somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

প্রশ্নবোধক (?)
আমি এক ফেরিওয়ালা ভাই,স্বপ্ন ফেরী করে বেড়াই...।হরেক রকম স্বপ্ন পাবে আশা কিংবা নিরাশার, জন্মভূমি মুক্ত করা কিংবা প্রিয় প্রেমিকার। আমার স্বপ্ন কিনতে হলে আস্ত পাগল হওয়া চাই........।

মহাকালের কাব্যনামা: ভালবাসা নয় ভাল লাগা

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিখ্যাতদের দাম্পত্য জীবন -

চরিত্রহীন, লুইচ্চা, লম্পট এই শব্দগুলো শুধু পুরুষদের বেলায় প্রযোজ্য, নারীদের বেলায় না ৷ যেসব পুরুষ চরিত্রহীন হয়, তারা কার সাথে চরিত্র নষ্ট করে? নিশ্চয় পুরুষের সাথে না ৷ কোন না কোন নারীর সংস্পর্শেই তাদের চরিত্র নষ্ট হয় ৷ আর সেসব নারীদের আড়ালে রেখে আমাদের সমাজ সব দোষ চাপিয়ে দেয় পুরুষের উপরে ৷

নারীদের প্রতি আমাদের অপরিসীম শ্রদ্ধার কারনে, কোনো নারী চরিত্রহীন হতে পারে, কোনো নারীর মাঝে লাম্পট্য থাকতে এসব আমরা ভাবতেই পারি না ৷ পুরুষদের মানবিক দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে সমাজ পুরুষকে চিহ্নিত করেছে কামুক ধর্ষক হিসেবে, আর নারীকে দিয়েছে দেবীর আসন ৷

আজকে আমরা জানবো উপমহাদেশের এমন একজন দেবীর দাম্পত্য জীবন নিয়ে ৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর এই প্রিয় ছাত্রীকে ডাকতেন, "প্রিয়দর্শিনী" বলে ৷ কে জানত এই প্রিয়দর্শিনী রাজনৈতিক মাঠের সাথে সাথে পুরুষদের হ্যার্টও কাঁপাবেন সমান তালে ৷ প্রিয় পাঠক, বলছিলাম উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনৈতিক শ্রীমতি ইন্দিরা নেহেরুর কথা ৷ ইন্দিরা নেহেরু এবং ফিরোজ জাহাঙ্গীরের প্রেম এক সময় ঝড় তুলেছিলো উপমহাদেশে ৷

অনেকে ফিরোজ জাহাঙ্গীরকে মুসলমান মনে করে ভুল করেন, তিনি ছিলেন জরাস্থুষ্ট্রীয় ৷ এটি পারস্যের অতিপ্রাচীন একেশ্বরবাদী ধর্মীয় মতবাদ ৷ এরা সাধারণত অগ্নিপূজক হয় ৷ এই ধর্মাবলম্বীরা পারস্য বা ইরান থেকে ভারতবর্ষে এসেছিলো বলে, এদেরকে পার্সীও বলা হয় ৷ ভারতের ধনকুবের রতন টাটা, অভিনেতা বোমান ইরানি, জন আব্রাহাম সহ অনেকেই পার্সী সম্প্রদায়ের ৷

ফিরোজের বাবা আনন্দ ভবনে মদ সাপ্লাই করতেন ৷ ফলে নেহেরু পরিবারের সাথে ফিরোজের পরিবারের সখ্যতা গড়ে উঠে ৷ ১৯৩০ সালে ফিরোজ একবার ইন্দিরাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ৷ তখন জওহরলাল নেহেরু এবং কমলা নেহেরু ইন্দিরার বয়স কম বলে সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ৷

১৯৩৬ সালে ইন্দিরার মাতা কমলা নেহেরুর মৃত্যু হলে, জওহরলাল নেহেরু তাকে পড়ালেখার জন্য ইংল্যান্ডে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পাঠিয়ে দেন ৷ ফিরোজ তখন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র ৷ সেখানে দু'জনের কাছে আসা এবং ভালোবাসা হয় ৷ ইংল্যান্ড থেকে ইন্দিরা তার বাবাকে প্রায় শ'খানেক চিঠি লেখেন ৷ যার প্রতিটিতে শুধু একটা কথাই থাকত, "বাবা, আমি ফিরোজকে ভালোবাসি ৷"

