সেদিন দুপুরে রোকসানা যা বলে তা শুইনা মনে হৈল আমার কামোৎসাহে কেডা জানি এক কলসি ঠান্ডা পানি ঢাইলা দিল । ওর নাকি রক্ত যাওনের ডেট আরো দুইদিন আগে পার হৈয়া গেছে । এখনো কুনো খবর নাই । মাঝে মইধ্যে একদিন দুইদিন এদিক সেদিক হয় বৈলা গত দুইদিন কিছু কয় নাই । তয় আইজকা না হওয়া মাইনে ঝামেলা মনে হয় কিছু একটা হৈয়াই গেছে । আমি কই ঝামেলা হৈব কেন । আমি তো কুনোদিন ঢুকাই নাই । তুই আর কারো লগে কিছু করস নাইতো । নিজেই জানি এইটা একটা ফাউল কথা । কিন্তু মাথার ভিতরডা ফাঁকা । চিন্তা করতে পারতাছি না । মনে হৈল তাই কৈয়া দিলাম । ঝরঝর কৈরা কাঁইদা দেয় মেয়ে । আমি ওর কাঁধে হাত রাখি । বলি, দাড়া দেখি কি করন যায় । করার নাই কুনো বালও । জীবনে এই ঝামেলায় পড়ি নাই কুনোদিন । মাথার মইধ্যে আমি জানিনা, আমি কিচ্ছু জানিনা , আমার কুনো দোষ নাই এই জাতীয় হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে দোকানে চৈলা যাই আমি ।
ছুডকালে মনে করতাম বিয়া করলেই পুলাপান হয় । ক্যামনে কি জানতাম না । তারপরে মনে করতাম একলগে রাইতে শুইলে মনে হয় পুলাপান হয় । আব্বা আম্মারে দেখতাম রাইতে একলগে শোয় । যাগোই বিয়া হয় তাগোরেই দেখতাম রাইতে একলগে শোয় । বাল গজানির পর খুরশিদ এর কাছ থাইকা শিখলাম ক্যামনে কি করলে কি হয় । খুরশিদ শিখছে ওর এক খালাত ভাইর কাছ থাইকা । হারামজাদা কি আমারে ভুল শিখাইলো । না তাতো হওনের কথা না । এরপরে আরো অনেকের কাছ থাইকাই শুনছি জিনিস ভিতরে না গেলে কুনো সমস্যা নাই । পুলাপান হওনের কুনো সম্ভাবনা নাই । তাইলে সমস্যাডা কুন জায়গায় । রোকসানারে আইজ এতদিন ধৈরা চিনি । হাসিখুশি হৈলেও , সেইডা সবার সাথে না । খালেদার মত মাইয়া দুইদিনেই বুঝন যায় । রোকসানা ঐরকম না । আর কারো লগে কিছু করনের কুনো সম্ভাবনা নাই । তাইলে ক্যামনে এই গজব , ক্যামনে ?
