প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি গুলার চরিত্র প্রায় একই রকম। নুতন প্রতিপক্ষ আর প্রযুক্তিকে ঠেকিয়ে রাখা।
ঠিক এই রকমই ঘটল ১৯৯৬ দিকে আমেরিকার জি.এম মোটরস এর বানানা ইভিঃ১ নামে এক নুতন প্রযুক্তির গাড়ির উপর। উন্ডোজ ৭ দেখার পর যদি কাউকে উন্ডোজ ৯৫ দেখানো হয় তাদের যেকরম অনুভতি লাগবে ঠিক তেমনি লাগবে যদি কাউকে ইভিঃ১ এর প্রযুক্তি দেখানোর পর যদি আজকালকার ইন্টারনাল কম্বাস্টন ইঞ্জিনের গাড়ী দেখানো হয়। আমার কাছে তাই লেগেছে।
ইভিঃ১ খুবই সিম্পেল প্রযুক্তি। ব্যাটারী দিয়ে মোটর ঘুরবে তাই দিয়ে চাকা ঘুরবে। শেষ! কোন তেল লাগবে না, কোন ধুয়া নেই। আর ব্যাটারী একবার চার্জ দিলে প্রয়োজনের চেয়ে অধিক সময় ধরে চলে। আর স্পিড? অনেকজনের ইভিঃ১ ড্রাইভারের বাসায় চিঠি আসছিল অতিরিক্ত স্পীডে গাড়ী চালানোর জন্য।
সবদিক দিয়েই ভাল ছিল। জিরো ইমিশন। পরিবেশ সহায়ক। কিন্তু সমস্যা একড়া ছিল। সমস্যা গাড়ীর ছিল না, সমস্যা ছিল কোম্পানির আর তেল কোম্পানি গুলার। ২০০৩ এ ইরাক যুদ্ধের পর থেকেই তেলের দাম বাড়তি। আর এই গাড়ী শুধু মাত্র ক্যালাফোনিয়াতেই ছিল। চাহিদা দিন দিন বাড়তেছেই। এই দেখা দেখি টয়োটা, ফোর্ড, হোন্ডা নিজস্ব ইলিক্টিকাল গাড়ী বের করে। তেল এখন অনেক বাকি। ট্রিলিয়ন ডলারের বিজনেস এখনও আয় করা যাবে তেল থেকে। এর আগেই যদি এর চাহিদা শেষ হয়ে যায় তেলের এই নূতন প্রযুক্তি গাড়ীর জন্য?
এরপর এই কোম্পানি গুলো যা করল, বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। ইভিঃ১ এর উৎপাদন বন্ধ করে দিল জি.এম মোটরস এই বলে যে এর চাহিদা নেই। আর এমন এমন বিজ্ঞাপন তৈরী করল দেখলে মনে হয় কি ভুয়া গাড়ী। এতেই ক্ষান্ত থাকলেও হত। এর পর ইভিঃ১ গ্রাহকদের থেকে গাড়ী নিয়ে নেওয়া শুরু করল। অনেকটা কেড়ে নেওয়ার মতই। বলে কিছু সমস্যা আছে আর গ্রাহককের আশ্বাস দেয় এই গাড়ী গুলো ধ্বংস করা হবে না। কিন্তু ইাভিঃ১ ভক্ত রা গোপনে জি.এম মোটসর দের গোপন স্থানে গিয়ে দেখল সব ধ্বংস করা হচ্ছে। ওদের উদ্দেশ্য এই রকম যে গাড়ী ছিল এই ধারণা যেন আর কোথাও না ছড়ায়।
এইভাবে আস্তে আস্তে সব ইভিঃ১ সহ অন্যান্য ইলিক্ট্রিক গাড়ী শেষ করে দেয়া হল আর কিছু ইভিঃ১ ব্যক্তিগত গাড়ী সংগ্রাহক, রিসার্স ল্যাব আর ইউনিভার্সিটিতে দেয়া হল।
কিন্তু প্রযুক্তিদে দমায়ে রাখা যায় না। প্রতিশোধ নিল ইভিঃ১ আর ইলেক্ট্রিক গাড়ীর প্রেমিকেরা। ইলোন মাস্কে বের করলেন ইলেক্ট্রিক সুপার কার "টেসলা" । এরপর নিসান বের করল "নিসান লিফ" নামের ইলেক্ট্রিক গাড়ী। এই দৌড়ে টিকে থাকার জন্য জি.এম মোটরস ও বের করল পুরা পুরি ইলেক্টিক নয় কিছুটা গ্যাস বেকআপ আছে "সেভ্রোলেট ভোল্ট"। উভয় পক্ষকে খুশি রাখার জন্য টয়োটা বের করলো, হাইব্রিড গাড়ী টয়োটা পিয়াস যা গ্যাস ও ইলেক্ট্রিক উভয়ে চলে।
Electric Super Car Tesla Roadster
Nissan's Electric Vehicle "Nissan Leaf"
সামনে যা দেখা যাচ্ছে, এই পুরানা প্রযুক্তির ইঞ্জিন চালিত গাড়ীর যুগ শেষ হবে যদি গ্রাহকেরা একটু সচেতন হয়। কেউ যদি একবার ইলেক্ট্রিক গাড়ীর প্রযুক্তি দেখে, তাহলে ইঞ্জিল চালিত গাড়ীকে বাঙ্গালী ভাষায় আসলেই "ক্ষেত" লাগবে। কিন্তু এই ব্যাপারতো জানা গেলে। কিন্তু না জানি কত প্রযুক্তিকে ধামা চাপা দেয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত সমাজে প্রতিষ্ঠিত পুজিপতিদের দ্বারা..
আরো জানতে দেখুন "Who Killed the Electric Vehicle"
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১২ রাত ১১:৪৩