নেহেরু পরিবার ছিলো ব্রাক্ষ্মণ ৷ হিন্দু শাস্ত্রমতে, ব্রাক্ষ্মণ ব্যতীত অন্য যে কোন ধর্মের লোকই শূদ্র বা নিচু জাত ৷ নিচু জাতের সাথে ব্রাক্ষ্মণ সন্তানের বিয়ে হলে জাত যাবে ৷ ইন্দিরা-ফিরোজের প্রেম তখন রাষ্ট্র হয়ে গেছে ৷ "মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নাই", রাজনৈতিক মঞ্চে এ কথাটি বলা যত সহজ; বাস্তবে তার প্রমাণ দেওয়া অনেক কঠিন ৷ জওহরলাল নেহেরু পড়ে গেলেন উভয় সংকটে; একদিকে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, অন্যদিকে জাত ৷

উপায়অন্ত না দেখে নেহেরু মহাত্মা গান্ধীর দ্বারস্থ হলেন ৷ মহাত্মা গান্ধী ফিরোজ জাহাঙ্গীরকে নিজের পালকপুত্র এবং ইন্দিরা নেহেরুকে পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন ৷ ফিরোজ জাহাঙ্গীর হয়ে গেলেন ফিরোজ গান্ধী, আর ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী নেহেরু হয়ে গেলেন ইন্দিরা গান্ধী ৷

১৯৪২ সালে তাদের বিয়েটা হয়েছিলো হিন্দু ধর্মানুসারে ৷ হিন্দু ধর্মমতে একজন মানুষ পৃথিবীতে সাত বার জন্ম গ্রহণ করে ৷ এক জন্ম থেকে আরেক জন্মের ব্যবধানকে জন্মান্তর বলে ৷ স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের সাত জনমের সঙ্গী এই বিশ্বাস থেকেই, বিয়েতে তারা অগ্নিস্বাক্ষী রেখে সাত পাক খায় ৷

ইন্দিরা-ফিরোজ জুটির প্রেম, ত্যাগ, সংগ্রাম আদর্শ হতে পারত ভারতবর্ষের প্রেমিক যুগলদের কাছে ৷ কিন্তু সে বিয়েটাও টিকলো না ৷ বিয়ের মাত্র আট বছরের মাথায় ১৯৫০ সালে দুই সন্তান রাজীব গান্ধী এবং সঞ্জয় গান্ধীকে নিয়ে ইন্দিরা চলে আসে পিতা নেহেরুর কাছে ৷ জন্ম জন্মান্তরের সঙ্গী বলে হিন্দু ধর্মে সাধারণত ডিভোর্সের প্রচলন নেই ৷ তাদেরও ডিভোর্স হয়নি, তবে ইন্দিরা আর ফিরে যায়নি ফিরোজের ঘরে ৷

কি ঘটেছিলো তাদের সংসার জীবনে?

ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের আগে ও পরে একাধিক প্রেমে মজেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী ৷ ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্কের পূর্বে শান্তিনিকেতনে তিনি প্রেমে পড়েছিলেন এক জার্মান শিক্ষকের । ওই শিক্ষক তাকে জার্মান ভাষা শেখাতেন ।

ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্ক থাকাকালেই মোহাম্মদ ইউনুস নামের আরো একজনের সাথে প্রেম ছিল ইন্দিরার । কে এন রাও তার "নেহেরু ডায়নাস্টি" বইতে লিখেছেন, ইন্দিরার ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধী মূলত ইন্দিরা-ইউনুসের ছেলে । মোহাম্মদ ইউনুসের লেখা "পারসন, প্যাশন অ্যান্ড পলিটিক্স" বইতেও এর ইংগিত পাওয়া যায় ৷

বিষয়টি আরো পরিস্কার হয় সঞ্জয় গান্ধী নিহত হওয়ার মাধ্যমে ৷ ২৩ জুন ১৯৮০ সালে নয়া দিল্লির কাছে সাফদারজং এয়ার পোর্টের কাছে জরুরি অবতরণ করতে গিয়ে নিহত হন সঞ্জয় গান্ধী ৷ পরে জানা যায় বিমানে বোমা বা বিস্ফোরক জাতীয় কিছু ছিল । যা মাঝ আকাশে বিস্ফোরিত হয় । ঘটনা স্থলেই মারা যান সঞ্জয় গান্ধী ৷ এই ঘটনার আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ছিলো সঞ্চয়ের মমতাময়ী মা ইন্দিরা গান্ধী ৷ বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাজনীতিতে জেষ্ঠ্য পুত্র রাজীব গান্ধীর পথ পরিষ্কার করার জন্যই তিনি এ পথ বেছে নেন ৷

সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর তাকে কে মেরেছে, এটা বুঝতে বিন্দু মাত্র দেরি হয়নি সঞ্জয়ের স্ত্রী মেনকা গান্ধীর । জানা যায় কংগ্রেসের বিপরীতে তিনি নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু সফল হন নি । পরে এক সময় যোগ দেন ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি তে । তার পুত্র বরুণ গান্ধী বর্তমানে উত্তর প্রদেশের বিজেপির পার্লামেন্ট সদস্য এবং নরেন্দ্র মোদীর খুব কাছের মানুষ । বরুনের মা মেনকা বিজেপির হর্তা কর্তা দের একজন । রাহুল গান্ধী এবং বরুণ গান্ধী দুই জন কাজিন । কিন্তু দুইজন দুই মেরুর মানুষ ।

ইন্দিরা গান্ধী ও তার বাবা নেহেরুর ব্যক্তিগত সহকারী এম এ মাথাই তার আত্মজীবনী ‘'রেমিনিসেন্স অব দ্য নেহরু এজ’' বইয়ে লিখেন, নিজের স্বামী ফিরোজ গান্ধীকে খুব একটা পছন্দ করতেন না ইন্দিরা । প্রায় ১২ বছরের বেশি সময় ইন্দিরার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ছিল তার । অবাধ এই যৌন সম্পর্কের ফলে একবার ইন্দিরা গর্ভবতী হয়ে পড়েন । পরবর্তীতে ইন্দিরার গর্ভপাত ঘটানো হয় । একাধিক পুরুষের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত থাকার কারণে ইন্দিরার সঙ্গে মাথাই তার যৌন জীবনের সমাপ্তি টানেন বলে উল্লেখ করেন ৷

দুনিয়াটা একটা রঙ্গ মঞ্চ ৷ আমরা প্রত্যেকেই এ রঙ্গমঞ্চের অভিনেতা । অভিনয়ের মাধ্যমে সফলতার শীর্ষে আরোহন করে হয়ত দেবীর আসন লাভ করা যায়, কিন্তু মন থেকে সুখী হওয়া যায় কি? ইন্দিরা কি পেরেছিলেন মন থেকে সুখী হতে? স্বামী-সন্তান-সংসার সব কিছু তুচ্ছ করে ইন্দ্রিয় সুখের জন্য যারা একের পর এক পুরুষকে কাছে টানে, উত্তরটা তাদেরই ভালো জানা আছে৷বিখ্যাতদের দাম্পত্য জীবন -

চরিত্রহীন, লুইচ্চা, লম্পট এই শব্দগুলো শুধু পুরুষদের বেলায় প্রযোজ্য, নারীদের বেলায় না ৷ যেসব পুরুষ চরিত্রহীন হয়, তারা কার সাথে চরিত্র নষ্ট করে? নিশ্চয় পুরুষের সাথে না ৷ কোন না কোন নারীর সংস্পর্শেই তাদের চরিত্র নষ্ট হয় ৷ আর সেসব নারীদের আড়ালে রেখে আমাদের সমাজ সব দোষ চাপিয়ে দেয় পুরুষের উপরে ৷

নারীদের প্রতি আমাদের অপরিসীম শ্রদ্ধার কারনে, কোনো নারী চরিত্রহীন হতে পারে, কোনো নারীর মাঝে লাম্পট্য থাকতে এসব আমরা ভাবতেই পারি না ৷ পুরুষদের মানবিক দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে সমাজ পুরুষকে চিহ্নিত করেছে কামুক ধর্ষক হিসেবে, আর নারীকে দিয়েছে দেবীর আসন ৷

আজকে আমরা জানবো উপমহাদেশের এমন একজন দেবীর দাম্পত্য জীবন নিয়ে ৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর এই প্রিয় ছাত্রীকে ডাকতেন, "প্রিয়দর্শিনী" বলে ৷ কে জানত এই প্রিয়দর্শিনী রাজনৈতিক মাঠের সাথে সাথে পুরুষদের হ্যার্টও কাঁপাবেন সমান তালে ৷ প্রিয় পাঠক, বলছিলাম উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনৈতিক শ্রীমতি ইন্দিরা নেহেরুর কথা ৷ ইন্দিরা নেহেরু এবং ফিরোজ জাহাঙ্গীরের প্রেম এক সময় ঝড় তুলেছিলো উপমহাদেশে ৷