ঐদিন আর আছরে মসজিদে যাই না । রেলরাস্তা ধৈরা হাইটা গেরামের বাইরে চৈলা যাই । ছুড একটা খালের মত আছে । ঐটার পাশে বসি । জীবনে শিখলাম খালি আরবি উর্দু । কামের কিছু হৈল না । ধর্মের জৈন্য কামে লাগল ঠিকাছে কিন্তু জীবনে চলার জ্ঞানতো হৈল না । পরামর্শ চাইতে যাওনের মানুষও নাই । খুরশিদরে জিগান যাইব না । ওগো বাড়িতে বেড়াইতে আইছে রোকসানা । মাঝখান দিয়া খুরশিদের লগে একটা লাঠালাঠি তৈরি হৈব । হাজার রকমের চিন্তা মাথায় । রোকসানারে কৈয়া আইছি দেখি কি করন যায় । রোকসানা একটু ভরসা পাইয়াই গেল মনে হৈল । দুশ্চিন্তাতো মাইয়াডারও কম না । উল্টা মাইয়ার উপর দিয়াই যায় বেশি । একবার মনে হয় জাহান্নামে যাউগ্গা । কুনো পরমান নাই । রোকসানার পেট রোকসানা বুঝুক । কিন্তু এত বড় নাফরমানি করতে আবার বাঁধে । এত বড় জুলুম করা ঠিক হৈব না মাইয়াডার উপর । ভালোবাইসাইতো আমার কাছে খোলামেলা হৈছে । নিজের যা আছে বিলাইয়া দিছে । কিছু একটা করতেই হৈব । কি করমু । জানিনা কুনো বালও ।
একবার ঠিক করি, যা থাকে কপালে, হাছাই যদি কিছু হয় গেরামের সবার সামনে স্বীকার কইরা নিমু । বিয়া করমু রোকসানারে । গেরামের কাছে মান সম্মান যাক । আল্লার চোখে তো দয়া পামু । কিন্তু হালার দুইন্যাতে প্যাঁচওতো কম না । আশেপাশের দশ পনের গেরাম জুইড়া আব্বারে সম্মান করে না এমন মানুষ নাই । মোল্লার ধার্মিকতা তার পুলাগো দ্বীনি শিক্ষা সবমিলাইয়া যে সুনাম সেইটার মুখে তো চুনকালি কি, গু মাইখা দেয়া হৈব । শুনতে পাই যৌবনে , বিয়ারও আগে আব্বা জুয়াড়ি মদখোর আছিলেন । মাঝে মাঝে সপ্তাহ পার হৈয়া যাইত নাকি জুয়ার আড্ডায় । বিয়ার পরে একবার তাবলীগে গিয়া সেই যে আব্বা দুনিয়াদারি ছাইড়া ধর্মের কামে লাইগা গেলেন তারপর থাইকা আর কেউ কুনোদিন আব্বারে কুনো বেশরিয়তি বেদ্বীনি কামে দেখে নাই । কারো উপরে জুলুম করতে দেখে নাই । বড় ভাইয়ের বয়সি যারা তারাও কৈলে বিশ্বাস করেনা আব্বা একদিন ঐরকম ছিলেন । সবাই ভুইলা গেছে সেইসব ইতিহাস । পরায় পুরা জীবনডা জুইড়া সে সুনাম আব্বা গইড়া তুললেন তার মুখে গু মাখাই আমি কুন অধিকারে । উপায় একটা খুইজা বাইর করতেই হৈব ।
মাগরেবের সময় দোকানে ফিরা দেখি খালত ভাই আইছে দুইডা । ঢাকা থাইকা একটা আর চৌদ্দগেরাম থাইকা একটা । একটু ভরসা লাগে । দুইডাই ইশকুলে পড়ালেখা করইন্যা । বান্দরও কম না । যদিও ঢাকার খালত ভাইর ছুড ভাইর লগেই আমার খাতির বেশি তাও ওর সাথেও কম না । গোপন কথা কওন যায় । তাছাড়া এখন জড়তা কৈরা পুন্দানি খাওনের সময় না । যেদিকে যা আছে ঘাইটা দেখতে হৈব । খালত ভাইডিরে নিয়া রেলরাস্তায় হাঁটতে বাইর হৈ আন্ধারের মইধ্যে । ওদের খুইলা বলি ঘটনা । পরথম দিন থাইকা শেষ দিন পইর্যন্ত । এক্কেবারে সবকিছু । কেমনে কি কদ্দুর করছি । দড়ি খোলা ছিল নাকি বান্ধা ছিল । কুন যায়গায় পানি লাগছে সবকিছু । ওরা কয় এইডা কুনো সমস্যা না । মাইয়ার বয়স কম । এখন একটু অনিয়মিত হইতেই পারে । এত তাড়াতাড়ি ঘাবড়াইয়া যাওনের কুনো কাম নাই । মনে একটু ভরসা পাই । ভরসা না পাইয়া উপায়ও বা কি । পানিতে ডুইবা যাওনের সময় মানুষ একটা খের পাইলে সেইটারেও জড়াইয়া ধরতে যায় ।
