somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহৎ কাজ

১৩ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরম দয়াময় সৃষ্টিকর্তার নামে আরম্ভ করছি

“কুল্লুমান আলাইহা ফানি অইয়াবক্বা অজ্হু রাব্বিকা জুল জালা-লি অল ইকরাম।”
“রবের সত্তা ও বদান্যতা ছাড়া জগতের সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে।” আমরা কেউ থাকব না। তবে যারা মহৎ কোন কাজ করে যান তারা চির অমর হয়ে থাকেন, যেমনঃ বাদশাহ্ নওশেরওয়ান, হাতেম তাই ও লোকমান হাকিম। জগতে যে মানুষ কোন মহৎ কাজ করেন তিনি চির অমর হয়ে থাকেন। আর সব চেয়ে মহৎ কাজ হল মানব জাতির সেবা করা। আরো জানা দরকার যে, শুধু দৈহিক সেবার চেয়ে দৈহিক ও আত্মিক সেবা বহু ব্যাপক ও বহু উন্নত। এখন মানব জাতির দৈহিক ও আত্মিক সেবা কিসে হতে পারে তাই বলছিঃ-ইহকালের উন্নতি ও পকালের মুক্তি - এ দুটিই হচ্ছে মানব জাতির কাম্য বস্তু। সুতরাং কোন্ পথে চললে ইহকালের উন্নতি ও পরকালের মুক্তি হতে পারে সে পথ নির্ণয় করা ও সে পথে লোকদের চালিত করাই হচ্ছে সব চেয়ে মহৎ কাজ, এর চেয়ে মহৎ কাজ আর কিছু হতে পারে না। আর একথাও জানা দরকার যে কোন মানুষ একা কখনও কোন মহৎ কাজ সমাধা করে যেতে পারে না যে পর্যন্ত না কতক লোক তার সঙ্গে সহযোগিতা করে। অতএব এই গোনাহ্গার এমন একটি মহৎ কাজ করার জন্য আপন পীর ও মুর্শিদের অছিলায় আল্লাহ্পাক হতে ইশারা পেয়েছি যা সমাধা করার জন্য আপনাদের আহ্বান করছি।

সে কাজটির প্রথমটি হল ইহকালের উন্নতি। জানা দরকার যে, উন্নতির মূল একতা। সুতরাং সর্ব প্রথম আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে। বর্তমানে আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব নাই। আমাদের পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে বিদ্বেষভাব রয়েছে। আমি চাই সর্ব প্রথম আমাদের মধ্য থেকে এই বিদ্বেষভাব দূর করতঃ বন্ধুত্ব স্থাপন করা।

হে আমার ভাইয়েরা! আপনারা চিন্তা করে দেখুন, আমাদের মুসলিম সমাজের অবনতির মূল কারণটা কী? দেখুন, আমাদের মুসলমান ভাইদের মধ্যে প্রথমতঃ দু’টি দল বিদ্যমান-একটি দল মোল্লাদের অপরটি মিস্টারদের। মোল্লাদের অনুযোগ মিস্টারগণ ধর্মের গণ্ডির বাইরে চলে গেছেন। তাদের কারণে এজগতে সুবিচার বা শান্তি কায়েম হচ্ছে না। আর মিস্টারগণ বলছেন যে, মোল্লারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক বিষয়াদি কিছুই বোঝে না। ধর্মের দোহাই দিয়ে কেবল বলে, নামাজ পড়, রোজা রাখ, দাড়ি রাখ, দুনিয়া ত্যাগ কর ইত্যাদি। এদের কারণে আমাদের সমাজ বহু পেছনে পড়ে রয়েছে । সুতরাং মোল্লাদের কথায় আমাদের কর্ণপাত করা উচিত নয়। এখন আমার কথা হল, আমি চাই উভয় দলের বিদ্বেষ দূর করে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব কায়েম করতে। কি প্রকারে দু’টি দলই একতাবদ্ধ হতে পারে সে সম্বন্ধে আমি যা ইশারা পেয়েছি, তাই “মানব জাতির মুক্তির সন্ধান” নামক কিতাবে লেখা হয়েছে। আমাদের অবনতির অন্যতম মূল কারণ হল আমাদের সমাজে ধার্মিকদের মধ্যেও বিদ্বেষ ও বিশৃঙ্খলা পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যমান থাকা। যেমন, একটি রাষ্ট্র নির্ভর করে তার সেনা বাহিনীর উপর। রাষ্ট্রের অন্যান্য বিভাগের মধ্যে কিছু বিশৃঙ্খলা থাকলেও ততবেশী ক্ষতি হয় না, কিন্তু যদি সেনা বাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ঢুকে, তাহলে রাষ্ট্রের অবনতি অনিবার্য। তদ্রুপ ইসলাম ধর্মরূপ রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব সম্পূর্ণ রূপে নির্ভর করে দ্বীনি এলেম শিক্ষিত আলেমগণের উপর। কিন্তু যদি সেই আলেমগণের মধ্যেই বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, তাহলে ইসলাম ধর্মের অবনতিও অনিবার্য। সুতরাং আমাদের আলেম সমাজের বর্তমান বিশৃঙ্খলাকে সুশৃঙ্খল করার ব্যবস্থা ঐ কিতাবে লেখা রয়েছে।

আপনারা অবগত আছেন যে, বিচারক বিচার করতঃ অন্যায়কারীকে দোষী সাব্যস্ত করেন। কিন্তু দোষীর দোষ প্রমাণের জন্য এবং দরকার হলে দোষীকে শাস্তি দেবার জন্য একটি স্বতন্ত্র শক্তির দরকার। সে জন্যই গ্রাম্য মাতব্বরদের সাহায্যার্থে একটি পঞ্চায়েত
থাকে এবং কোর্টের বিচারের আদেশ কার্যকরী করার জন্য পুলিশ কর্মচারী থাকে। এমনকি আল্লাহ্ আহ্কামুল হাকিমিনের আইন জারী করার জন্য যে সকল নবী (আঃ) গণ আসতেন তারাও তত্ত্বজ্ঞান দ্বারা বিচার করত জগদ্বাসীকে ন্যায় অন্যায় পার্থক্য করে দেখিয়েছেন।
তবুও তাদের রায় কাজে পরিণত করতে পারেননি যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি সাহায্যকারী একটি দল তার সহচররূপে পেয়েছেন।

দেখুন, আমাদের হুজুরে পুর নূর (সঃ) যে নীতি মক্কা শরীফে প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু কার্যকরী করতে পারেননি, সেই নীতি তিনি মদিনা শরীফে প্রচার করতে ও কার্যকরী করতে পেরেছিলেন। যেহেতু সেখানে তিনি কতক লোককে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচররূপে
পেয়েছিলেন যারা জান, মাল ও ইজ্জত দিয়ে সত্য প্রকাশ করতে সাহায্য করেছিলেন। সুতরাং যেমন নবী করীম (সঃ) মহৎ কাজ করে মহামানব হয়ে চির অমর হয়ে রয়েছেন, তেমনি তার সাহাবাগণও মহৎ কাজের সাহায্য করে মহৎ হয়ে রয়েছেন। তাই মুসলিম সমাজে তাদের এমন উচ্চ স্থান বা সম্মান রয়েছে যে আজও খোতবাতে তাদের তারিফ ও মাগফেরাত প্রার্থনা করা হয়।

-মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ খান
১ আষাঢ়, ১৩৬২ সাল
১৬ জুন, ১৯৫৫ খ্রীঃ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:০১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×