অনেকে ফিরোজ জাহাঙ্গীরকে মুসলমান মনে করে ভুল করেন, তিনি ছিলেন জরাস্থুষ্ট্রীয় ৷ এটি পারস্যের অতিপ্রাচীন একেশ্বরবাদী ধর্মীয় মতবাদ ৷ এরা সাধারণত অগ্নিপূজক হয় ৷ এই ধর্মাবলম্বীরা পারস্য বা ইরান থেকে ভারতবর্ষে এসেছিলো বলে, এদেরকে পার্সীও বলা হয় ৷ ভারতের ধনকুবের রতন টাটা, অভিনেতা বোমান ইরানি, জন আব্রাহাম সহ অনেকেই পার্সী সম্প্রদায়ের ৷

ফিরোজের বাবা আনন্দ ভবনে মদ সাপ্লাই করতেন ৷ ফলে নেহেরু পরিবারের সাথে ফিরোজের পরিবারের সখ্যতা গড়ে উঠে ৷ ১৯৩০ সালে ফিরোজ একবার ইন্দিরাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ৷ তখন জওহরলাল নেহেরু এবং কমলা নেহেরু ইন্দিরার বয়স কম বলে সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ৷

১৯৩৬ সালে ইন্দিরার মাতা কমলা নেহেরুর মৃত্যু হলে, জওহরলাল নেহেরু তাকে পড়ালেখার জন্য ইংল্যান্ডে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পাঠিয়ে দেন ৷ ফিরোজ তখন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র ৷ সেখানে দু'জনের কাছে আসা এবং ভালোবাসা হয় ৷ ইংল্যান্ড থেকে ইন্দিরা তার বাবাকে প্রায় শ'খানেক চিঠি লেখেন ৷ যার প্রতিটিতে শুধু একটা কথাই থাকত, "বাবা, আমি ফিরোজকে ভালোবাসি ৷"

নেহেরু পরিবার ছিলো ব্রাক্ষ্মণ ৷ হিন্দু শাস্ত্রমতে, ব্রাক্ষ্মণ ব্যতীত অন্য যে কোন ধর্মের লোকই শূদ্র বা নিচু জাত ৷ নিচু জাতের সাথে ব্রাক্ষ্মণ সন্তানের বিয়ে হলে জাত যাবে ৷ ইন্দিরা-ফিরোজের প্রেম তখন রাষ্ট্র হয়ে গেছে ৷ "মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নাই", রাজনৈতিক মঞ্চে এ কথাটি বলা যত সহজ; বাস্তবে তার প্রমাণ দেওয়া অনেক কঠিন ৷ জওহরলাল নেহেরু পড়ে গেলেন উভয় সংকটে; একদিকে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, অন্যদিকে জাত ৷

উপায়অন্ত না দেখে নেহেরু মহাত্মা গান্ধীর দ্বারস্থ হলেন ৷ মহাত্মা গান্ধী ফিরোজ জাহাঙ্গীরকে নিজের পালকপুত্র এবং ইন্দিরা নেহেরুকে পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন ৷ ফিরোজ জাহাঙ্গীর হয়ে গেলেন ফিরোজ গান্ধী, আর ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী নেহেরু হয়ে গেলেন ইন্দিরা গান্ধী ৷

১৯৪২ সালে তাদের বিয়েটা হয়েছিলো হিন্দু ধর্মানুসারে ৷ হিন্দু ধর্মমতে একজন মানুষ পৃথিবীতে সাত বার জন্ম গ্রহণ করে ৷ এক জন্ম থেকে আরেক জন্মের ব্যবধানকে জন্মান্তর বলে ৷ স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের সাত জনমের সঙ্গী এই বিশ্বাস থেকেই, বিয়েতে তারা অগ্নিস্বাক্ষী রেখে সাত পাক খায় ৷

ইন্দিরা-ফিরোজ জুটির প্রেম, ত্যাগ, সংগ্রাম আদর্শ হতে পারত ভারতবর্ষের প্রেমিক যুগলদের কাছে ৷ কিন্তু সে বিয়েটাও টিকলো না ৷ বিয়ের মাত্র আট বছরের মাথায় ১৯৫০ সালে দুই সন্তান রাজীব গান্ধী এবং সঞ্জয় গান্ধীকে নিয়ে ইন্দিরা চলে আসে পিতা নেহেরুর কাছে ৷ জন্ম জন্মান্তরের সঙ্গী বলে হিন্দু ধর্মে সাধারণত ডিভোর্সের প্রচলন নেই ৷ তাদেরও ডিভোর্স হয়নি, তবে ইন্দিরা আর ফিরে যায়নি ফিরোজের ঘরে ৷

কি ঘটেছিলো তাদের সংসার জীবনে?

ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের আগে ও পরে একাধিক প্রেমে মজেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী ৷ ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্কের পূর্বে শান্তিনিকেতনে তিনি প্রেমে পড়েছিলেন এক জার্মান শিক্ষকের । ওই শিক্ষক তাকে জার্মান ভাষা শেখাতেন ।

ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্ক থাকাকালেই মোহাম্মদ ইউনুস নামের আরো একজনের সাথে প্রেম ছিল ইন্দিরার । কে এন রাও তার "নেহেরু ডায়নাস্টি" বইতে লিখেছেন, ইন্দিরার ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধী মূলত ইন্দিরা-ইউনুসের ছেলে । মোহাম্মদ ইউনুসের লেখা "পারসন, প্যাশন অ্যান্ড পলিটিক্স" বইতেও এর ইংগিত পাওয়া যায় ৷

বিষয়টি আরো পরিস্কার হয় সঞ্জয় গান্ধী নিহত হওয়ার মাধ্যমে ৷ ২৩ জুন ১৯৮০ সালে নয়া দিল্লির কাছে সাফদারজং এয়ার পোর্টের কাছে জরুরি অবতরণ করতে গিয়ে নিহত হন সঞ্জয় গান্ধী ৷ পরে জানা যায় বিমানে বোমা বা বিস্ফোরক জাতীয় কিছু ছিল । যা মাঝ আকাশে বিস্ফোরিত হয় । ঘটনা স্থলেই মারা যান সঞ্জয় গান্ধী ৷ এই ঘটনার আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ছিলো সঞ্চয়ের মমতাময়ী মা ইন্দিরা গান্ধী ৷ বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাজনীতিতে জেষ্ঠ্য পুত্র রাজীব গান্ধীর পথ পরিষ্কার করার জন্যই তিনি এ পথ বেছে নেন ৷

সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর তাকে কে মেরেছে, এটা বুঝতে বিন্দু মাত্র দেরি হয়নি সঞ্জয়ের স্ত্রী মেনকা গান্ধীর । জানা যায় কংগ্রেসের বিপরীতে তিনি নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু সফল হন নি । পরে এক সময় যোগ দেন ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি তে । তার পুত্র বরুণ গান্ধী বর্তমানে উত্তর প্রদেশের বিজেপির পার্লামেন্ট সদস্য এবং নরেন্দ্র মোদীর খুব কাছের মানুষ । বরুনের মা মেনকা বিজেপির হর্তা কর্তা দের একজন । রাহুল গান্ধী এবং বরুণ গান্ধী দুই জন কাজিন । কিন্তু দুইজন দুই মেরুর মানুষ ।

ইন্দিরা গান্ধী ও তার বাবা নেহেরুর ব্যক্তিগত সহকারী এম এ মাথাই তার আত্মজীবনী ‘'রেমিনিসেন্স অব দ্য নেহরু এজ’' বইয়ে লিখেন, নিজের স্বামী ফিরোজ গান্ধীকে খুব একটা পছন্দ করতেন না ইন্দিরা । প্রায় ১২ বছরের বেশি সময় ইন্দিরার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ছিল তার । অবাধ এই যৌন সম্পর্কের ফলে একবার ইন্দিরা গর্ভবতী হয়ে পড়েন । পরবর্তীতে ইন্দিরার গর্ভপাত ঘটানো হয় । একাধিক পুরুষের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত থাকার কারণে ইন্দিরার সঙ্গে মাথাই তার যৌন জীবনের সমাপ্তি টানেন বলে উল্লেখ করেন ৷

দুনিয়াটা একটা রঙ্গ মঞ্চ ৷ আমরা প্রত্যেকেই এ রঙ্গমঞ্চের অভিনেতা । অভিনয়ের মাধ্যমে সফলতার শীর্ষে আরোহন করে হয়ত দেবীর আসন লাভ করা যায়, কিন্তু মন থেকে সুখী হওয়া যায় কি? ইন্দিরা কি পেরেছিলেন মন থেকে সুখী হতে? স্বামী-সন্তান-সংসার সব কিছু তুচ্ছ করে ইন্দ্রিয় সুখের জন্য যারা একের পর এক পুরুষকে কাছে টানে, উত্তরটা তাদেরই ভালো জানা আছে৷
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১১
১১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×