কিন্তু আবার কিন্তু বইলাই লাগায়া দেয় মনের মইধ্যে তোলপাড়, ডরভয়, হতাশা । খারাপ কিছুর জৈন্য রেডি হৈয়া থাকন দরকার আছে । বাই চান্স এর তো কুনো লাইসেন্স নাই । কুনো না কুনোভাবে হয়ত আকাম হৈয়াও যাইতে পারে । তার জৈন্যও উপায় আছে । কাঁচা আনারস লাগবো । কাঁচা আনারস কৈ পামু ? বাজরেতো পাওন যাইব না । কবিরাজের কাছে গেলে থাকতে পারে । কিন্তু গেরামের বা গেরামের আশেপাশের কবিরাজের কাছে কাঁচা আনারসের লাইগা গেলেতো বুইঝা যাইব ঘটনা কি । পুবপাড়ার এক বাড়িতে আনারসের গাছ আছে কয়েকটা । তিনজন মিলা দেইখা আসি । কাঁচাও আছে কয়েকটা । চাইয়াতো নেওন যাইব না । রাইতে চুরি কৈরা নিতে হৈব । রাইতে তিনভাই মিলা চুরি কইরা নিয়া আসি কাঁচা আনারস । একটা লুঙি দিয়া প্যাঁচাইয়া রাইখা দিই দোকানের এক চিপায় । ঐরাইতে তিনজিন দোকানেই ঘুমাই । ক্যামনে কি করন লাগবো যুক্তি করি । এখনই কাইটা ফালাইলে তেজ কইমা যাইতে পারে । ঠিক করি কাইলকা দুপুরে গেরামের বাইরে খেতে গিয়া দুই খালতভাই মিলা আনারাস ছিইল্যা কাইটা আনব । আমি গেলে গেরামের মাইনষের চোখে পড়লে সমস্যা আছে । ওগোরেতো গেরামের সবাই চিনে না । কাটতে আর কতক্ষণ । রাইতে আর আমাগো ঘুম হয় না । তিনভাই মিলে আলাপ করতে করতে পার হৈয়া যায় সময় ।
পরেরদিন দুপুরে খাওনদাওনের পর দোকান বন্ধ কৈরা দিই । ছুডভাই দুইডারে দুই প্যাকেট বিস্কুট আর কয়েকবোতল জুস দিয়া পাঠাইয়া দিই আবদুল্লাহপুর হিফজখানায় । জুহরের কিছুক্ষণ পরই খুরশিদগো বাড়ীতে গিয়া সবার লগে একটু কথাবার্তা কৈয়া আসি । উদ্দেশ্য রোকসানারে জানানো । আইজকা হয়ত নাও যাইতে পারে । রোকসানা ছিল না । খুরশিদ এর ছুড বৈনডারে জিগাই রোকসানা কই ? কয় বাড়ীর পিছনদিকের পুকুরে গোসল করে । ওরে কৈ রোকসানারে কৈতে আমি আইছিলাম । এতটুক শুনলেই বুঝবো রোকসানা । দোকান থাইকা লুঙিতে কৈরা আনারসটা নিয়া খালত ভাইডিরে পাঠাই খেতে আনারস কাইটা আননের লাইগা ।একটা টিফিনবাডি দিয়া দিই লগে । বাড়ীর পিছনদিকের চিপা দিয়া ওরা আনারস কাইটা আনছে এমন সময় দেখি রোকসানা । মুখে হাসি । আমার কেমন জানি বুকের উপর থাইকা একটা পাত্থর নাইমা যাই যাই কৈরাও যায় না । হাসিমুখেই মাথা উপরনিচ কৈরা রোকসানা চৈলা যায় । পাত্থরডা নামে পুরাপুরি । কাটা আনারসডি রেললাইনের পাশে খালে ফালাইয়া দিয়া আসি ।
জীবনে শালার বিপদের পুন্দানির পর পুন্দানি । রৈদ কইমা আসার পর তিনভাই মিলা দোকানে বৈসা আছি । রেললাইন থাইকা নাইমা দোকানের সামনের পুকুর পাড় দিয়া এদিকে হাইটা আসা পুলাডার চেহারা চিনা চিনা লাগে । পুরাপুরি মনে পড়নের পর আমার কৈলজার পানি আবার শুকাইয়া যায় ।
-------------------------------------------------
কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-১৪
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



