে নিয়ে বাড়াবাড়িটা ঠিক বাড়াবাড়ির পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে৷
বিয়ের পর নাকি ছেলেরা সুশৃঙ্খল হয়ে ওঠে৷ কিন্তু সাকিবের ক্ষেত্রে সেটা ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে৷ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ চলাকালে সাকিব ভুলভাবে আউট হয়ে ফিরলে তার দিকে টিভি ক্যামেরা যেতেই তার স্পর্শকাতর অঙ্গ যেটা নাকি তার স্ত্রীকেই প্রদর্শন করার কথা সেটা সে ক্যামেরার বদৌলতে বিকৃত ভঙ্গিতে বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছিল৷ সেটা নিয়ে বিসিবিও বাড়াবাড়ি করে জরিমানা, নিষেধাজ্ঞা সবই আরোপ করেছিল৷ দেশের প্রতি বিন্দুমাত্র কমিটমেন্ট থাকলে সাকিবের আউট নিয়ে অনুতপ্ত হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু সে করেছিল উল্টোটা৷
কিছুদিন আগে ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ চলাকালে সাকিবের স্ত্রীকে কেউ ইভটিজিং করায় সাকিব সেখানে গিয়ে সেই ছেলেদের সাথে ধস্তাধস্তি করেছিল৷ কিন্তু নিয়মানুযায়ী ম্যাচ চলাকালীন কোন খেলোয়াড়ের ড্রেসিংরুমের বাইরে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ৷ যদিও স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইভটিজিং শুনে যে কারও মাথা গরম হতে পারে৷ তবে সাকিবের মত কোন ব্যক্তিকে নিশ্চয়ই নিয়ম ভেঙ্গে সাধারণ ছেলেদের মত ধস্তাধস্তি মানায় না৷ বিসিবির সিকিউরিটি ছিল তাদের ইনফর্ম করলেই আরও ভাল সমাধান পাওয়া যেত আশাকরি৷ সাকিবের স্ত্রীরও ম্যাচ চলাকালীন সময়ে স্বামীর মনোসংযোগে বিঘ্ন ঘটিয়ে এরকম নালিশ করাটাও ঠিক হয়নি৷ তাছাড়া সাকিবের স্ত্রীকে নিয়ে ইভটিজিং এই প্রথম নয়৷ এর আগে বিমানবন্দরসহ আরও কয়েকবার শোনা গেছে যা আমাদের আরও অনেক খেলোয়াড় আছে যাদের স্ত্রী নিয়ে কেউ কটু কথা তো বলেই না৷ বরং সবাই শ্রদ্ধা করে বলেই আমার বিশ্বাস৷ সুতরাং সাকিবের স্ত্রীর ক্ষেত্রে কেন বারবার এই ঘটনাটা ঘটছে সেটা তারা সচেতন হলেই ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করি৷
সর্বশেষ সিপিএল এ খেলা নিয়ে আবার বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ ঐ টুর্নামেন্টে খেলতে না দিলে সাকিব আল হাসান টেস্ট ও ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ার হুমকী দিয়েছে৷ এদিকে সিপিএল এ খেলতে যাওয়ার আগে বিসিবির কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুমতি নেয়নি বলে হইচই শুরু করেছে বিসিবি৷ বিষয়টা নিয়ে মনে হয় এত হট্টগোল না করে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে সমাধান করা যেত৷
সাকিব যেমন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলও সাকিবের জন্য এরকম গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত৷ আজকের এই সাকিব হয়ে ওঠার পিছনে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলই ছিল একমাত্র প্লাটফর্ম৷ বাংলাদেশ দলে না খেললে আজকের এই সাকিব হয়ে ওঠা হত না৷ নিজেকে অপরিহার্য মনে করে যা খুশি তাই বলে দেওয়া বা করা নিশ্চয় জাতীয় দল তথা দেশের প্রতি দায়িত্বহীনতার প্রকাশ৷ বিসিবিও অন্য উপায়ে বিষয়টা সমাধান করতে পারত৷ তা না করে বিষয়টা জটিল করে তুলছে৷